জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করেছে ছাত্রদল। ছাত্র জনতার বিজয়ের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে সোমবার রাত ১২টার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘আলোয় আলোয় স্মৃতি সমুজ্জ্বল’ শিরোনামে এ কর্মর্সূচি পালন করেন সংগঠনটির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী। একইসঙ্গে তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি আসিফুজ্জামান রিপন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

৩৬ দিনের কর্মসূচি উদ্বোধন: বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এটি শুধু মোমবাতি প্রজ্বলন নয়, গণতন্ত্রের নতুন যাত্রার সূচনা। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একসময় ছিলো ভয় আর আতংকের প্রতীক; আজ তা আশার আলো ছড়াচ্ছে। শেখ হাসিনা ছাত্রদের কণ্ঠ স্তব্ধ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি। আজকের এই আলোক প্রজ্বালনের মাধ্যমে আমাদের ৩৬ দিনের কর্মসূচির শুভ সূচনা হলো।’

আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘জুলাই মাসে ছাত্রদলের এই আয়োজন ইতিহাসের ধারাবাহিকতা বহন করে। একদিনে এই আন্দোলন গড়ে ওঠেনি। হাজারো মানুষের রক্ত ও ত্যাগের মাধ্যমে এটি গঠিত হয়েছে। আজ আমরা খুনি হাসিনামুক্ত বাংলাদেশ দেখছি। শহীদ ওয়াসিম ও সাঈদের রক্ত বৃথা যাবে না।’ 

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদল সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে এবং শতাধিক নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ জাতি কখনও ভুলবে না।”

ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে। কিন্তু ছাত্রদল রাজপথে এককভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। হামলা-মামলার সবচেয়ে বেশি শিকার হয়েছে ছাত্রদলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই।’

এই কর্মসূচির মাধ্যমে ছাত্রদলের নেতৃত্বে শুরু হলো ৩৬ দিনব্যাপী একাধিক আন্দোলন-প্রচারণা ও স্মরণ কর্মসূচি। যা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশব্যাপী বিস্তৃত থাকবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল গণঅভ য ত থ ন স মরণ ছ ত রদল র ৩৬ দ ন ম মব ত

এছাড়াও পড়ুন:

সিরাজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ নেতার পদত্যাগ ঘোষণা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা শাখার পাঁচ নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার (২৮ জুন) ও রবিবার (২৯ জুন) নিজেদের ফেসবুক আইডি থেকে স্ট্যাটাস দিয়ে তারা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তাদের অভিযোগ, সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম মনে করে তারা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। বর্তমানে সংগঠনটির বেশিরভাগ সদস্য ও নেতৃত্ব একটি বিশেষ রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসারী হয়ে পড়েছেন।

পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া নেতারা হলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন উল্লাপাড়া উপজেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ইসমাইল হোসেন, যুগ্ম-সদস্য সচিব সামিউল ইসলাম সিয়াম, মুখ্য সংগঠক সাইফুল ইসলাম মিলন, সিনিয়র সংগঠক মনিরুল ইসলাম শিমুল ও মুখপাত্র রিয়াদুল রিমন সরকার।

পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া নেতাদের সবাই নিজ নিজ ফেসবুক পোস্টে প্রায় একই ধরনের অভিযোগ করেছেন। তারা উল্লেখ করেছেন, সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম মনে করে তারা এ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে সংগঠনটির বেশিরভাগ সদস্য ও নেতৃত্ব একটি বিশেষ রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসারী হয়ে পড়েছেন। ফলে সংগঠনের অরাজনৈতিক অবস্থান আজ প্রশ্নবিদ্ধ।

আরো পড়ুন:

পদত্যাগপত্র পাঠালেন এনসিপির রাজশাহী জেলার প্রধান সমন্বয়কারী

আস্থা ভোটে হেরে গিয়ে পদত্যাগ করেছেন মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী

একজন স্বাধীন ও অরাজনৈতিক মানসিকতার ছাত্র হিসেবে এ সংগঠনের সঙ্গে থাকা অসঙ্গতিপূর্ণ। তাই ব্যক্তিগত ও নৈতিক কারণে সংগঠন থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উল্লাপাড়ারা শাখার মুখ্য সংগঠক সাইফুল ইসলাম মিলন বলেন, “আমরা ফেসবুকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছি। পদত্যাগের মূল কারণ আমাদের ফেসবুক পোস্টে লেখা আছে। এর বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না।”  

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন উল্লাপাড়া উপজেলা শাখার সদস্য সচিব ইয়াসিন তালুকদার রহিত বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। আমাদের কেউ কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। তবে, যদি মনে মনে কেউ কোনো দলকে পছন্দ করে থাকেন, সে ক্ষেত্রে বাধা দেবেন কি করে?”

তিনি বলেন, “পাঁচজন ফেসবুকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে তারা কি কারণে পদত্যাগ করলেন সে বিষয়টি পরিষ্কার নয়। হয়তো কেউ তাদের ভুল বুঝিয়ে পদত্যাগ করিয়েছে।”  

সংগঠনের আহ্বায়ক রিফাত বিন জামান বলেন, “ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে পাঁচজন পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। পদত্যাগের কোনো চিঠি আমাদের দেয়নি। ফেসবুকে তারা যে অভিযোগ এনেছেন, তা সত্য নয়। আমাদের কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম। কেউ যদি আমাদের সংগঠন ছেড়ে কোনো রাজনৈতিক দলে যেতে চান, সে ক্ষেত্রে আমাদের বাধা দেওয়ার কোনো কারণ নেই।”

ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মোমবাতি প্রজ্বালনে শহীদদের স্মরণ করলো ছাত্রদল, ৩৬ দিনের কর্মসূচি উদ্বোধন
  • গণতান্ত্রিক উত্তরণ কোন পথে?
  • সিরাজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ নেতার পদত্যাগ ঘোষণা
  • গণঅভ্যুত্থানের অর্জন নষ্ট করা যাবে না: গণতন্ত্র মঞ্চ
  • জুলাই ঘোষণাপত্র না আসায় ক্ষোভ, মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা আপ বাংলাদেশের
  • ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের জন্য অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার গুরুত্ব অপরিসীম 
  • অনড় অবস্থান নয়, নমনীয়তাই রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি
  • জুলাই যোদ্ধাদের সঠিক মর্যাদা দিতে হবে: রিজভী
  • একনায়কতান্ত্রিক প্রবণতার দিকে সংসদীয় গণতন্ত্রের যাত্রা