পদ্মা নদীর সাড়ে তিন কেজি ওজনের দুটি ইলিশ মাছ সাড়ে ১৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ইলিশ দুটি কেনেন এক প্রবাসী। তার আগে সকালে দৌলতদিয়া ঘাট বাজারে এক জেলের কাছ থেকে নিলামে ইলিশ দুটি কেনেন স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ।

স্থানীয় মৎস্যজীবীরা জানান, পদ্মা নদীতে পানি কমতে থাকায় মাছের বিচরণ কমে যায়। পদ্মা থেকে পানি নেমে নালায় পরিণত হয়। সেখানে নালা বা খারায় মাছের দেখা যায়। কয়েক দিন পর আবার পানি বাড়তে শুরু করে। ফলে বিভিন্ন ধরনের মাছের বিচরণ শুরু হওয়ায় রুই, কাতলা, পাঙাশের পাশাপাশি মাঝেমধ্যে দু-একটি বড় ইলিশের দেখাও পাওয়া যায়।

আজ সকালে বাহির চর দৌলতদিয়া ছাত্তার মেম্বার পাড়ার জেলেরা জেলার সীমান্তবর্তী চর করনেশনা এলাকায় জাল ফেলেন। অনেকক্ষণ পর এক জেলে জাল গুটিয়ে নৌকায় তুলতেই দুটি বড় ইলিশের দেখা পান। বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন দৌলতদিয়া বাজার হালিম মণ্ডলের আড়তে। সেখানে ওজন দিয়ে দেখতে পান বড় ইলিশটির ওজন প্রায় দুই কেজি এবং অন্যটির ওজন ছিল দেড় কেজি। পরে বিক্রির জন্য নিলামে তুললে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ফেরিঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ কেনেন।

শাহজাহান শেখ প্রথম আলোকে বলেন, সকালে হালিম মণ্ডলের আড়তঘরে অন্যান্য মাছের সঙ্গে পদ্মার কয়েকটি ইলিশ মাছ দেখতে পান। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ইলিশটির ওজন ছিল ১ কেজি ৯৩০ গ্রাম এবং অন্যটির ওজন ছিল দেড় কেজি। নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ৩ হাজার ৯০০ টাকা কেজি দরে ইলিশ দুটি ১৩ হাজার ৬৫০ টাকায় কেনেন। পরে নিজের শাকিল-সোহান মৎস্য আড়তঘরে ফিরে বিক্রির জন্য ইলিশের ছবি তুলে ফেসবুক পেজে পোস্টের পাশাপাশি মুঠোফোনে পরিচিতদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দুপুর ১২টার দিকে টাঙ্গাইলের এক প্রবাসী ইলিশ কিনতে যোগাযোগ করেন। কেজিপ্রতি ২০০ টাকা লাভে ৪ হাজার ১০০ টাকা দরে মোট ১৪ হাজার ৩৫০ টাকায় ইলিশ দুটি কেনেন। দুপুরেই দূরপাল্লার পরিবহনে টাঙ্গাইলে পাঠিয়ে দেন।

শাহজাহান শেখ বলেন, বর্তমানে পদ্মা নদীতে ইলিশের তেমন দেখা মিলছে না। মাঝেমধ্যে এক-দুটি ইলিশ পাওয়া গেলেও চাহিদা অনেক থাকায় দাম অনেক বেশি। স্থানীয়ভাবে বিক্রির সুযোগ কম থাকলেও বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যক্তিরা মুঠোফোনে যোগাযোগ করে কিনে নিচ্ছেন। এ ধরনের ইলিশ যাঁরা শিকার করছেন, সেসব জেলের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ হজ হ ন শ খ দ লতদ য় র ওজন মৎস য

এছাড়াও পড়ুন:

শুভ জন্মাষ্টমী আজ

অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দুর্বলের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করতে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ—এই বিশ্বাস পোষণ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শ্রীকৃষ্ণের এই আবির্ভাব তিথি শুভ জন্মাষ্টমী হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়।

সনাতন ধর্মের মানুষ বিশ্বাস করেন, পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। আজ শনিবার শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল শুক্রবার এক বাণীতে তিনি বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আবহমানকাল থেকে এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভরপুর বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আজ সকাল আটটায় দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় শ্রীশ্রী গীতাযজ্ঞ, বেলা তিনটায় ঐতিহাসিক কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিল ও রাতে শ্রীকৃষ্ণপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, রাজধানীর পলাশীর মোড়ে আজ বেলা তিনটায় কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিলের উদ্বোধন করবেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন ও নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. মঈন খান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ