করোনাভাইরাস এর প্রাদুর্ভার যখন চরমে তখন নির্মিত হয়েছিল ‘জয়া আর শারমিন’। সিনেমাটি আজ মুক্তি পেয়েছে রাজধানীর ৪ টি প্রেক্ষাগৃহে। এটি এখন চলছে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বসুন্ধরা ষ্টার সিনেপ্লেক্স, মহাখালীর ‘এস কে এস’, ধানমন্ডির ‘সীমান্ত সম্ভার’ ও কেরানীগঞ্জের ‘লায়ন্স’ হলে। 

 ইতিমধ্যে ছবির দুই কেন্দ্রীয় চরিত্র জয়া আহসান ও মহসিনা আক্তার শারমিন দর্শকদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে  কয়েকটি সিনেমা হল ঘুরে এসেছেন।  
সিনেমাটির দর্শক প্রতিক্রিয়া নিয়ে জয়া বলেন, ‘জয়া আর শারমিনকে দর্শকরা যে এত মিষ্টি করে গ্রহণ করছেন, আজ সকাল থেকেই সেটা অনুভব করছি। একজন শিল্পী ও প্রযোজক হিসেবে এই ভালোবাসা পাওয়া সত্যিই আনন্দের। আমরা যে ছোট ছোট গল্প বলতে চেয়েছি, দর্শকরা সেটা শুনতে চাচ্ছেন এটাই বড় প্রাপ্তি।’
ছবিটির প্রেক্ষাপট করোনাকাল যখন ঘরবন্দি জীবন কাটছিল দেশের অধিকাংশ মানুষের। অনেকেই তখন রান্না করে সময় কাটাতেন, নতুন রেসিপি নিয়ে চলত পরীক্ষা-নিরীক্ষা। সেই সময়কে ঘিরেই নির্মিত হয়েছে ছবির গল্প।

গল্পে দেখা যাবে, এক অভিনেত্রীর বাড়িতে করোনাকালে আটকা পড়েন তার গৃহকর্মী। এরপর শুরু হয় রান্না ঘিরে তাদের দুজনের এক অসাধারণ সম্পর্কের গল্প। চলচ্চিত্রে জয়া আহসানের পাশাপাশি শারমিন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মহসিনা আক্তার। ছবিটি পরিচালনা করেছেন পিপলু আর খান।

এর আগে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছিল জয়া অভিনীত সর্বশেষ ছবি ‘নকশী কাঁথার জমিন’। প্রায় পাঁচ মাস পর মুক্তি পেল জয়া আর শারমিন।  ছবিটি নিয়ে জয়া আরও বলেন, ‘ওই সময়টাকে ধরে রাখার জন্যই কাজটি করা। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই শুটিং করেছি। যারা ছবিটি দেখবেন, তারা ফিরে যাবেন সেই করোনাকালের স্মৃতিতে যেখানে কেউ কাছের মানুষকে হারিয়েছেন, কেউ বেঁচে ছিলেন মৃত্যুভয়ে। আমরা যারা টিকে গিয়েছি, তারাও এক অস্থির সময় পার করেছি।’ 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জয় আহস ন অভ ন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধ সড়ক যেন মরণফাঁদ

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ৬৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সড়কটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অনেক গর্ত। এসব গর্তের পাশ দিয়ে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারী ও যানবাহন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের দাবি জানানো হলেও সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধের দুই পাশে জায়গায় জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও সড়কের পিচ উঠে গেছে, কোথাও আবার গর্তের গভীরতা এত বেশি যে, ছোট যানবাহন উল্টে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে দুর্ঘটনায় কলেজছাত্রের মৃত্যু, ট্রাকে আগুন

সিলেটে বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষ, বাবা-মেয়ে নিহত

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের হলেও, এর ওপরে নির্মিত পাকা সড়কটি সওজ বিভাগের আওতাধীন। এ সড়কটি ব্যবহার করে মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও ঢাকা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর যানবাহন চলাচল করে।

স্থানীয় অটোরিকশা চালক রোবেল হোসেন বলেন, ‍“নির্মাণের দুই-তিন বছর যেতে না যেতেই সড়কের দুই পাশে অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখন প্রতিদিন গাড়ি চালাতে হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে। একটু অসাবধান হলেই ঘটবে দুর্ঘটনা।”

মোটরসাইকেল চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, “দিনে কোনোভাবে পার হওয়া যায়, কিন্তু রাতের পরিস্থিতি থাকে ভয়ঙ্কর। কারণ, অনেক সময় দূর থেকে গর্ত দেখা যায় না। এই সড়কে খুব ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।” 

পিকআপ ভ্যানের চালক আব্দুর রহমান বলেন, “কয়েক বছর না যেতেই রাস্তা গর্তে ভরে গেছে। রাতের বেলায় গর্তগুলো বোঝা যায় না, তাই সব সময় আতঙ্ক নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।”

কলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, “বেড়িবাঁধ সড়কটি এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি। এখন গর্তের কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত মেরামতের জন্য আমরা একাধিকবার জানিয়েছি।”

মতলব উত্তর প্রেস ক্লাবের সভাপতি বোরহান উদ্দিন ডালিম বলেন, “এই বেড়িবাঁধ শুধু মতলব নয়, পুরো অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের প্রধান সড়ক। তাই সওজ বিভাগের উদাসীনতা জনজীবনে ঝুঁকি তৈরি করছে। বর্ষার আগেই এই সড়কটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার জরুরি।”

চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অতিবৃষ্টির কারণে গর্ত তৈরি হয়েছে। আমরা সড়কটি মেরামতের ব্যবস্থা নিয়েছি।”

উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, মতলব ব্রিজ থেকে বেড়িবাঁধের পূর্ব অংশে সংস্কার কাজের জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। পশ্চিম অংশ এখনও ঠিকাদারের দায়িত্বে আছে, তাদেরকেও মেরামতের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (চঃ দাঃ) সেলিম শাহেদ বলেন, “বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের হলেও এর ওপরে থাকা পাকা সড়ক সওজ বিভাগের দায়িত্বে। বেড়িবাঁধের যদি কোথাও ক্ষতি হয়, আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেই; সড়ক সংস্কার কাজ সওজ বিভাগকেই করতে হয়।”

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, “বেড়িবাঁধ সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত দেখা গেছে, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।”

ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ