চাপাতি দিয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করে পালালেন স্বামী
Published: 17th, May 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জে মাংস কাটার চাপাতি দিয়ে সেলিনা আক্তার (৩৫) নামে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নের দেওয়ান কান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত স্বামীর নাম সুজন মোল্লা (৫০)। দেওয়ান কান্দি গ্রামে নিজ বাড়িতে এ ঘটনার পর থেকে পলাতক সুজন।
নিহত সেলিনার বোন শিল্পী আক্তার জানায়, প্রায় সময় সামান্য কারণে তার বোন সেলিনাকে মারধর করতেন সুজন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এক সপ্তাহ আগে সেলিনা একই ইউনিয়নের বকুলতলা গ্রামে বাবার বাড়ি চলে আসেন। পরে দুই গ্রামের মুরুব্বীদের মধ্যস্থতায় সে স্বামীর বাড়ি ফিরে যায়। শুক্রবার রাতে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সুজন মোল্লা চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে তাকে হত্য করে স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে।
খবর পেয়ে আধারা ইউনিয়নের বিট পুলিশ অফিসার মিল্টন দত্ত ঘটনাস্থলে গিয়ে সেলিনার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিল্টন দত্ত সমকালকে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই ঘাতক সুজন মোল্লা পালিয়ে যায়। তাকে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতর স্বজনরা অভিযোগ দাখিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক প য হত য
এছাড়াও পড়ুন:
অপহরণের একুশ দিন পেরিয়ে গেলেও উদ্ধার হয়নি ২ বোন, গ্রেপ্তার ১
নোয়াখালী সদর উপজেলায় অপহরণের ২১ দিন পরও দুই বোনকে উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে, পুলিশ বলছে মামলা দায়েরের পর আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অন্যদিকে, দুই বােন উদ্ধার না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে তাদের পরিবার।
শনিবার (১৭ মে) দুপুরের দিকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুধারাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফখরুল ইসলাম বলেন, গতকাল শুক্রবার এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সাত ধারায় মামলা নেওয়া হয়েছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে, গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নের রামানন্দী গ্রামের ফয়েজ মিস্ত্রি বাড়ি থেকে দুই বোন এসএসসি পরীক্ষার্থী তাহরিম হারুন ফালাহ (১৬) ও তার ছোট বোন তাছনুবা হারুন তাহা (১২) অপহরণের শিকার হন।
দুই স্কুল ছাত্রীর মা ফরিদা আক্তার জানান, তার বড় মেয়ে তাহরিম হারুন ফালাহ স্থানীয় পানা মিয়া টি.এফ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চলতি এসএসসি দিচ্ছিল ও ছোট মেয়ে তাছনুবা হারুন তাহা স্থানীয় খাদিজাতুল কোবরা মহিলা মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। বড় মেয়ে তাহরিম বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে উপজেলার চর বাঞ্চারাম গ্রামের ওমর ফারুকের ছেলে সাজ্জাদুর রহমান শাওন তার মেয়েকে দীর্ঘদিন যাবৎ উত্যক্ত করে আসছে। বিষয়টি তিনি শাওনের পরিবারের সদস্যদের অবগত করেন। এতে শাওন ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে।
তিনি আরো জানান, গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় আমার ঘরের বাইরে অবস্থানের সুযোগে পূর্বের ঘটনার জের ধরে শাওন ও তার সহযোগীরা ঘরে ঢুকে দুই মেয়ে তাহরিম হারুন ফালাহ ও তাছনুবা হারুন তাহাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে বহু জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তাদেরকে না পেয়ে শাওনের পরিবারকে বিষয়টি অবগত করলে তারা এই বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।
দুই স্কুল ছাত্রীর মামা ওয়াহিদুর রহমান অপু বলেন, “গত ২১দিন ধরে আমার দুটি ভাগ্নি অপহৃত অবস্থায় রয়েছে। আমরা থানায় অভিযোগ করার পরও পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করতে পারেনি। এই নিয়ে একাধিকবার পুলিশ অভিযুক্ত সাজ্জাদুর রহমান শাওনের পরিবারের সঙ্গে থানায় বৈঠকও করেছে। কিন্তু কোন সন্ধান বের করতে পারেনি। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শাওনের পরিবারকে নিয়ে থানায় বৈঠক করলেও আমার ভাগ্নিদের কোন তথ্য না পাওয়ায় থানা পুলিশ আমার বড়বোন ফরিদা আক্তার থেকে এজাহার গ্রহণের পর অভিযুক্ত শাওনকে গ্রেপ্তার করে।”
অপহৃত ছাত্রীদের বাবা হারুন অর রশিদ বলেন, “আমার বড় মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার ৬টি বিষয় শেষ করে। ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় পড়ার টেবিলে পরের দিনের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ওই সময় বখাটে শাওন ও তার সহযোগীরা আমার বড় মেয়ের সঙ্গে সঙ্গে ছোট মেয়েকেও অপহরণ করে নিয়ে যায়। জানি না আমার মেয়েরা কোথায় আছে, কেমন আছে। এখন তথ্য-প্রযুক্তির যুগ, কিন্তু ঘটনার ২১ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো আমার মেয়েদের উদ্ধার করতে পারেনি। আমি আমার মেয়েদের সন্ধান চাই।”
সুধারাম মডেল থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম বলেন, “এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাজ্জাদুর রহমান শাওন (২০) নামে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অপহরণের শিকার দুই বোনকে উদ্ধারের জন্য চেষ্টা অব্যাহত আছে।”
ঢাকা/সুজন/টিপু