কুবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতা অবাঞ্চিত
Published: 17th, May 2025 GMT
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) ক্যাম্পাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা জেলা ও মহানগরের তিন নেতাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলোর সমন্বয়করা।
শুক্রবার (১৬ মে) রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত ‘জুলাই সমাবেশ’-এ কুবি প্রতিনিধিদের মঞ্চে উঠতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
অবাঞ্চিত তিন নেতা হলেন— কুমিল্লা জেলা কমিটির আহ্বায়ক মো.
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুবি সমন্বয়ক মো. আবরার ফাহিম বলেন, “আমরা যখন মঞ্চে উঠতে যাই, তখন আমাদের গায়ে হাত তোলা হয় এবং মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। তারা প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজশ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে ব্যক্তিস্বার্থে রাজনীতি করছে।”
আরেক সমন্বয়ক মো. শোয়াইব হোসেন আলামিন বলেছেন, “কিছু নেতা মামলা বাণিজ্য ও চাঁদাবাজিতে জড়িত। আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেব।”
মো. এমরান হোসেন নামের এক সমন্বয়ক বলেন, “জুলাই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম। এখন কিছু দালাল টাকা দিয়ে এর ভিতরে ঢুকে আন্দোলনকে বিকৃত করছে।”
অভিযোগ অস্বীকার করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা মহানগরের আহ্বায়ক আবু রায়হান বলেন, “একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে মঞ্চে সুযোগ দিলে অন্যরাও বিশৃঙ্খলা করতে পারত। শৃঙ্খলার স্বার্থেই আমরা সীমিত রাখি। তবে, কুবি প্রতিনিধিদের বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।”
তবে, কুবির সমন্বয়ক আবরার ফাহিম বলেন, “আমাদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবাদ করলে কিছুটা আশ্বস্ত করা হলেও শেষ পর্যন্ত আমাদের মঞ্চে উঠতে দেওয়া হয়নি।”
তিনি আরো বলেন, “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে শুরু হলেও এখন আমাদের কথা বলার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে না।”
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। ছাত্রদের মধ্যে বিভক্তি ও উত্তেজনা বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনকে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা একই অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
ঢাকা/রুবেল/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সমন বয়ক আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
দুই সহযোগীসহ অনিন্দ্যের বিরুদ্ধে মামলা, রিমান্ড চাইবে পুলিশ
রাজশাহীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ গ্রেপ্তার মোস্তাসেরুল আলম অনিন্দ্য (৩৩) এবং তার দুই সহযোগী মো. রবিন (২৮) ও মো. ফয়সালের (৩০) বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাতে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় অস্ত্র, বিস্ফোরক ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাটি করেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম।
বোয়ালিয়া থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, “নতুন মামলাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এখনো অন্য কোনো মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরের মধ্যেই তাদের আদালতে হাজির করা হবে।
আরো পড়ুন:
খুলনায় কৃষি ব্যাংক লুটের ঘটনায় মামলা
পঞ্চগড়ে ছাত্রদল কর্মী হত্যা, গ্রেপ্তার ২ আসামি কারাগারে
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বোয়ালিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোতালেব হোসেন জানান, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
গ্রেপ্তার অনিন্দ্য রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি শফিউল আলম লাট্টুর ছেলে। সম্পর্কে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের চাচাতো ভাই। নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকায় নিজ বাড়ির পাশেই ‘ডক্টর ইংলিশ’ নামে একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করতেন তিনি।
শনিবার ভোর থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে ‘ডক্টর ইংলিশ’ কোচিং সেন্টারে অভিযান চালায়। এসময় অনিন্দ্যসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চলাকালে উদ্ধার করা হয় আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, সামরিক মানের দূরবীন, জিপিএস, স্নাইপার স্কোপ, দেশীয় অস্ত্র, বিদেশি ধারালো ডেগার, উন্নতমানের ওয়াকিটকি সেট, টিজার গান, অব্যবহৃত সিমকার্ড, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, কম্পিউটার, দেশি-বিদেশি মদ ও নাইট্রোজেন কার্টিজ।
২০১৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ড এবং একই বছরের জুলাই মাসে রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন জঙ্গি হিসেবে অনিন্দ্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তখন তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। তবে, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তিনি ওই দুইটি মামলা থেকে রেহাই পান।
এ দুইটি মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি শরিফুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অনিন্দ্যের সহপাঠী ছিলেন। গ্রেপ্তারের পর শরিফুল জানিয়েছিলেন, অনিন্দ্যের মাধ্যমেই তিনি আনসার-আল ইসলামে যোগ দেন। অনিন্দ্য ছিলেন তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ