সড়কের দু’পাশে সারি সারি ১২শ আম গাছ। মধুমাস জ্যৈষ্ঠে এসব গাছের ডালে থোকায় ঝুলছে কাঁচা-পাকা আম। প্রতিবছরই সরকারিভাবে নিলামে এ ফল বিক্রি করা হয়। কিন্তু চলতি বছর ম্যাংগো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আম নামানোর সময় ১৫ মে শুরু হলেও এখনও নিলামই দেওয়া হয়নি এসব ফল। সরকারি দুই প্রতিষ্ঠানের টানাপোড়েনে এসব আম গাছেই নষ্ট হচ্ছে। 
এমন ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর তানোর উপজেলার সাত ইউনিয়ন ও দুই পৌর এলাকায়। সড়কের পাশে সরকারিভাবে লাগানো হয়েছিল গাছগুলো। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে জেলা পরিষদ ২২ মে নিলামের দিন ধার্য করেছে। এ সময়ের মধ্যে আরও অনেক আম নষ্ট হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজা হাসান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে ‘মৌসুমি ফল ইজারার নোটিশ’ দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী উপজেলার ‘তানোর চৌবাড়িয়া রাস্তার তানোর থেকে তালন্দ বাজার পর্যন্ত’ বিভিন্ন প্রজাতির ৪৫০টি আম গাছের ফল বিক্রি হবে। বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদ কার্যালয়ে নিলাম কার্যক্রম হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের মাধ্যমে উপজেলার বিভিন্ন সড়কের পাশে ১৪টি পয়েন্টের ১ হাজার ২০১টি আম গাছের ফল নিলামের জন্য গত ৫ মে দিন নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বিজ্ঞপ্তির প্রচার কম হওয়ায় প্রতিবাদের মুখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ১৩ মে ফের দিন নির্ধারণ করা হয়। 
এদিন ইজারা কার্যক্রম শুরু হলে জেলা পরিষদের আপত্তিতে সে কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। মূলত উপজেলার দুটি পয়েন্টের সড়কের আম গাছের আম নিজেদের দাবি করে বসে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের ‘ম্যাংগো ক্যালেন্ডার’ অনুযায়ী আম সংগ্রহের সময় গত ১৫ মে শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও ইজারা কার্যক্রমের সুরাহা না হওয়ায় পাকা ও আধা পাকা আম গাছেই নষ্ট হচ্ছে। অনেকে এসব ফল নিজেদের মতো সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন।
এসব গাছের আম কিনতে আগ্রহী আব্দুর রাহীম, মফিজ উদ্দিন ও মনিরুজ্জামানসহ কয়েকজন জানান, ফলগুলো সরকারি নিয়মে ইজারার মাধ্যমে নিতে আগ্রহী তারা। নিয়ম অনুযায়ী বারবার বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে তাদের। এক-দু’দিনের মধ্যে এসব ফল ইজারা না দিলে পেকে ও পড়ে নষ্ট হয়ে যাবে। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো সড়কের পাশের গাছের আম দুর্বৃত্তরা চুরি করছে।
একটি পয়েন্টের আম গাছের ফল নিয়ে জেলা পরিষদের আপত্তি ছিল বলে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) জামিলুর রহমান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করলে তিনি তানোর থেকে তালন্দ পর্যন্ত গাছের ফল ইজারা দিতে নিষেধ করেন। ১৩টি পয়েন্টের গাছের আম ইজারা দিতে বলেছেন। দ্রুত এ কার্যক্রম শুরু হবে।
একটি বা দুটি সড়কের আম গাছ জেলা পরিষদের জানিয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মু.

রেজা হাসান বলেন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভুলে এগুলো ইজারা দিচ্ছিল। তারা চাইলে এসব গাছ বাদে অন্যগুলো ইজারা দিতে পারতেন। দ্রুত বিষয়টির সমাধান হবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) উপজেলা শাখার সহসভাপতি হামিদুর চৌধুরী বলেন, গাছগুলোর আম এমনিতেই পেকে পড়ে যাচ্ছে। তাও ইজারা কার্যক্রম শেষ হয়নি, যা দুঃখজনক। ইউএনও লিয়াকত সালমান বলেন, খোঁজ নিয়ে দ্রুত আম গাছের ইজারা কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফল গ ছ র আম গ ছ র ফল আম গ ছ র উপজ ল র অন য য় সরক র সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

পূজার ছুটির পর গকসুর অভিষেক

৭ বছরের বিরতির পর গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) অনুষ্ঠিত হলো চতুর্থ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নতুন নেতৃত্ব।

তবে পূজার ছুটি শেষ না হওয়ায় এখনও হয়নি অভিষেক ও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। ফলে দায়িত্বভার নিতে পারছেন না নবনির্বাচিতরা।

আরো পড়ুন:

গকসুর জিএস, এজিএসের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আপত্তি, পুনর্নির্বাচন দাবি

চাকসু নির্বাচন: দুই নারী প্রার্থীকে সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপূজার পর অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের অভিষেক। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও নির্দিষ্ট তারিখ জানানো হয়নি। এতে নির্বাচনের পর যে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তা এখন রূপ নিয়েছে অপেক্ষার আবহে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ২৫ সেপ্টেম্বর দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ৭ বছরের ব্যবধান ঘুচিয়ে শিক্ষার্থীরা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব বেছে নেন। ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, প্রার্থীদের প্রচারণা আর ভোটের দিন ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসে ভরিয়ে তোলে।

ভোট শেষে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হলেও আনুষ্ঠানিক অভিষেক না হওয়ায় এখনো কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি তারা।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেশমা আক্তার বলেন, “গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হলেও নির্বাচিত সদস্যরা এখনও শপথ গ্রহণ করেননি। এই বিলম্বের সুযোগে কিছু মহল নির্বাচন নিয়ে অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। এই গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে সফল করতে এবং অপপ্রচার রোধে নির্বাচিত সদস্যদের দ্রুত শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করা জরুরি। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের দায়িত্ব পালন শুরু করতে পারেন।”

সদ্য নির্বাচিত সহ-সভাপতি ইয়াছিন আল মৃদুল দেওয়ান বলেন, “নির্বাচনের পরের দিনটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিল এবং দুর্গাপূজার ছুটির কারণে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল। উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি জানিয়েছেন পূজার ছুটির পর যতদ্রুত সম্ভব অভিষেক ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, “ছুটি শেষে শপথ গ্রহণ ও অভিষেক অনুষ্ঠান সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এখন পর্যন্ত কোনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি।”

২০১৩ সালে প্রথমবার গকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ২৫ সেপ্টেম্বর চতুর্থ নির্বাচনে সম্পাদকীয় ও অনুষদ প্রতিনিধি মিলিয়ে মোট ১২টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৫৮ জন প্রার্থী। ভোটার ছিলেন ৪ হাজার ৭৬১ জন।

ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইন্দোনেশিয়ায় স্কুল ভবন ধস: ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনও আটকা ৯১ জন
  • বাজেট বিল নিয়ে অচলাবস্থা, শাটডাউনের পথে যুক্তরাষ্ট্র
  • পূজার ছুটির পর গকসুর অভিষেক