তাপপ্রবাহ যাই যাই করেও যাচ্ছে না।‌ খুলনা বিভাগে গতকাল শনিবার পর্যন্তও তাপপ্রবাহ ছিল। তবে এরই মধ্যে গতকাল বৃষ্টি খানিকটা বেড়েছে আগের দিনের তুলনায়। তাতে অবশ্য তাপপ্রবাহ একেবারে চলে যায়নি।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ রোববার বৃষ্টির পরিমাণ খানিকটা বাড়তে পারে। তাতে খুলনা অঞ্চলে যে তাপপ্রবাহ চলছে, তা কমে যেতে পারে। তবে আগামীকাল সোমবার ও মঙ্গলবার বৃষ্টির পরিমাণ আবার কমে আসতে পারে।

চলতি মে মাসের অর্ধেকের বেশি সময় চলে গেল। এ সময়টায় দেশের বিভিন্ন অংশের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। চলতি বছরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এ মাসেই। আবার এ মাসে যতটা এলাকাজুড়ে তাপপ্রবাহ ছিল, তা এ বছর আর অন্য কোনো সময় দেখা যায়নি।

গতকাল খুলনা বিভাগে এবং পার্বত্য জেলা বান্দরবানে তাপপ্রবাহ ছিল। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর বান্দরবানের তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তবে তাপপ্রবাহ থাকলেও গতকাল কিন্তু বৃষ্টি হয়েছে অপেক্ষাকৃত বেশি। আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রতিদিন ৫১টি স্টেশনের আবহাওয়া পরিস্থিতি তুলে ধরে। এর মধ্যে ২৭টি স্টেশনে বৃষ্টি হয়েছে গতকাল। সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে।

এমন বৃষ্টি হলেও গরমের ভাবটা যে চলে গেছে, ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়; বরং একটা ভ্যাপসা গরম দেশের বিভিন্ন জায়গাজুড়েই অনুভূত হচ্ছে।

এর কারণ প্রসঙ্গে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.

শাহিনুল ইসলাম গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বেশির ভাগ বৃষ্টি হচ্ছে দুপুরের পর বিকেলে বা সন্ধ্যায়। রাতে হয়তো গরমটা কমছে; কিন্তু দিনের সূর্যের আলো পাওয়ার পর থেকেই আবার বেড়ে যাচ্ছে। এখন যেহেতু দিন অপেক্ষাকৃত বড়, সে ক্ষেত্রে তাপও বাড়ছে। তাই বৃষ্টি হলেও স্বস্তির অনুভূতি ততটা নেই।

এরই মধ্যে গতকাল রাতে খুলনা বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর ফলে ওই বিভাগে আজ তাপপ্রবাহ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানান শাহিনুল ইসলাম।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ বা ২৫ মে বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। ‌এ থেকে ঘূর্ণিঝড় হওয়ার শঙ্কাও করছেন আবহাওয়াবিদদের কেউ কেউ। ‌তবে বিষয়টি এখনো অতটা নিশ্চিত নয় বলে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ কালাম মল্লিক। তিনি বলেন, ২৪–২৫ তারিখের দিকে নিম্নচাপ হওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, তা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ