৩২ কোটি টাকার সড়ক প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ
Published: 19th, May 2025 GMT
সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলাধীন নোয়াখালী-ভিমখালী সড়কের ৯ দশমিক ৭ কিলোমিটার অংশে চলছে প্রশস্তকরণ ও সংস্কারকাজ। প্রায় ৩২ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজে অনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, কাজের শুরু থেকেই ঠিকাদারের নানা অনিয়ম নজরে আসে।
এদিকে স্থানীয়দের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চলমান প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী বলছেন, কাজে কোনো অনিয়ম হয়নি। প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের কাজে যে মানের সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে এবং যেভাবে কাজ হচ্ছে, তা অপ্রত্যাশিত। সড়কটির কাজে নিম্নমানের সামগ্রীর ব্যবহার দৃশ্যমান। আর তা শুরু থেকেই চলছে। এলাকার একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি বলেন, বেশ কয়েকবার তাদের কাজ এবং রাস্তার কাজে ব্যবহৃত নির্মাণসামগ্রীর মান
নিয়ে আপত্তি জানানোর পরও পরস্থিতি বদলায়নি। প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্ধারিত সময়ের প্রতি ভ্রূক্ষেপ না করে কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে। এতে জনগণের দুর্দশা বাড়ছে। জানা গেছে এরই মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে নির্ধারিত সময়ের পর আরও এক বছরের বাড়তি সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে।
জানা যায়, শান্তিগঞ্জের নোয়াখালী-ভিমখালী সড়কে ৯ দশমিক ৭ কিলোমিটার সড়কে ঢালাই এবং সড়কটির পৃথক চারটি স্থানে চলছে কালভার্টের কাজ। এই প্রকল্পটির দায়িত্বে আছে চট্টগ্রামের ডেল্টা ইঞ্জিনিয়ারিং। রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে উল্লেখিত সড়কটির চলমান কাজের কয়েকটি ছবি পোস্ট করা হয়। সেখানে একজন লিখেছেন, নিম্নমানের পাথর ও ভিট বালু ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের কাজ চলছে।
ফেসবুকে সেই ছবি পোস্টকারী কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা কাজের মান ও ঢিমেতালে কাজ হচ্ছে দাবি করে ক্ষোভ ঝাড়েন।
কাঁঠালিয়া গ্রামের হোসেন মিয়া বলেন, নিম্নমানের কাজ হওয়ায় একবার এলাকাবাসী কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। রোববার বিকেলেও ঠিকাদারের লোকজনকে বলে আসা হয়েছে ভালো মানের পাথর ব্যবহার করতে। তা না হলে আবারও কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সড়কের পাশের গ্রাম কুতুবপুরের শামীম আহমদ বলেন, কাজ ভালো হচ্ছে না। মরা পাথর আর ভিটমাটি বালু হিসেবে কোথাও কোথাও ব্যবহার হচ্ছে। জুলহাস মিয়ার অভিযোগ, বালু-পাথর দেখলেই বোঝা যাচ্ছে কাজ কেমন চলছে। কাজের গতিও সন্তোষজনক নয়। এই জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কাজের যে অগ্রগতি, আগামী বছরের জুনেও শেষ হবে না। এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি প্রকল্পের বরাদ্দের একাংশ উত্তোলন করেছে বলে জানা গেছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী শামীম আহমদ বলেন, এ ধরনের অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। গ্রিন ট্রাস্টের বালু-পাথর ব্যবহার হচ্ছে রাস্তার কাজে। অনেকে না বুঝে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। যেসব পাথর ও বালু নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেগুলো মূল সড়কে ব্যবহারের জন্য নয়।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী শাহীন আলম বলেন, সড়কের কাজ ৩০ ভাগের মতো শেষ হয়েছে। আরও এক বছর মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। ময়লাযুক্ত কোনো পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে না। ভিট বালু ব্যবহারের বিষয়টিও সত্য নয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ব যবহ র প রকল প র সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
নানকের গ্রামের বাড়ির প্রবেশ পথের গেট উচ্ছেদ করল বিসিসি
আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের বরিশাল নগরীর পৈত্রিক বাড়ির প্রবেশ পথের গেট উচ্ছেদ করেছে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি)। মঙ্গলবার নিয়মবহির্ভূতভাবে গেট স্থাপনের অভিযোগে গেটটি উচ্ছেদ করে বিসিসি।
তবে নানকের পরিবার দাবি করেছেন, নিজস্ব জমির সড়কে তারা গেট স্থাপন করেছিলেন। যা বিসিসি ইচ্ছে করেই উচ্ছেদ করেছে।
নগরের বটতলা এলাকায় আদম আলী হাজি সড়কে নানকের পৈত্রিক নিবাস। সেখানে তাদের পরিবারের যৌথ মালিকানায় বহুতল ভবন রয়েছে। ভবনে যেতে ৮ ফুট প্রশস্ত একটি সড়ক রয়েছে। নানকদের ভবনের পর অন্যের মালিকানাধীন আরও কয়েকটি ভবন ও প্লট আছে।
আব্দুল মালেক মুন্সী নামে এক প্রতিবেশী জানান, সড়কটি সকল মালিকের দেওয়া জমিতে করা হয়েছিলো। নানকের ভাই নাসির উদ্দিন লিটু আওয়ামী লীগ আমলে ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে সড়কের মুখে গেট স্থাপন করে। তাদের ইচ্ছমতো গেট খোলা ও বন্ধ করায় অন্য পরিবারগুলো দুর্ভোগে ছিলেন। সম্প্রতি তারা বিসিসিতে অভিযোগ দেন। মঙ্গলবার উচ্ছেদ শাখার লোকজন এসে গেটটি অপসারন করেছে।
অপরদিকে নানকের বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশিদ জানান, ৮ ফুট প্রশাস্ত সড়কটি নানকের পারিবারিক জমিতে করা হয়েছে তাদের ভবনে যাতায়াতের জন্য। এরপরের প্লট মালিকদের বিকল্প সড়ক আছে। ৫ আগষ্টের পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে ওইসব মালিকরা সিটি করপোরেশনকে ব্যবহার করে গেট ভেঙে দিয়েছে।
বিসিসির উচ্ছেদ শাখার কর্মকর্তা স্বপন কুমার বলেন, এলাকাবাসাীর অভিযোগ পাওয়ার পর তারা মাপঝোক করে দেখেছেন বিসিসির জমিতে গেট স্থাপন করা হয়েছে। এজন্য সেটি অপসারণ করা হয়েছে।