আইপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের মাঠে পরবর্তী আসরের ফাইনাল হওয়াকে রীতিই বলা যায়। রীতি অনুযায়ী, এবারের ফাইনাল হওয়ার কথা ছিল গতবারের শিরোপাজয়ী কলকাতা নাইট রাইডার্সের মাঠ ইডেন গার্ডেনে।

তবে সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের কারণে আইপিএল স্থগিতের পর পিছিয়ে যাওয়ায় সূচিতে বদল আসে। বদলে ফেলা হয় কয়েকটি ম্যাচের ভেন্যুও। কদিন ধরে গুঞ্জন ছিল, ফাইনালসহ প্লে-অফ পর্বের ভেন্যুও বদলে যেতে পারে।

শেষ পর্যন্ত গুঞ্জনটাই সত্যি হলো। কলকাতা থেকে আইপিএল ফাইনাল সরিয়ে নেওয়া হলো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাটের বৃহত্তম শহর আহমেদাবাদে। ১ লাখ ৩২ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট ভেন্যু। আজ রাতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ফাইনালের পাশাপাশি প্লে-অফের বাকি তিন ম্যাচের (প্রথম ও দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার এবং এলিমিনেটর) ভেন্যুও বদলে ফেলা হয়েছে।

দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারও কলকাতার পরিবর্তে আহমেবাদে হবে। আর প্রথম কোয়ালিফায়ার ও এলিমিনেটর হবে পাঞ্জাব কিংসের মাঠ মুল্লানপুরের নতুন পিসিএ স্টেডিয়ামে। আগের সূচি অনুযায়ী এই দুই ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল গতবারের রানার্সআপ সানরাইজার্স হায়দরাবাদের মাঠ রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে।

এ ছাড়া রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদের আগামী শুক্রবারের ম্যাচটিও বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম থেকে সরিয়ে লক্ষ্ণৌর ভারতরত্ন অটল বিহারি বাজপেয়ী একানা স্টেডিয়ামে নেওয়া হয়েছে। এর অর্থ, বিরাট কোহলির দল এ বছর নিজেদের মাঠে আর কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে না।

একসঙ্গে এতগুলো ম্যাচের ভেন্যু কেন বদলানো হলো, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছে বিসিসিআই। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আবহাওয়া পরিস্থিতি ও অন্যান্য বিষয়াদি মাথায় রেখে আইপিএল পরিচালনা পর্ষদ নতুন ভেন্যু ঠিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আবহাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আজ থেকে আইপিএলের সব ম্যাচেই অতিরিক্ত এক ঘণ্টা সময় বরাদ্দ রাখা হবে।

ভারতের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে এখন মৌসুমি জলবায়ু বিরাজ করছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসবিষয়ক পরিষেবা আকুওয়েদারও বলছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কলকাতা, হায়দরাবাদ ও বেঙ্গালুরুতে নিয়মিত বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ইন ল কলক ত

এছাড়াও পড়ুন:

বঙ্গীয় বদ্বীপের মানুষের সংকটকালে তুরস্ক পাশে দাঁড়িয়েছে:

বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সংকটকালে তুরস্ক বঙ্গীয় বদ্বীপের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।

শুক্রবার (৪ জুলাই) স্থানীয় সময় তুরস্কের ইস্তানবুলে অবস্থিত ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার প্রসারে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সময়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করেন সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট নেজমুদ্দিন বিলাল এরদোয়ান।

আরো পড়ুন:

‘শিল্পী দেবাশিস চক্রবর্তীর আঁকা পোস্টারে ফুটে উঠবে জুলাইয়ের অনিবার্যতা’

তৃণমূল থেকেই উঠে আসবে লাল-সবুজের ভবিষ্যৎ তারকা: আসিফ মাহমুদ

বৈঠকে তারা দুই দেশের সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিকাশে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন এবং এসব লোকজ ক্রীড়া প্রসারে পারস্পরিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

বৈঠকে বিলাল এরদোয়ান বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, যেমন কাবাডি, কুস্তি, বলিখেলা এবং নৌকা বাইচের সম্ভাবনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এই খেলাগুলোকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে আমরা একযোগে কাজ করতে আগ্রহী।” তাছাড়া, তিনি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খেলা নিয়ে কাজ করা ফেডারেশনগুলোকে ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের সদস্য করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

তুরস্কের শিক্ষা কার্যক্রমে নিজের সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরে তিনি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য তুরস্কে শিক্ষাবৃত্তি, এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম ও বিষয় ভিত্তিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের প্রস্তাব দেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশে তার সংস্থার পরিচালিত স্কুলের একটি শাখা চালু করারও আগ্রহ প্রকাশ করেন। 

তাছাড়া, ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণায় তিনি তার কক্সবাজার সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা প্রসারে সহায়তা প্রদানের আগ্রহ জানান। এই উদ্যোগের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জীবন সহজতর হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণে তুরস্কের চলমান প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতাকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের নেতৃত্বে তুরস্কের জনগণ নিজেদের আত্মপরিচয়, সংস্কৃতি ও সাফল্য পুনরুদ্ধারে কাজ করছে।”

বৈঠকে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ তার প্রকৃত ও বিশ্বস্ত বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে, যেখানে তুরস্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।” তিনি আরো বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর তরুণদের মধ্যে রাজনীতি সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সভ্যতাগত রূপান্তরে গুরুত্ব আরোপ করছে বাংলাদেশ।

তিনি আরো জানান, তুরস্কের মতো বাংলাদেশের অতীত গৌরবোজ্জ্বল সময়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পুনর্জীবন ঘটানোর প্রতি আগ্রহের কথা।

উপদেষ্টা গাজায় চলমান গণহত্যাসহ বিশ্বের নিপীড়িত মুসলিম জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য একটি শক্তিশালী ও কার্যকর আন্তর্জাতিক জোট গঠনের আহ্বান জানান এবং জানান, এ লক্ষ্যে বাংলাদেশের সক্রিয় সমর্থন ও অংশগ্রহণ থাকবে।

উপদেষ্টা আসন্ন “গ্লোবাল ইয়ুথ সামিট ২০২৫”-এ বিলাল এরদোয়ানকে বাংলাদেশ সফরের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানান। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই সফর দুই দেশের যুব, ক্রীড়া ও রাজনৈতিক সম্পর্কের পারস্পরিক অংশীদারিত্বকে আরো সুদৃঢ় ও বেগবান করবে।

ঢাকা/এএএম/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ