Samakal:
2025-07-08@14:35:03 GMT

চোখ ভিজিয়ে ডি ব্রুইনার বিদায়

Published: 22nd, May 2025 GMT

চোখ ভিজিয়ে ডি ব্রুইনার বিদায়

মঙ্গলবার বিকেলটি ম্যানচেস্টার সিটির জন্য বেশ স্বস্তিরই ছিল। বোর্নমাউথকে ৩-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেছেন পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। চোটের কারণে আট মাস মাঠের বাইরে থাকা ব্যালন ডি’অরজয়ী রদ্রি এ ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরেছেন। এই স্বস্তির পাশাপাশি বিদায়ের যন্ত্রণায়ও পুড়েছে ইত্তিহাদ স্টেডিয়াম। ক্লাবের সর্বকালের সেরাদের একজন ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচ খেলেছেন। সেই কিংবদন্তি কেভিন ডি ব্রুইনাকে বিদায় জানাতে গিয়ে পেপ গার্দিওলার মতো কাঠখোট্টা মানুষও কেঁদেকেটে বুক ভাসিয়েছেন।

প্রিমিয়ার লিগে গত এক দশক রাজত্ব করেছে সিটিজেনরা। এই এক দশকের শেষ আট মৌসুমে ছয়টি লিগ শিরোপাই জিতেছে সিটি। এ ছাড়া মহাকাঙ্ক্ষিত একটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, দুটি এফএ কাপ ও পাঁচটি লিগ কাপ জিতেছে তারা। সিটির এই সাফল্যের অন্যতম রূপকার বেলজিয়ান মিডফিল্ডার। ২০১৫ সালে সিটিতে যোগ দেওয়া এ তারকা সিটির হয়ে মোট ১৬টি ট্রফি জিতেছেন। গার্দিওলা সিটিতে যোগ দিয়েছেন ২০১৬ সালে। গার্দিওলার অধীনে সিটির মিডফিল্ডের রাজা ছিলেন এই ডি ব্রুইনা। তাঁর মতো কার্যকর ও নান্দনিক ফুটবলার সমসাময়িককালে খুব কমই দেখা গেছে। যে কারণে গার্দিওলা তাঁকে সিটির ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়ের মর্যাদা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, স্প্যানিশ এ কোচের অভিমত, তাঁর দেখা সেরা ফুটবলার অবশ্যই লিওনেল মেসি। আর্জেন্টাইন জাদুকরের পরেই ডি ব্রুইনাকে স্থান দিয়েছেন। সেই প্রিয় শিষ্যকে বিদায় দিতে গিয়ে চেখের জলে ভেসেছেন গার্দিওলা। 

ম্যাচের ৬৭ মিনিটে মাতেও কোভাসিচ লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে দলের ভারসাম্য রক্ষার জন্য মিনিট দুয়েকের মধ্যেই কেভিড ডি ব্রুইনাকে তুলে নেন গার্দিওলা। বেলজিয়ান এ তারকা মাঠ ছাড়ার সময় আবেগঘন এক পরিস্থিতি তৈরি হয়। দর্শকদের হর্ষধ্বনিতে সতীর্থ ও প্রতিপক্ষের ভালোবাসায় ধীরে ধীরে শেষবারের মতো প্রিয় আঙিনা থেকে বেরিয়ে যান তিনি। আবেগ লুকিয়ে মুখে একচিলতে হাসি ফুটিয়েই মাঠ ছাড়ছিলেন তিনি। কিন্তু ডাগআউটের কাছে যেতেই তাঁকে জড়িয়ে ধরেন গার্দিওলা। আবেগ ধরে রাখা তখন সত্যিই কঠিন হয়ে উঠেছিল ডি ব্রুইনার জন্য। 

ডি ব্রুইনাকে বিদায় জানাতে আয়োজনের কমতি রাখেনি সিটিজেনরা। ম্যাচ শুরুর আগেই গ্যালারিতে ‘কিং কেভ’ লেখা বিশাল এক টিফো ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ম্যাচের পর পুরো স্টেডিয়াম অন্ধকার করে বড় পর্দায় দেখানো হলো তাঁর জন্ম দেওয়া স্মরণীয় মুহূর্তগুলো। সেই অন্ধকার ছিঁড়ে একসময় আলো হয়ে হেঁটে আসেন ডি ব্রুইনা। সঙ্গে ছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তখন ডি ব্রুইনাকে অভিবাদন জানাতে দুই পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ক্লাবের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা। ৩৩ বছর বয়সী এ মিডফিল্ডারের অবদানকে স্মরণ রাখতে ইত্তিহাদের বাইরে তাঁর ভাস্কর্য নির্মাণের ঘোষণাও দেয় ক্লাব কর্তৃপক্ষ। 

তখন স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনে বিশেষ একটি ভিডিওতে ডি ব্রুইনাকে স্তুতিতে ভাসান ম্যানসিটির বিভিন্ন সময়ের তারকারা। তাদের মধ্যে ছিলেন সার্জিও আগুয়েরো, ফার্নান্দিনহো, রিয়াদ মাহারেজ, ভিনসেন্ট কোম্পানি, লেরয় সানে প্রমুখ তারকা। তাদের বার্তা শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন গার্দিওলা, ‘সবাই ছিল সেখানে, খুবই দারুণ। ১০ বছর, অনেক অনেক ম্যাচ, অনেক শিরোপা, অনেক অসাধারণ মুহূর্ত। তাঁর প্রতি ভালোবাসা কতটা ছিল, সেটির কিছুটা আজকে ফুটে উঠেছে।’ 

তিনি আরও যোগ করেন, ‘দিনটি বেদনার। তাঁর অভাব অবশ্যই অনুভূত হবে। কিছু ফুটবলার আছে, যাদের বিকল্প হয় না। ব্যাপারটি শুধু কিছু গোল কিংবা অ্যাসিস্ট বা অবিশ্বাস্য মুহূর্তের ব্যাপার নয়; এটি হলো সংযোগের ব্যাপার। যেভাবে সে খেলে, লোকে যা ভালোবাসে।’ ডি ব্রুইনাও সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন, ‘আমি সৃষ্টিশীলতা ও আবেগের সঙ্গে খেলার চেষ্টা করেছি। আমি ফুটবল উপভোগ করতে চেয়েছি। আশা করি, সবাই সেটি উপভোগ করেছেন। আর আমার সামনে থাকা মানুষগুলো আমাকে আরও ভালো বানিয়েছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ভ ন ড ব র ইন ব র ইন ক ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

নেতাদের সদিচ্ছার অভাবে চালু হচ্ছে না পাবনা-ঢাকা সরাসরি ট্রেন

রাজনৈতিক নেতাদের সদিচ্ছার অভাবে পাবনা-ঢাকা সরাসরি ট্রেন সার্ভিস চালু হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বেসরকারি সংগঠন শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশন।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপরে পাবনা প্রেস ক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পাবনা থেকে ঢাকায় সরাসরি ট্রেন সার্ভিস চালু, ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালু, শহরে চার লেন সড়ক নির্মাণ, আরিচা-কাজিরহাট ফেরিঘাট খয়েরচরে স্থানান্তরের দাবি জানানো হয়। দাবি বাস্তবায়ন না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনটির নেতারা।

আরো পড়ুন:

বগুড়ায় ট্রেনের ধাক্কায় কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

খুলনার সঙ্গে ঢাকা ও উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ

সংবাদ সম্মেলনে শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশন-এর সভাপতি খান হাবিব মোস্তফা বলেন, ‍“ঢাকা থেকে পাবনা আসতে সড়ক পথে যানজটের কবলে পড়তে হয়। চার ঘণ্টার রাস্তায় ১০-১২ ঘণ্টা অতিবাহিত হয়। ট্রেন সার্ভিস চালু হলে সহজেই পাবনা থেকে ঢাকা যাতায়াত করা সম্ভব হবে।” 

তিনি বলেন, “রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প ও ইপিজেডে অসংখ্য বিদেশি নাগরিক বসবাস করেন। তারা ঢাকায় যাতায়াতে যানজটে ব্যাপক নাজেহালের শিকার হন।” সেই বিষয়টি বিবেচনা করে দ্রুত বন্ধ থাকা ঈশ্বরদী বিমানবন্দর খুলে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “শুরু থেকেই উত্তরবঙ্গ বৈষম্যের শিকার। একটা উপদেষ্টাও নেই সরকারে। উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার পাবনা আগে থেকেই উন্নয়ন বঞ্চিত। পাবনার কোথাও কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। পাবনাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আমরা উন্নয়ন চাই।”

পাবনা থেকে সরাসরি ট্রেন সার্ভিস চালুর বিষয়ে বারবার অগ্রগতি হলেও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সদিচ্ছার অভাবে এবং অদৃশ্য কারণে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অভিযোগ করে শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশন এর সভাপতি খান হাবিব মোস্তফা বলেন, ‘ঈশ্বরদী বিমানবন্দর একই আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় বন্ধ হয়ে আছে। সারা দেশে কয়েকটি বিমানবন্দর সরকার চালু করার সিদ্ধান্ত নিলেও আমরা বঞ্চিত হব কেন? দ্রুত এসব দাবি বাস্তবায়ন না হলে পাবনাবাসীকে নিয়ে কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আমাদের আন্দোলনের ফসল বারবার অদৃশ্য কারণে বন্ধ হতে দেব না ইনশাআল্লাহ।”

আয়োজকরা জানান, আগামী ১৩ জুলাই পাবনা প্রেসক্লাবের সামনে শহীদ চত্বরে চার দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। আগামী ২৫ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত গণসাক্ষর কর্মসূচি পালন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- পাবনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি এস এম আলাউদ্দিন, শেকড় ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ড. মোস্তাফিজ খান, পরিচালক তাজুল ইসলাম।

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ