যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্সের তীব্র সমালোচনা নেতানিয়াহুর
Published: 23rd, May 2025 GMT
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার এবং ফ্রান্স ও কানাডার নেতাদের তীব্র সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, এই নেতারা ‘চান হামাস ক্ষমতায় থাকুক।’
তিনি স্টারমার, ইমানুয়েল ম্যাক্রন এবং মার্ক কার্নিকে “গণহত্যাকারী, ধর্ষক, শিশুহত্যাকারী ও অপহরণকারীদের” পক্ষ নেওয়ার অভিযোগও করেছেন।
বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসের কর্মীদের উপর হামলার পর নেতানিয়াহু বক্তব্য রাখছিলেন। কয়েকদিন আগে, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং কানাডা গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল এবং মানবিক পরিস্থিতিকে ‘অসহনীয়’ বলে বর্ণনা করেছিল।
ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসের কর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় অবশ্য নিন্দা জানিয়েছে ডাউনিং স্ট্রিট ওয়াশিংটন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার এক পোস্টে বলেছেন, ইহুদি-বিদ্বেষকে “আমাদের অবশ্যই নির্মূল করতে হবে।”
১৯ মাস আগে গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল ইহুদিবাদী দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা। তবে সম্প্রতি ইসরায়েল গাজায় সবধরনের আন্তর্জাতিক ত্রাণের প্রবেশ বন্ধ করে দেয় এবং সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচারে হামলা শুরু করে। এ ঘটনায় ইসরায়েলের তীব্র সমালোচনা করে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্স। ইসরায়েল যদি পথ পরিবর্তন না করে তবে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল তিনটি দেশ। ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা স্থগিত করেছে।
বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু তিন দেশের সমালোচনা করে বলেছেন, “আমি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন, প্রধানমন্ত্রী কার্নি এবং প্রধানমন্ত্রী স্টারমারকে বলছি, যখন গণহত্যাকারী, ধর্ষক, শিশু হত্যাকারী ও অপহরণকারীরা আপনাদের ধন্যবাদ জানায়, তখন আপনারা ন্যায়বিচারের ভুল দিকে আছেন। আপনারা মানবতার ভুল দিকে আছেন এবং আপনারা ইতিহাসের ভুল দিকে আছেন।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ