জেরুজালেমে প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো মাজার দখল করে বাড়িতে রূপান্তর করেছেন এক ইসরায়েলি
Published: 23rd, May 2025 GMT
জেরুজালেমের প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক ইসলামি নিদর্শন শেখ আহমেদ আল-দাজানির মাজার দখল করেছেন ইসরায়েলের এক বসতি স্থাপনকারী। মাজারটিকে তিনি ব্যক্তিগত বাড়িতে রূপান্তর করেছেন।
বৃহস্পতিবার জেরুজালেম গভর্নরেটের গণমাধ্যম দপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ওই ব্যক্তি মাজারটির মূল তালা ভেঙে ভেতরে নিজের আসবাব নিয়ে ঢুকেছেন। নতুন তালা লাগিয়েছেন। বিদ্যুৎ, পানিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সংযোগের ব্যবস্থা করে সেখানে থাকতে শুরু করেন।
ওই ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী মাজারের ভেতরে থাকা শেখ আহমেদের কবর এবং বাইরের দেয়ালে থাকা পরিচিতি ফলকটিও খুলে ফেলেছেন। ফলকটিতে স্থাপনাটির সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব লেখা ছিল।
মাজার দেখভালের দায়িত্বে থাকা দাজানি পরিবারের এক সদস্য নিয়মিত পরিদর্শনের সময় মাজার দখলের ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন। এরপর পরিবারটি দখলদার ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত জেরুজালেম পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করে।
বুধবার ওই বসতি স্থাপনকারীকে মাজার থেকে সরিয়ে দেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। তবে এখনো মাজারের নতুন চাবি দাজানি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। পৌর কর্তৃপক্ষের আচরণকে ‘পরিবারটির মাজারে প্রবেশ ও তত্ত্বাবধানের অধিকারের আরেকটি লঙ্ঘন’ বলে মন্তব্য করেছে জেরুজালেম গভর্নরেট।
জেরুজালেম গভর্নরেট ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক কাঠামোর অংশ। ইসরায়েল ১৯৬৭ সাল থেকে জেরুজালেম শহরটি দখল করে রেখেছে। জেরুজালেম পৌর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতে।
মাজার দখলের ঘটনার জন্য ইসরায়েলি দখলদার কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছে জেরুজালেম গভর্নরেট। এ ঘটনাকে তারা ‘পূর্ণমাত্রার অপরাধ’ এবং ‘জেরুজালেমের আরব, ইসলামি ও খ্রিষ্টান পরিচয় বদলে দেওয়ার লক্ষ্যে চলমান ঔপনিবেশিক প্রকল্পের অংশ’ বলে উল্লেখ করেছে।
জেরুজালেমের মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেসকো), ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি), জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জেরুজালেম গভর্নরেট।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলায় ৩২ জনের জামিন
সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৩২ জন সাংবাদিক আদালতে স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে জামিন নিয়েছেন।
সোমবার (৭ জুলাই) সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক রাফিয়া সুলতানা তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের দখলদার কমিটির নেতা মো. আবু নাসের সাঈদ। মামলায় ৩৭ জন সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করা হয়, যাদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার মতো ফৌজদারি ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
‘প্রশ্ন নয়, প্রশংসা করতে এসেছি’ এই ছিল হাসিনার সংবাদ সম্মেলন
কলাপাড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি টিপু, সম্পাদক অমল
আদালতে সাংবাদিকদের পক্ষে জামিনের সওয়াল করেন সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এম শাহ আলম, সাবেক পিপি সৈয়দ ইফতেখার আলী ও খায়রুল বদিউজ্জামালসহ অর্ধশতাধিক সিনিয়র আইনজীবী।
জামিন পাওয়া সাংবাদিকরা বলেন, ‘‘আমরা ন্যায়বিচারের ওপর আস্থাশীল বলে আইন মেনে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছি। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যেভাবে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মামলা করা হয়েছে, তাতে আমাদের পেশাগত নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।’’
সাংবাদিক নেতারা দাবি করেছেন, মূলত সাংবাদিকদের উপর সংঘটিত হামলার ঘটনা আড়াল করতেই পাল্টা মামলা করেছেন আবু সাঈদ। তারা আরো বলেন, ‘‘যারা হামলার শিকার হয়েছেন, আজ তারাই আসামি, এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থি।’’ তারা দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন।
গত ৩০ জুন সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাব এলাকায় দখলদার কমিটির আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নির্দেশে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালায় বহিরাগতরা। এতে সভাপতি আবুল কাশেমসহ অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক আহত হন। ঘটনায় দুটি মামলা হয়। একটি সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এবং অপরটি আবু সাঈদের পক্ষ থেকে।
ঢাকা/শাহীন/বকুল