পরস্পরকে চাঁদাবাজ বলছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতারা
Published: 24th, May 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মারজুক আব্দুল্লাহ এবার নিজ সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির পাল্টা অভিযোগ করেছেন। জুলাই বিপ্লবের ঘটনা উল্লেখ করে ৯ মাস পর প্রশ্নবিদ্ধ মামলার এ বাদী বলেছেন, তাঁর মামলাকে পুঁজি করে জেলা আহ্বায়ক ও মুখপাত্র চাঁদাবাজি করছেন।
গত ১৪ মে মামলা করার পর সংবাদ সম্মেলন করে মারজুকের বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্যের অভিযোগ তোলে এবং তাঁর সাংগঠনিক পদ স্থগিত করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটি। এর পাল্টা জবাব দিতে শনিবার বরিশাল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন মারজুক আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ভুল তথ্যের কারণে কিছু নিরীহ লোক আসামি হয়েছেন। তাদের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার প্রভোলন দেখিয়ে আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। একেকজনের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকাও নেওয়া হচ্ছে।
এ নেতার দাবি, এক ছাত্রলীগ নেতার নাম বাদ দিতে তদবির করেছিলেন মুখপাত্র সুমি হক। রাজি না হওয়ায় সংগঠনে তাঁর পদ স্থগিত করা হয়েছে। তাঁর চাঁদাবাজির বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি দাবি করেন, এসব অভিযোগের কোনো প্রমাণ নেই।
আহ্বায়কের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ বিশ্বাসযোগ্য করতে ছাত্র আন্দোলনের এ নেতা সংবাদ সম্মেলনে জামাল খান নামের এক আসামিকে হাজির করেন। জামাল দাবি করেন, সাব্বির হোসেন তাঁর কাছে ৩ লাখ টাকা চেয়েছেন। তবে জামায়াতের দু’জন রুকন ও এক প্রবাসীকে আসামি করার বিষয়ে জানতে চাইলে মারজুক উপযুক্ত কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
তবে চাঁদাবাজির অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে জেলা আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন বলেন, আমার ও সুমির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো প্রমাণ মারজুক দেখাতে পারবে না। তাঁর পদ স্থগিত করায় ক্ষিপ্ত হয়ে এসব বলছে। সে ২৪৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। অথচ ৪৭ জনকেও চেনে না।
মামলার গ্রেপ্তার হওয়া আসামি মিজানুর রহমানের পরিবার গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মারজুক ১০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় মিজানুরকে আসামি করে ও পরে দোকানের মধ্যে আটকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়।
এ অভিযোগের বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেছেন, বাদী মারজুক নিজে আসামি ধরে পুলিশে খবর দেন। তিনি বাদী হওয়ায় আসামি থানায় আনতে হয়। তখন আটক না করলে মেরে ফেলার ভয় থাকে।
গত ১৪ মে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা আমির হোসেন আমুসহ নামধারী ২৪৭ জন এবং অজ্ঞাতনামা প্রায় ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মারজুক। আসামি তালিকায় নাম রাখা ও বাদ দেওয়া নিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বর শ ল জ ল ই অভ য ত থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুরে একদিনে ৯ মরদেহ উদ্ধার
দিনাজপুরে একদিনেই নয়জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের মধ্যে পাঁচজনের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার দিনগত রাতে জেলার বীরগঞ্জের চাউলিয়া গ্রামে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি বাহা বেসরা (৫৫) নিহত হন। এই ঘটনায় অভিযুক্ত সামিয়েল মার্ডিকে (৩৮) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। স্ত্রী মিনি হায়দার সঙ্গে পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে একই উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের নাগরগঞ্জ কলোনিপাড়া লিচু বাগানে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নারায়ণ চন্দ্র বর্মণ (২২) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল গফুর হত্যা ও বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দুপুরে জেলার নবাবগঞ্জে খয়ের গুনি গ্রামে করতোয়া নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়।
একই উপজেলার মালভবানীপুর গ্রামের সোহরাফ হোসেনের মেয়ে সাথী আকতার (২০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এছাড়া হাকিমপুর উপজেলার বাওনা আলিহাট গ্রামের মনিরুল ইসলামের স্ত্রী বৃষ্টি (১৯) ও একই উপজেলার ঈশ্বরপুর গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে মুনসুর আলী খোকা (৫০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। বিকেলে তাদের নিজ শয়নকক্ষ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক জানান, মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
একই রাতে বিরল উপজেলার ফরক্কাবাদ মল্লাপাড়া গ্রামের মৃত তসলিম উদ্দিনের ছেলে তৌফিকুজ্জামান (৪৭) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। বিরল থানার ওসি আব্দুস ছবুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ দিন দুপুরে গলায় লিচুর বিচি আটকে বোচাগঞ্জ উপজেলার নাফানগন ইউনিয়নের ধনীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোমিনের ছয়মাস বয়সের শিশু সন্তান আরফানের মৃত্যু হয়।
এছাড়াও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আঁখি মনি (২৭) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। প্রবাসী হারুন অর রশিদের নতুন বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার সময় ঘরের দরজা বিদ্যুতায়িত হয়। এ সময় আঁখি মনি দরজা খুলতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হন। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম খন্দকার মুহিব্বুল জানান, অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।