ছাত্র উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করতে বলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক: নাহিদ
Published: 24th, May 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে নাম জড়িয়ে ছাত্র উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করতে বলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে করেন দলটির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ছাত্র উপদেষ্টারা গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে গেছেন এবং গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করছেন।
আজ শনিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন। এ সময় ছাত্র উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টাদের অপদস্থ করার নিন্দা জানান তিনি।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে এনসিপির চার সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন নাহিদ ইসলাম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা।
আরও পড়ুনদায়িত্ব পালন অসম্ভব করে তুললে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার৭ ঘণ্টা আগেবৈঠক শেষে রাত সোয়া ১০টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। পাশাপাশি গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় প্রধান উপদেষ্টা যে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, সেই দায়িত্ব সম্পন্ন করেই যেন তিনি যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। এ বিষয়ে তাঁকে অনুরোধ করা হয়েছে।
বৈঠকে এনসিপিকে কেন ডাকা হয়েছে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে নাহিদ ইসলাম বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা কাজ করতে পারছেন না। সে ক্ষেত্রে তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন কি না—সেসব বিষয় আলোচনা করতেই তাঁদের বৈঠকে ডাকা হয়েছে।
আরও পড়ুনদুই ছাত্র উপদেষ্টা ও নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগ চায় বিএনপি২ ঘণ্টা আগেসরকার কী কী প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছে বলে এনসিপিকে জানিয়েছে, এমন এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, গণ–অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্বে এসেছিলেন। তবে সেই প্রতিশ্রুতি থেকে কোনো কোনো পক্ষ সরে এসেছে বলে প্রধান উপদেষ্টার মনে হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টাকে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে দাবি আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, সেই জায়গায় প্রধান উপদেষ্টা হতাশা ব্যক্ত করেছেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন তিনি যেন দায়িত্বে থাকেন এবং আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল নয়; বরং জনগণ এবং গণ-অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতা, তাদের আহ্বানেই তিনি (অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস) দায়িত্বে এসেছেন এবং তাদের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে তিনি আসলে কমিটেড (প্রতিশ্রুতিবদ্ধ)।.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত র উপদ ষ ট ন হ দ ইসল ম র জন ত ক এনস প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
অভিযোগের পর বাতিল চারটি কার্যাদেশ
বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস পালের বিরুদ্ধে নিয়মের বাইরে গিয়ে দরপত্র আহ্বানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি নীতিমালা উপেক্ষা করে চারজন ঠিকাদারের অনুকূলে ৩০ লক্ষাধিক টাকার কার্যাদেশও দেন। এই অনিয়ম তদন্তের দাবি জানিয়ে ইউএনও তাপস পাল ও এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
১৯ মে এ অভিযোগ দেন ঠিকাদার মো. রফিকুল ইসলাম মোল্লা। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে চারটি কার্যাদেশই আগের দিন সভা দেখিয়ে (১৮ মে) বাতিল করে উপজেলা প্রশাসন। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৯ মার্চ চিতলমারীর ইউএনওর বাসভবন মেরামত, সংস্কারসহ বিভিন্ন কাজের জন্য ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ। প্রায় দুই মাস পরে চারটি দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রথম দরপত্রে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসকক্ষ এবং উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার অফিসকক্ষ সংস্কার ও মেরামত, ইউএনওর বাসভবন (দ্বিতীয় তলা) সংস্কার ও মেরামত, দুই নম্বর দরপত্রে উপজেলা প্রকৌশলীর অফিসকক্ষ সংস্কার ও মেরামত, ইউএনওর বাসভবনের সীমানাপ্রাচীর উঁচুকরণ, ফটক সংস্কার ও মেরামত, তিন নম্বর দরপত্রে তাঁর কার্যালয় ও উপজেলা পরিষদ কার্যালয় সংস্কার ও মেরামত এবং চার নম্বর দরপত্রে ইউএনওর অফিস বাংলো সংস্কার ও মেরামতের কথা বলা হয়। কোনো দরপত্রেই কাজের বিবরণ ও মূল্য উল্লেখ করা হয়নি। শর্ত অনুযায়ী ১৪ মে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে দরপত্র দাখিলের কথা বলা হয়।
লিখিত অভিযোগে রফিকুল মোল্লা উল্লেখ করেছেন, ৮ মে দরপত্র আহ্বানের তারিখ দেখানো হলেও পত্রিকায় তা প্রকাশিত হয়নি। ১৪ মে বেলা ১১টা পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের নোটিশ বোর্ডে ওই দরপত্র আহ্বানের নোটিশ টানানো হয়নি।
১৫ মে চারটি দরপত্রের বিপরীতে চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেন ইউএনও তাপস পাল। প্রথম দরপত্রের জন্য কার্যাদেশ পায় শেখ মো. জাহিদুজ্জামানের মালিকানাধীন মেসার্স জ্যোতি এন্টারপ্রাইজ। দুই নম্বর দরপত্রের কাজ দেওয়া হয় চিরঞ্জীব বিশ্বাসের মালিকানাধীন মেসার্স বিশ্বাস এন্টারপ্রাইজকে। তিন নম্বর দরপত্রের কার্যাদেশ পায় তাহজ্জত খানের মালিকানাধীন মেসার্স ইউসুফ খান এন্টারপ্রাইজ। চার নম্বর দরপত্রের কার্যাদেশ দেওয়া হয় মো. ফারুক মল্লিকের মল্লিক ইন্টারন্যাশনাল এন্টারপ্রাইজকে।
জ্যোতি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শেখ মো. জাহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমি কোনো কাজ পাইনি। কে আপনাকে এসব তথ্য দিয়েছে?’
ইউএনও তাপস পাল বলেন, উপজেলা পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে চারটি কাজের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। সামনে জুন মাস হওয়ায় উপজেলা পরিষদের আরও কিছু কাজ করানো হবে, এজন্য একসঙ্গে দরপত্র আহ্বান করা হবে। অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য এড়িয়ে যান তিনি।
জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল আহসান বলেন, ‘চিতলমারীর দরপত্র আহ্বানসংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’