যশোর শহরের সার্কিট হাউস–সংলগ্ন এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছয়তলার বারান্দা ভেঙে পড়ে দুই প্রকৌশলীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত তিনজন হলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বাসিন্দা প্রকৌশলী মিজানুর রহমান (৩৫), দিনাজপুরের বাসিন্দা প্রকৌশলী আজিজুর রহমান (৩৫) এবং নির্মাণশ্রমিক মো.

নুরু (৩০)।

পুলিশ ও স্থানীয় মানুষের বরাতে জানা যায়, একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান ভবনটি নির্মাণ করছে। সাততলা ভবনের ছয়তলায় দাঁড়িয়ে কাজ করছিলেন প্রকৌশলী ও শ্রমিকেরা। এ সময় হঠাৎ বারান্দাটি ভেঙে তাঁরা নিচে পড়ে যান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।

যশোর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি ছয়তলার বারান্দা ভেঙে পড়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌরসভার কোনো অনুমোদন ছাড়াই ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। দীর্ঘ তিন বছর ধরে নির্মাণকাজ চললেও পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

এ বিষয়ে যশোর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ হাসান বলেন, ভবনটির অনুমোদন ছিল কি না বা নির্মাণে কোনো শর্ত ভাঙা হয়েছে কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে। তবে দুর্ঘটনার আগে কেন এমন তদারক করা হয়নি—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের জনবল সীমিত। শহরের বহু ভবনে একসঙ্গে কাজ চলছে, সব নজরদারি সম্ভব হচ্ছে না।’

এ বিষয়ে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান বিল্ডিং ফর ফিউচারের বিপণন ব্যবস্থাপক সোলায়মান হোসেন বলেন, ‘এটা টেকনিক্যাল বিষয়। প্রকৌশলীরা ভালো বলতে পারবেন। তবে বারান্দা ভেঙে তিনজন মারা গেছেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ঘটন ত নজন

এছাড়াও পড়ুন:

কাজ শেষ হওয়ার আগেই ধসে পড়ল সিঁড়ি

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার খাগাউড়া গ্রামে খাগাউড়া ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবনের নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভবনটিতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও নকশাবহির্ভূত কাজ করার অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, ভবনের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি ধসের পর এর নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে বিক্ষুদ্ধ জনতা। জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের (পিইডিপি-৪) আওতায় খাগাউড়া ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণ করছে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
ভবনটি নির্মাণের শুরু থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে আসছিলেন ঠিকাদার। এমন অভিযোগ একাধিকবার দিয়েছেন স্থানীয়রা। এরই মধ্যে ভবনের প্রথম তলার ছাদ ঢালাই শেষে দ্বিতীয় তলার ছাদের প্রস্তুতি চলছিল। ১৯ জুন দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির ঢালাই করা হয়। মাত্র ছয় দিনের মাথায় ২৫ জুন রাতে পুরো সিঁড়ি ধসে পড়ে। এ ছাড়া সিঁড়ির ওপরের অ্যাপ্রোচ ও পিলারের ঢালাইও খসে পড়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি হয়। তাদের অভিযোগ, পুরো ভবনের নির্মাণকাজে অনিয়ম হচ্ছে এবং নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই নির্মাণশ্রমিকদের কাজে বাধা দেন গ্রামবাসী। 
স্থানীয় বাসিন্দা শুভ মিয়া বলেন, একটি স্কুল ভবন নির্মাণেও নয়ছয় করছেন ঠিকাদার। এই স্কুলে খুদে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করবে। এই রকম নিম্নমানের সামগ্রী ও নকশাবহির্ভূত কাজ করা হলে এই শিক্ষার্থীদের জীবন থাকবে হুমকির মুখে। 
স্থানীয় বিপুল সূত্রধর বলেন, এই বিদ্যালয়ে শিশুরা লেখাপড়া করে। ভবন যদি ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তা হলে কীভাবে তাদের পাঠাবে এলাকার মানুষ?
অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শেখ সেলিমের মালিক তুষার চৌধুরী বলেন, সিঁড়িতে যতগুলো ধাপ থাকার কথা, তার একটি কম রয়েছে। এতে ডিজাইনবহির্ভূত হয়েছে। ভুল মানুষেরই হয়। এলজিইডি এই সিঁড়ি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছে। 
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিযুক্ত সার্ভেয়ার উজ্জ্বল মণ্ডল বলেন, নির্মাণকাজে অনিয়ম ও ডিজাইনবহির্ভূত হওয়ার বিষয়টি নজরে এসেছে। গত ২২ জুন ঠিকাদারকে চিঠি দিয়ে তা জানানো হয়েছে। এর পরই শুনলাম সিঁড়ি ধসে পড়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কাজ শেষ হওয়ার আগেই ধসে পড়ল সিঁড়ি