যশোরে নির্মাণাধীন ভবনের বারান্দা ভেঙে দুই প্রকৌশলীসহ নিহত ৩
Published: 1st, July 2025 GMT
যশোর শহরের সার্কিট হাউস–সংলগ্ন এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছয়তলার বারান্দা ভেঙে পড়ে দুই প্রকৌশলীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত তিনজন হলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বাসিন্দা প্রকৌশলী মিজানুর রহমান (৩৫), দিনাজপুরের বাসিন্দা প্রকৌশলী আজিজুর রহমান (৩৫) এবং নির্মাণশ্রমিক মো.
পুলিশ ও স্থানীয় মানুষের বরাতে জানা যায়, একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান ভবনটি নির্মাণ করছে। সাততলা ভবনের ছয়তলায় দাঁড়িয়ে কাজ করছিলেন প্রকৌশলী ও শ্রমিকেরা। এ সময় হঠাৎ বারান্দাটি ভেঙে তাঁরা নিচে পড়ে যান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
যশোর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি ছয়তলার বারান্দা ভেঙে পড়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌরসভার কোনো অনুমোদন ছাড়াই ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। দীর্ঘ তিন বছর ধরে নির্মাণকাজ চললেও পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এ বিষয়ে যশোর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ হাসান বলেন, ভবনটির অনুমোদন ছিল কি না বা নির্মাণে কোনো শর্ত ভাঙা হয়েছে কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে। তবে দুর্ঘটনার আগে কেন এমন তদারক করা হয়নি—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের জনবল সীমিত। শহরের বহু ভবনে একসঙ্গে কাজ চলছে, সব নজরদারি সম্ভব হচ্ছে না।’
এ বিষয়ে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান বিল্ডিং ফর ফিউচারের বিপণন ব্যবস্থাপক সোলায়মান হোসেন বলেন, ‘এটা টেকনিক্যাল বিষয়। প্রকৌশলীরা ভালো বলতে পারবেন। তবে বারান্দা ভেঙে তিনজন মারা গেছেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভোটের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে চাকসু ভবন
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামী ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচন। নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে চাকসু ভবন। এরই মধ্যে সংস্কারের জন্য ৩৫ লাখ টাকার বাজেট বরাদ্দ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় এ বাজেটটি পাশ হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) চবির প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল আহাদ রাইজিংবিডি ডটকমকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় চাকসু ভবন সংস্কারে ৩৪ লাখ ৮২ হাজার ৬৭৭ টাকার একটি বাজেট পাশ হয়েছে। এরইমধ্যে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের কিছু কাজ করা হচ্ছে। দ্রুত স্বচ্ছতার সঙ্গে বাজেটের আলোকে বাকি কাজ সম্পূর্ণ করা হবে।”
তিনি বলেন, “সম্পূর্ণ চাকসু ভবন রং করা, ইলেক্ট্রিক, টাইলস, গ্রাস ও প্লাম্বিংয়ের কাজসহ ছোটবড় যাবতীয় কাজ এ বাজেটের অন্তর্ভুক্ত।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “চাকসু ভবন সংস্কারে বড় একটি বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরকে সংস্কারের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত এ সংস্কারের কাজ শেষ হবে।”
সংস্কারের কাজ তত্বাবধানে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠিত হয়েছে। কমিটিতে আছেন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৈয়ব চৌধুরী, চাকসু কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান চৌধূরী, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক বজলুর রহমান ও চবির প্রকৌশল দপ্তর নির্বাহী প্রকৌশলী ইমদাদুল হক রিয়াদ।
সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালে। এরপর থেকেই কার্যত পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল চাকসু ভবন। দীর্ঘদিন পর ‘ভাতের হোটেল’ খ্যাত ভবনটির সংস্কারে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফ তানজু বলেন, “দীর্ঘদিন পর চাকসু ভবন সংস্কারে আমরা অনেক আনন্দিত। আমরা দেখতে পাচ্ছি ভবনটিতে রং করাসহ আরো বিভিন্ন কাজ করা হচ্ছে। তবে শুধু অবকাঠামগত সংস্কার নয়, আমরা চাই চাকসুর মাধ্যমে যেন প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণ হয়।”
ভোটার ও প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি, অবকাঠামোগত সংস্কার-সবমিলিয়ে জমজমাট হয়ে উঠেছে চাকসু ভবন। শিক্ষার্থীদের কাছে এটি এখন শুধু ভাতের হোটেল নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে চাকসু ভবন।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে চাকসু নির্বাচনের প্রার্থীদের নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ঝুপড়ি থেকে লেডিস ঝুপড়ি, শহীদ মিনার থেকে জিরো পয়েন্ট, অনুষদ হতে শাটল ট্রেন- সর্বত্রই প্রার্থীরা ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে; দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিবর্তনের নানা প্রতিশ্রুতি।
ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা