ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল ও আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের শিক্ষকদের নিয়ে সমন্বিতভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন, সাদা দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান ক্লাবের ২০২৫-২৬ সেশনের ১৫ সদস্যে কার্যকরী কমিটি ঘোষণা করেন। এ কমিটিতে সাদা দলের সাতজন ও নীল দলের সাতজন শিক্ষক রয়েছেন। 

কমিটি ঘোষণার সময় নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান, সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড.

মোর্শেদ হাসান খান ও নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আমজাদসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক কয়েকবার সভা করেন। পরে সমন্বিতভাবে এ কমিটি চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন নির্বাচন কমিশনার। কমিটি ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়মা হক বিদিশা ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। 

ঘোষিত কমিটিতে সভাপতিসহ ছয়জন সাদা দলের ও সেক্রেটারিসহ ছয়জন নীল দলের সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেক্রেটারি হিসেবে আছেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান। তিনি আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের প্যানেল নীল দলের হয়ে শিক্ষক সমিতিতে দুইবারের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। সহ-সভাপতি করা হয়েছে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজাউল করিমকে, যিনি নীল দলের হয়ে সিনেট সদস্য ছিলেন। যুগ্ম সম্পাদক করা হয়েছে ড. রাদ মুজিব লালনকে, তিনি নীল দলের সিন্ডিকেটের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। 

কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. খালেদ মাহমুদ (নীল দলের আহ্বায়ক, আইবিএ) এবং কারুশিল্প বিভাগের জাহাঙ্গীর হোসেন (যুগ্ম আহ্বায়ক, চারুকলা অনুষদ নীল দল)। আরেক সদস্য আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত (যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য) অধ্যাপক জাভীদ ইকবাল বাঙালী। জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতা করায় শিক্ষার্থীরা তাকে বয়কট করেছেন। 

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনার ছিলাম। আমি একটা প্যানেলই পেয়েছি। এ কারণে এই কমিটিকে নির্বাচিত ঘোষণা করেছি। ক্লাব গঠনের দীর্ঘদিনের একটা রেওয়াজ আছে। এ অনুযায়ী, সাধারণত যেসব শিক্ষক ক্লাবে যাতায়াত করেন, তাদের মধ্যেই দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে কমিটি গঠন করা হয়। তবে এবার ফ্যাসীবাদের সহযোগীদের না রাখার কথা ছিল। এ বিষয়ে ঢাবি সাদা দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ভালো বলতে পারবেন।’ 

এ বিষয়ে কথা বলতে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে একাধিকবার কল করা হয়। তবে তিনি কল ধরেননি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র ন ল দল র দল র স সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

জুম্ম ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিত্ব করা ছয়জনই ইউপিডিএফের: পার্বত্য উপদেষ্টা

খাগড়াছড়িতে অবরোধের ডাক দেওয়া সংগঠন ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’-এর প্রতিনিধিত্ব করা ব্যক্তিরা পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। গতকাল সোমবার রাতে রাঙামাটি শহরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন তিনি।

সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা নামে যে গ্রুপটা হয়েছে, তাদের সঙ্গে আমি আজ কথা বলেছি। ছয়জন এসেছিলেন তাঁরা, ছয়জনই ইউপিডিএফের। কারণ, খাগড়াছড়ি এলাকায় ইউপিডিএফ ছাড়া কোনো কিছু নাই। আমি একে একে তাঁদের জিজ্ঞাসা করেছি, তাঁরা বলেছেন, আমরা ছয়জনই ইউপিডিএফ।’

সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘কোনো অপরাধ নয় এটা, মতাদর্শ থাকতেই পারে। আমি ওদের বলেছিলাম, দেখুন গত কয়েক দিনে আপনারা যা যা করলেন, আমার মনে হয় না এটি ম্যাচিউরড ওয়েতে হয়েছে, ম্যাচিউরিটির কমতি এখানে আছে।’

আরও পড়ুনখাগড়াছড়িতে আজও অবরোধ চলছে, স্থবির জনজীবন২ ঘণ্টা আগে

পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, ‘তাঁরা (পাহাড়িরা) সব সময় স্লোগান দেন, সেনা হটাও। এই দুনিয়াতে কিছু বাস্তবতা আছে। যে বাস্তবতার বাইরে আমরা এত সহজে যেতে পারব না। এমনও দিন আসবে, আমরা তাঁদের জোর করে ধরে রাখলেও রাখতে পারব না।’

পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের সময় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, জেলা পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জুম্ম ছাত্র-জনতার হয়ে গতকাল পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া ছয়জন হলেন—কৃপায়ন ত্রিপুরা, ছদক চাকমা, পিন্টু চাকমা, তোষিতা চাকমা, মানিক চাকমা ও বাগীশ চাকমা।

জানতে চাইলে জুম্ম ছাত্র-জনতার মুখপাত্র কৃপায়ন ত্রিপুরা বলেন, তাঁদের ছয়জনকে ইউপিডিএফ ট্যাগ লাগানো উদ্দেশ্যমূলক, অপমানজনক ও ভিত্তিহীন। উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এই বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে জুম্ম ছাত্র-জনতা আর কোনো আলোচনায় অংশ নেবে না। জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে। ইউপিডিএফের অন্যতম সংগঠক অংগ্য মারমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই ছয়জন আমাদের সদস্য বা কর্মী নয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাছ ধরতে গিয়ে ৫ জেলায় বজ্রপাতে ছয়জনের মৃত্যু, বসতবাড়িতে আগুন
  • জুম্ম ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিত্ব করা ছয়জনই ইউপিডিএফের: পার্বত্য উপদেষ্টা