ফেনীতে বিক্ষোভ সমাবেশে শহীদের মা বললেন, ‘জুলাই সনদের জন্য প্রয়োজনে জীবন দেব’
Published: 1st, July 2025 GMT
‘জুলাই অভ্যুত্থানে আমি আমার একমাত্র ছেলে শ্রাবণকে হারিয়েছি। আজ এক বছর হতে চলল, এখনো আমার ছেলে হত্যার বিচার শুরু হয়নি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো জুলাই সনদ ঘোষণা করেনি। ছেলেকে তো আর ফিরে পাব না। প্রয়োজনে আমি রক্ত দেব, তবু জুলাই সনদ আমাদের চাই। স্বজন হারানো সব বাবা-মায়ের দাবি জুলাই সনদ ঘোষণা।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ফেনী শহরের জিরো পয়েন্ট দোয়েল চত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এমন বক্তব্য দেন শহীদ ইশতিয়াক আহমদ শ্রাবণের মা ফাতেমা আক্তার।
‘জুলাই যোদ্ধা ফেনী জেলা’র ব্যানারে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে ‘মার্চ ফর আওয়ার রাইট’ শিরোনামে এ বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বিকেল পৌনে চারটায় শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শহরের খেজুর চত্বর, প্রেসক্লাব, কেন্দ্রীয় বড় মসজিদ, ট্রাংক রোড ঘুরে দোয়েল চত্বরে এসে শেষ হয়। এরপর ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচিতে ‘জুলাই আমার অহংকার’, ‘হয়তো জুলাই সনদ নয়তো মৃত্যু’, ‘নতজানু হয়ে সারা জীবন বাঁচার চেয়ে আমি এখনই মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত’, ‘গন্তব্য এখানে শেষ নয়’সহ নানা স্লোগান–সংবলিত ফেস্টুন প্রদর্শন করেন বিক্ষোভকারীরা।
অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামী ফেনী জেলা শাখার আমির মুফতি আবদুল হান্নান, ইসলামী আন্দোলনের ফেনী জেলা সেক্রেটারি ইকরামুল হক ভূঁইয়া, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সংগঠক আজিজুর রহমান রেজভী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেনী জেলার সংগঠক আবদুল্লাহ আল যোবায়ের, সাবেক সমন্বয়ক মুহাইমিন তাজিম, আবদুল আজিজ প্রমুখসহ নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা বক্তব্য দেন।
বক্তারা অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানান। অন্যথায় ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি ব্যক্ত করেন।
ঘণ্টাব্যাপী চলা অবস্থান কর্মসূচিতে গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত ব্যক্তিদের স্বজন, আহত ব্যক্তি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ল ই সনদ
এছাড়াও পড়ুন:
শুভ জন্মাষ্টমী আজ
অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দুর্বলের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করতে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ—এই বিশ্বাস পোষণ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শ্রীকৃষ্ণের এই আবির্ভাব তিথি শুভ জন্মাষ্টমী হিসেবে উদ্যাপন করা হয়।
সনাতন ধর্মের মানুষ বিশ্বাস করেন, পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। আজ শনিবার শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল শুক্রবার এক বাণীতে তিনি বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আবহমানকাল থেকে এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভরপুর বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আজ সকাল আটটায় দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় শ্রীশ্রী গীতাযজ্ঞ, বেলা তিনটায় ঐতিহাসিক কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিল ও রাতে শ্রীকৃষ্ণপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, রাজধানীর পলাশীর মোড়ে আজ বেলা তিনটায় কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিলের উদ্বোধন করবেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন ও নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. মঈন খান।