বিএনপি করে এমন কেউ যেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য হতে পারবে না
Published: 1st, July 2025 GMT
বিএনপি করে এমন কেউ বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য হতে পারবে না— এমন তো কোনো আইন নেই। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের নবগঠিত কমিটির দিকে তাকালে এমনটিই মনে হয়। মনে হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধা কিন্তু বিএনপি করে, এমন কেউ এই সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের নবগঠিত অ্যাডহক কমিটি নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মো.
সংবাদ সম্মেলনে ইশতিয়াক আজিজ উলফাত বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদে কিছু বিতর্কিত মানুষকে দায়িত্ব দিয়ে দেশের অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অবিচার ও বৈষম্য করে যাচ্ছে, যেভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সংগঠনকে কুক্ষিগত করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের আখড়া বানিয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগ সাড়ে ১৫ বছরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে নিঃশেষ করেছে অভিযোগ করে মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বলেন, এই সংগঠনের মূল কাজ হলো মুক্তিযোদ্ধাদের সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধি, তাঁদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, মর্যাদা রক্ষা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ। পাশাপাশি স্বাধীনতাবিরোধীদের চিহ্নিতকরণও এর একটি অন্যতম কাজ।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান কমিটির অধিকাংশই আওয়ামী দোসর বলে দাবি করেন ইশতিয়াক আজিজ উলফাত। তিনি বলেন, এসব সদস্য গত সাড়ে ১৫ বছরে একবারও ফ্যাসিস্টদের ন্যক্কারজনক অন্যায়ের প্রতিবাদ করেননি। আওয়ামী শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে চাইলে বর্তমান কমিটির অনেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিতেন বলেও অভিযোগ করেন ইশতিয়াক আজিজ উলফাত।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রুনা লায়লার জন্মদিন: সংগীতজীবনের বর্ণময় ৬ দশকের উদ্যাপন
উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ৭৩ বছর পূর্ণ করলেন। একইসঙ্গে পূর্ণ করলেন তার গৌরবময় সংগীত-জীবনের ৬০ বছর। উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সমানতালে গান গেয়ে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন রুনা লায়লা। ১৮টি ভাষায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। ফলে তিনি যে উপমহাদেশের শীর্ষ সংগীতশিল্পীদের একজন—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাংলাদেশের বাংলা গানকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে তার অবদান অনন্য। দেশ-বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অগণিত স্বীকৃতির মাঝে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ তার অর্জনকে আরো মহিমান্বিত করেছে।
আরো পড়ুন:
কনসার্টে গায়ক একনের পরনের প্যান্ট নিয়ে টানাটানি
চতুর্থ সন্তানের মা হলেন কার্ডি বি
ভক্তদের কাছে রুনা লায়লার এবারের জন্মদিনটি বিশেষ। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গানটি প্রকাশ পেয়েছে তার গাওয়া জনপ্রিয় সুফি কাওয়ালি ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’ দিয়ে—যে গানটি বহু বছর আগে তাকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি এনে দিয়েছিল।
তবে জন্মদিন নিয়ে শিল্পীর বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি জানান, পরিবারকে সময় দিয়েই কাটাবেন দিনটি। ঘরোয়া পরিবেশেই উদ্যাপিত হবে জন্মদিন।
১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। সংগীতজীবনের শুরু ষাটের দশকের শেষ দিকে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে। শিল্পী আহমেদ রুশদির গায়কিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সংগীতাঙ্গনে পথচলা শুরু করা এই কণ্ঠশিল্পী দ্রুতই উর্দুভাষী শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গাম মিলা’—এর মতো গান তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
এরপর ভারতেও ছড়িয়ে পড়ে তার কণ্ঠের জাদু। ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ তাকে পরিচিত করে তোলে সাদাকালো যুগেই। পরে সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গে ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ (১৯৮২) অ্যালবাম তাকে বিশ্বব্যাপী নতুন আরেক পরিচিতির শিখরে পৌঁছে দেয়।
যদিও তিন দেশে সাফল্য পেয়েছেন, রুনা লায়লার সংগীতজীবনের মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ। ‘দ্য রেইন’ (১৯৭৬), ‘জাদুর বাঁশি’ (১৯৭৭), ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪)—সহ মোট সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ গায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন। ‘সাধের লাউ বানাইলা মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িতে গেলাম’—এর মতো বাংলা লোকগান তার কণ্ঠে নতুন প্রাণ পেয়েছে।
দীর্ঘ ও সফল এই যাত্রায় মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি—এ কথা প্রায়ই উল্লেখ করেন রুনা লায়লা। তিনি বলেন, “মা আমাকে প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। ছোটবেলায় গান গাইতে গেলে মা সবসময় সঙ্গে যেতেন।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত