বিএনপি করে এমন কেউ বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য হতে পারবে না— এমন তো কোনো আইন নেই। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের নবগঠিত কমিটির দিকে তাকালে এমনটিই মনে হয়। মনে হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধা কিন্তু বিএনপি করে, এমন কেউ এই সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের নবগঠিত অ্যাডহক কমিটি নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মো.

নঈম জাহাঙ্গীরকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যের অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ২৪ জুন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবে এ কমিটি।

সংবাদ সম্মেলনে ইশতিয়াক আজিজ উলফাত বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদে কিছু বিতর্কিত মানুষকে দায়িত্ব দিয়ে দেশের অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অবিচার ও বৈষম্য করে যাচ্ছে, যেভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সংগঠনকে কুক্ষিগত করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের আখড়া বানিয়েছিলেন।

আওয়ামী লীগ সাড়ে ১৫ বছরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে নিঃশেষ করেছে অভিযোগ করে মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বলেন, এই সংগঠনের মূল কাজ হলো মুক্তিযোদ্ধাদের সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধি, তাঁদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, মর্যাদা রক্ষা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ। পাশাপাশি স্বাধীনতাবিরোধীদের চিহ্নিতকরণও এর একটি অন্যতম কাজ।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান কমিটির অধিকাংশই আওয়ামী দোসর বলে দাবি করেন ইশতিয়াক আজিজ উলফাত। তিনি বলেন, এসব সদস্য গত সাড়ে ১৫ বছরে একবারও ফ্যাসিস্টদের ন্যক্কারজনক অন্যায়ের প্রতিবাদ করেননি। আওয়ামী শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে চাইলে বর্তমান কমিটির অনেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিতেন বলেও অভিযোগ করেন ইশতিয়াক আজিজ উলফাত।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কম ট র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

শুভ জন্মাষ্টমী আজ

অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দুর্বলের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করতে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ—এই বিশ্বাস পোষণ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শ্রীকৃষ্ণের এই আবির্ভাব তিথি শুভ জন্মাষ্টমী হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়।

সনাতন ধর্মের মানুষ বিশ্বাস করেন, পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। আজ শনিবার শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল শুক্রবার এক বাণীতে তিনি বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আবহমানকাল থেকে এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভরপুর বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আজ সকাল আটটায় দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় শ্রীশ্রী গীতাযজ্ঞ, বেলা তিনটায় ঐতিহাসিক কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিল ও রাতে শ্রীকৃষ্ণপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, রাজধানীর পলাশীর মোড়ে আজ বেলা তিনটায় কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিলের উদ্বোধন করবেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন ও নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. মঈন খান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ