জাবির গণিত বিভাগের ভবন নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরুর দাবি শিক্ষার্থীদের
Published: 1st, July 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণে বারবার বাধা সৃষ্টির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞানের অনুষদের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। এ সময় শ্রেণিকক্ষ সংকট নিরসনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছে তারা।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের জন্য একটি ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। তৎকালীন উপাচার্য পদার্থবিজ্ঞান ভবনের দক্ষিণ পাশে এ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের অজুহাতে একটি পক্ষ কাজ বন্ধ করে দেয়। ভবিষ্যৎ পরিবেশগত ঝুঁকি পর্যালোচনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নতুন করে প্রকৌশলী, স্থপতি, পরিবেশবিদ, জীববিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী, দার্শনিকসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠন করে টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটি (টিএমসি)।
আরো পড়ুন:
খুবিতে নবীনদের বরণে ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন
হাবিপ্রবিসাসের অফিসে ছাত্রদলের হামলা, বিচার দাবি চবিসাসের
তারা আরো বলেন, কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন ও পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন শেষে গত বছর ৯ ডিসেম্বর পদার্থবিজ্ঞান ভবনের পশ্চিম পাশের উন্মুক্ত জায়গাটিকে ভবন নির্মাণের জন্য সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব ও উপযোগী হিসেবে চিহ্নিত করে। এরপর নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করতে গেলে আবারো বাধা দেয় একটি পক্ষ।
তারা উল্লেখ করেন, পরবর্তীতে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় উপাচার্য সব অংশীজনদের নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা আহ্বান করেন। সভায় ভবন নির্মাণে কোনো পরিবেশগত বাধা নেই মর্মে একটি বায়োডাইভার্সিটি ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট (বিআইএ) কমিটি গঠন করা হয়। বিআইএ কমিটিও সব নিয়ম অনুসরণ করে ভবন নির্মাণের সুপারিশ করে।
কিন্তু তারপরও ভবনের নির্মাণকাজ শুরু না করে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় কর্তৃক অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকল্পের সব নিয়মতান্ত্রিক বিষয় উপস্থাপন করায় ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
এরই অংশ হিসেবে গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করার জন্য ‘গণিত সংসদ’ কর্তৃক ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ জানানো হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ শুরু করলে একটি পক্ষ কাজে বাধা প্রদান করেন এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ভিন্ন আঙ্গিকে প্রচার করে।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভবন ন র ম ণ ও পদ র থ ব পর ব শ ভবন র
এছাড়াও পড়ুন:
তদন্ত ছাড়াই সাংবাদিককে মামলায় জড়ালো পুলিশ
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কটকস্থল এলাকায় জমি বিরোধের জেরে দুইপক্ষের দ্বন্ধের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে চাঁদাবাজি মামলার আসামি হয়েছেন মোল্লা ফারুক হাসান নামে এক সাংবাদিক।
তবে থানা পুলিশ অভিযোগের তদন্ত না করেই মামলাটি এজাহারভূক্ত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আরো পড়ুন:
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতিকে নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ
‘সিভিক ডিফেন্ডারস অব বাংলাদেশ’ ওয়েব পোর্টাল উদ্বোধন
ভুক্তভোগী মোল্লা ফারুক হাসান গৌরনদী প্রেসক্লাবের সদস্য ও দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকা এবং সময়ের কন্ঠস্বর অনলাইন নিউজ পোর্টালের স্থানীয় প্রতিনিধি।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে ভুক্তভোগী মোল্লা ফারুক হাসান অভিযোগ করে বলেন, “গত কয়েকদিন আগে কটকস্থল বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন আরিফ ফিলিং স্টেশনের সামনে স্থানীয় হারুন-অর রশিদ বেপারী ও মো. হিরা মাঝি গংদের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন থানা পুলিশ। এরপর সেখানে আমি সংবাদ সংগ্রহের জন্য যাই। পরবর্তীতে পুরো ঘটনা নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।”
তিনি বলেন, “ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হারুন-অর রশিদ বেপারী তার প্রতিপক্ষ মো. হিরা মাঝিসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। সংবাদ প্রকাশের জেরে ওই অভিযোগের মধ্যে আমার নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারনে থানা পুলিশ ওই অভিযোগের কোনো তদন্ত না করেই আমাকে আসামি করে ফিলিং স্টেশনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে এজাহারভূক্ত করেন।”
তিনি আরো বলেন, “যেখানে সাধারণত হুমকি-ধামকির বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে আগে তদন্ত প্রসঙ্গটি উত্থাপণ করে থানা পুলিশ। সেখানে ঘটনার সময় থানা পুলিশ ওই ফিলিং স্টেশনে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও মনগড়াভাবে হামলা, ভাঙচুর ও চাঁদা দাবির লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তদন্ত ছাড়া তড়িঘড়ি করে আমাকে জড়িয়ে মামলা দায়ের হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ রহস্যজনক।” মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে তিনি (সাংবাদিক) সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে মামলার বাদি হারুন-অর রশিদ বেপারীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সাংবাদিককে আসামি করার বিষয়ে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, “একটা মামলা হয়েছে। এখন তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরনদী সার্কেল) শারমিন সুলতানা রাখি বলেন, “পেট্রোল পাম্প নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষ সংবাদকর্মীদের দিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে এবং গৌরনদী থানার ওসির বিরুদ্ধে মিথ্যা মনগড়া সংবাদ প্রকাশিত করিয়েছে। একটি পক্ষ ওই ঘটনা নিয়ে প্রথমে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটির এজাহার দায়ের করা হয়।”
তিনি বলেন, “তদন্ত করার আগেই বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসার কারণে মামলাটি এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। মামলার আসামিদের মধ্যে এক সাংবাদিক রয়েছে বলে জানা গেছে। সাংবাদিক মোল্লা ফারুক যদি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকে, তাহলে তার কিছুই হবে না।”
তিনি আরো বলেন, “ওই সাংবাদিক (মোল্লা ফারুক) আমার কাছে এসেছিল। তাকে আমি বলেছি, আপনি যদি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকেন, তাহলে আপনাকে পুলিশ খোঁজবেও না, আপনি নিশ্চিত থাকেন।”
অপরদিকে, তদন্ত ছাড়া গৌরনদী প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিক মোল্লা ফারুক হাসানকে মামলায় আসামি করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর ও বরিশাল সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি নিকুঞ্জ বালা পলাশ, সাধারণ সম্পাদক শাহিন হাসানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা। তারা অনতিবিলম্বে ওই সাংবাদিককে মামলা থেকে অব্যাহতি ও দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি করেছেন।
এছাড়াও পৃথক বিবৃতিতে একই দাবি করেছেন বাংলাদেশ গ্রামীণ সাংবাদিক সংগঠন, গৌরনদী প্রেসক্লাব, কালকিনি সাংবাদিক ফোরাম, আগৈলঝাড়া প্রেসক্লাব ও রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতৃবৃন্দরা।
ঢাকা/পলাশ/মেহেদী