রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় এক গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল শনিবার এ ঘটনা ঘটেছে। গৃহবধূর অভিযোগ, তাঁর স্বামীর পরিবারের সদস্যরা তাঁকে নির্যাতন করেছে।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর নাম শেফালী বেগম। তিনি পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের নিজতাজ গ্রামে বাস করেন।

শেফালী অভিযোগ করেন, ২০১৪ সালে পার্শ্ববর্তী তৈয়ব গ্রামের প্রবাসী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। নজরুল তাঁর খোঁজ-খবর ঠিকমতো রাখতেন না। সম্প্রতি নজরুল বাড়িতে এলেও তাঁর খোঁজ নেননি। একপর্যায়ে শেফালী লোকমুখে জানতে পারেন, তাঁকে তালাক দিয়েছেন নজরুল।

শেফালী বলেন, শনিবার ভোরে তিনি তালাকের কাগজপত্র চাইতে নজরুলের বাড়িতে যান। তখন তাঁকে বাড়ির বাইরে সুপারিগাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করা হয়। এতে তাঁর স্বামী নজরুল, চাচাতো ভাই বক্কর, বোন জামাই মঞ্জু এবং প্রতিবেশী কাশিম ও ইয়াসিন জড়িত ছিলেন।

অন্যদিকে, নজরুল দাবি করেছেন, তিনি শেফালীকে তালাক দিয়েছেন। সেই রাতে তাঁর ঘরের পেছনে তাকে বেঁধে রাখা হয়। মারধরের অভিযোগ মিথ্যা।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শাহীন মির্জা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনা জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা গৃহবধূকে উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠাই। আমরা স্থানীয়ভাবে আপস-মীমাংসার চেষ্টা করছি।’ তবে গৃহবধূ অভিযোগ করছেন, আপস-মীমাংসার কথা বলে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে।

মাহীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘ঘটনাটি পুলিশের নজরে এসেছে। ওই নারী থানায় আসতে আগ্রহী নন। আমরা ব্যবস্থা নিতে তাঁকে লোক মারফত থানায় ডেকেছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ হবধ নজর ল

এছাড়াও পড়ুন:

আমি ব্যর্থ হয়েছি: বাঁধন

কখনো পরিবার, কখনো সমাজ—সবাই চেয়েছে তাকে নির্দিষ্ট ছাঁচে ঢালতে। কিন্তু বাঁধন ভেঙেছেন সেই ছাঁচ। হ্যাঁ, তিনি ব্যর্থ হয়েছেন ‘প্রত্যাশিত নারী’ হতে, অথচ সেই ব্যর্থতাকেই এখন মনে করছেন জীবনের বড় সাফল্য। 

রবিবার (৫ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে নিজেকে ‘সমাজ আর একজন অস্বস্তিকর নারী’ আখ্যায়িত করেছেন বাঁধন। সেখানে তিনি খোলামেলা স্বীকার করেছেন নিজের ব্যর্থতার কথাও। 

আরো পড়ুন:

আলোচনায় নুহাশ হুমায়ূনের ফেসবুক পোস্ট

বাগদানের পরও রাশমিকার প্রথম বিয়ে কেন ভেঙেছিল?

বাঁধন লিখেছেন, “আমি এমন একজন মেয়ে হতে চেয়েছিলাম, যে সবাইকে খুশি রাখবে। অনুগত, বাধ্য, শান্তভাবে মানিয়ে নেওয়া মেয়ে। কিন্তু আমি পারিনি। আমি ব্যর্থ হয়েছি। চেষ্টা করেছিলাম পরিবারের প্রত্যাশিত মেয়ে হতে, সমাজের বানানো ‘নারী’ হয়ে বাঁচতে। কিন্তু পারিনি। আর আজ, সেই ব্যর্থতার জন্যই আমি নিজেকে ধন্যবাদ জানাই।” 

ব্যর্থতার ব্যাখ্যা দিয়ে এ অভিনেত্রী লেখেন, “আমি অন্য কারো স্ক্রিপ্টে বাঁচার জন্য জন্মাইনি। আমার কথা হয়তো অনেকের কাছে অস্বস্তিকর, আমার কাজ হয়তো অনেকের স্বস্তি ভেঙে দেয়। আমি সহজ নই, কিন্তু নির্মমও নই। আমি কাউকে আঘাত করি না, অসম্মানও করি না—যদিও অনেকেই আমার প্রতি তা করে।” 

কয়েক দিন পরই ৪২ বছরে পা দেবেন এই অভিনেত্রী। বয়সের এ পর্যায়ে তিনি খুঁজে পেয়েছেন ভেতরের শান্তি। বাঁধনের ভাষায়, “চল্লিশের পর আমি নিজের সঙ্গে শান্তিতে আছি। এখন আমি বাঁচি আমার মতো করে—স্বাধীনভাবে, সৎভাবে, বিনা ক্ষমাপ্রার্থনায়। কেউ কষ্ট পেলে উপেক্ষা করুক, ব্লক করুক, ঘৃণা করুক—আমার কিছু যায় আসে না। কারণ, যত মানুষ আমাকে অস্বস্তিতে ফেলে, তার চেয়েও অনেক বেশি মানুষ আমাকে ভালোবাসে, বোঝে, আমার সত্যে শক্তি খুঁজে পায়। আর সবচেয়ে বড় কথা—আমি নিজেকে ভালোবাসি।” 

তার পোস্টের শেষ লাইনগুলোতে উঠে এসেছে আত্মসম্মান আর আত্মবিশ্বাসের এক দৃঢ় উচ্চারণ, “আমি ভাঙা নই। আমি শুধু এমন এক পৃথিবীর কাছে অস্বস্তিকর, যে পৃথিবী এখনো আসল নারীকে ভয় পায়। ভালোবাসি তোমায়, আজমেরী হক বাঁধন। তুমি যে নারী হতে চেয়েছিলে, শেষ পর্যন্ত তুমি সেই নারীই হয়েছো।”

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ