Prothomalo:
2025-12-03@23:19:57 GMT

অর্থনীতি ও জনজীবনে অশনিসংকেত

Published: 14th, January 2025 GMT

যেখানে দেশে গ্যাসের চাহিদা দিনে ৩৮০ কোটি ঘনফুট, সেখানে ২৫০ কোটি ঘনফুট দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তারপরও অন্তর্বর্তী সরকার জোড়াতালি দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চালাচ্ছে, যদিও তার সফলতা নিয়ে সংশয় আছে।

মানুষ এখন দ্বিমুখী সংকটে আছে। একদিকে গ্যাসের সরবরাহ কম, অন্যদিকে নতুন শিল্পকারখানায় দাম দ্বিগুণের বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে। এটি বৈষম্যমূলক প্রস্তাব। পুরোনো শিল্পের সঙ্গে নতুন শিল্প প্রতিযোগিতা করতে পারবে না। এতে বিনিয়োগে উৎসাহ কমে যাবে। ইতিমধ্যে সরকার যে ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর বাড়িয়ে দিয়েছে, তা জনজীবনে প্রভাব ফেলবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম আগে থেকেই চড়া ছিল, ভ্যাট বাড়ানোর পর আরও অনেক পণ্য ও সেবার দাম বেড়ে যাবে।

মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, মিরপুর, কলাবাগান, উত্তরাসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিয়মিত গ্যাস সরবরাহ নেই। দিনে গ্যাস না থাকায় অনেক স্থানে রান্নার চুলা জ্বালাতে রাতের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।

গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের শিল্পাঞ্চলেও গ্যাসের চাপ কম। সাধারণত ১০ থেকে ১৫ পিএসআই (প্রতি বর্গইঞ্চি) চাপে গ্যাস সরবরাহ করা হয় শিল্পকারখানায়। এবার গ্যাসের সরবরাহ কম থাকায় কারখানা গ্যাস পাচ্ছে ১ থেকে ২ পিএসআই চাপে। গত রোববার গাজীপুরে ৬০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হয়েছে ৪০ কোটি ঘনফুট। নারায়ণগঞ্জেও চাহিদামতো গ্যাস পায়নি তিতাস। ফলে রপ্তানিশিল্প এলাকা হিসেবে পরিচিত নারায়গঞ্জ ও গাজীপুরের কারখানাগুলোর উৎপাদনও কমে গেছে। কোথাও কোথাও রেশনিং করে কারখানা চালু রাখতে হচ্ছে।

অদূর ভবিষ্যতে গ্যাস–সংকট কাটার সম্ভাবনা নেই বলে স্বীকার করেছেন জ্বালানি ও খনিজ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামও। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘চাইলেই চট করে গ্যাসের সংকট সমাধান করা যাবে না। দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন কমার পাশাপাশি বাইরে থেকে আমদানির সক্ষমতাও সীমিত।’

অস্বীকার করার উপায় নেই যে আওয়ামী লীগ সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই গ্যাস–সংকট বেড়েছে। তারা গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের চেয়ে বিদেশ থেকে তরলীকৃত গ্যাস আমদানির ওপর জোর দিয়েছিল। এর পেছনে কমিশন বাণিজ্যও ছিল। কিন্তু উত্তরণের পথ তো বের করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক দরপত্রের সময় বাড়িয়ে উন্মুক্ত করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এই প্রেক্ষাপটে সরকার দ্বিতীয়বার দরপত্র আহ্বানের উদ্যোগ নিয়েছে। এটি ইতিবাচক হলেও সময়সাপেক্ষ।

সে ক্ষেত্রে সরকারকে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানের পাশাপাশি তরল গ্যাস আমদানির পরিমাণও বাড়াতে হবে। চালু গ্যাসক্ষেত্র থেকে আরও বেশি গ্যাস উত্তোলন করা যায় কি না, সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে। ভোলার গ্যাস দেশের অন্যান্য স্থানে এলএনজির মাধ্যমে সরবরাহের কাজটিও জোরদার করা প্রয়োজন।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জ্বালানি খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। বর্তমান সরকার লোপাটকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাকে স্বাগত জানাই। সেই সঙ্গে আমরা এ–ও আশা করি যে গ্যাস খাতের দুর্নীতির ছিদ্রগুলো বন্ধে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। খোঁজ নিলে দেখা যাবে এখনো বিভিন্ন স্থানে গ্যাসের অনেক অবৈধ সংযোগ আছে, যা থেকে রাষ্ট্র কোনো অর্থ না পেলেও ফায়দা নিয়ে যায় দুর্নীতিবাজেরা।

সরকারের নীতিনির্ধারকদের বুঝতে হবে, গ্যাস–বিদ্যুতের সংকট জিইয়ে রেখে অর্থনীতির চাকা সচল রাখা যাবে না। রেশনিং পদ্ধতিতে কারখানা চালু রাখতে হলে মালিকের ব্যয় যেমন বাড়ে, তেমনি উৎপাদিত পণ্যের দামও বেশি পড়বে।

দেশবাসী অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে একটি বাস্তবমুখী নীতি–পরিকল্পনা এবং এর যথাযথ বাস্তবায়ন আশা করে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিযুদ্ধের সরল গল্পের বাইরের গল্প

মুক্তিযুদ্ধের সরল গল্পটি হলো: একাত্তরের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় বাঙালি নিধন। একই সময় শুরু হয় বাঙালির প্রতিরোধযুদ্ধ। সামরিক বাহিনী, আধা সামরিক বাহিনী—ইপিআর এবং পুলিশের বাঙালি সদস্যরা প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তখন থেকেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরিচিতি হয় দখলদার বাহিনী হিসেবে।

পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতার হাত থেকে বাঁচতে প্রাণের ভয়ে মানুষ ছোটে শহর থেকে গ্রামে, সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব ভারতে গিয়ে স্বাধীন বাংলার প্রবাসী সরকার গঠন করেন। এ সরকারের নেতৃত্বে চলে মুক্তিযুদ্ধ।

নভেম্বরের শেষ দিকে ভারতের সামরিক বাহিনী এই যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ে। ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ কমান্ডের অধিনায়ক ভারতীয় জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে পাকিস্তানি বাহিনী নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে। বাংলাদেশ দখলদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয়। বাংলাদেশ এ দিনটি বিজয় দিবস হিসেবে উদ্‌যাপন করে।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধে সর্বস্তরের বাঙালি এককাট্টা হয়েছিল। গঠন করা হয়েছিল মুক্তিবাহিনী। নভেম্বর পর্যন্ত মুক্তিবাহিনীর কর্মকাণ্ড ছিল পাকিস্তানি বাহিনীকে ব্যতিব্যস্ত রাখা, চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে তাদের সরবরাহ লাইন বিচ্ছিন্ন করা এবং নানান তৎপরতা চালিয়ে পাকিস্তানিদের সীমাবদ্ধ কিছু জায়গায় আটকে রাখা। দেখা গেছে, তখন শহরগুলো ছিল অবরুদ্ধ, গ্রামগুলো ছিল মুক্ত। গ্রাম ছিল মুক্তিবাহিনীর অবাধ বিচরণক্ষেত্র।

শুরু থেকেই ভারত এই যুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে ছিল। ভারতের ছিল নিজস্ব পরিকল্পনা ও রণকৌশল। পাকিস্তান সব সময় অভিযোগ করে আসছিল যে ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করে তার পূর্বাঞ্চল দখল করে নিতে চাচ্ছে। তাদের প্রধান অভিযোগ ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বিরুদ্ধে। এটা সত্য যে বাংলাদেশ সরকার এবং মুক্তিবাহিনী এপ্রিল মাস থেকেই ভারতের কাছ থেকে সব ধরনের নৈতিক, আর্থিক ও সামরিক সাহায্য পেয়ে আসছিল।

একাত্তরের ১ ডিসেম্বর নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এর শিরোনাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান থেকে পাকিস্তানি বাহিনীকে বিতাড়িত করাই ইন্দিরার লক্ষ্য’। প্রতিবেদনে বলা হয়, জেনারেলদের সমর্থনে মিসেস ইন্দিরা গান্ধী সামরিক–পদ্ধতিতে পূর্ব পাকিস্তান থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে তাড়াতে চান। তবে তাঁর এই কর্মপন্থা সর্বাত্মক যুদ্ধের রূপ নেবে না। এটা স্বল্পমাত্রায় থাকবে।

পত্রিকাটির নয়াদিল্লির প্রতিনিধির পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ভারত সরকারিভাবে বলছে, ভারতীয় বাহিনী পূর্ব পাকিস্তান সীমান্ত বরাবর শুধু আত্মরক্ষামূলক কাজে নিয়োজিত। তবে পদস্থ ভারতীয় কর্মকর্তারা এ কথা অস্বীকার করেননি যে মুক্তিবাহিনীকে তৎপরতা চালানোর সুযোগ দিতেই ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নজর অন্যদিকে সরিয়ে নিয়ে তাদের ওপর আক্রমণাত্মক অভিযান চালিয়ে হয়রানি করছে। কয়েকটি সেক্টরে ভারতীয় বাহিনী গেরিলাদের সক্রিয়ভাবে সাহায্য করছে। মুক্তিবাহিনীকে আশ্রয় ও ট্রেনিং দেওয়া এবং অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে ভারত পূর্ব পাকিস্তান পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়ে। গত কয়েক সপ্তাহে গেরিলাদের বেশি বেশি অস্ত্র সরবরাহ করা ছাড়াও

কামান ও মর্টারের গোলাবর্ষণের আড়ালে ভারতীয় বাহিনী তাদের বাস্তব সমর্থন দিয়েছে। তা ছাড়া স্বল্প সময়ে আঘাত হেনে তারা পূর্ব পাকিস্তানে ঢুকে পড়ে। গত সপ্তাহে তারা আরও সক্রিয় হয়।’

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আন্তর্জাতিকীকরণ হয়েছে শুরু থেকেই। একদিকে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও তাদের মিত্ররা পাকিস্তানের পক্ষে থাকে। অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও তার মিত্ররা বাংলাদেশ আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল থেকে ভারতকে সাহায্য দিয়ে যাচ্ছে। মুসলিম দেশগুলো ওপরে ওপরে ছিল পাকিস্তানের পক্ষে। ইসলামি ঐক্য সংস্থার কেন্দ্রীয় পরিষদ জাকার্তায় একটি বৈঠকে বসেছিল। সংস্থার নেতারা ভারত ও পাকিস্তানের অখণ্ডতার প্রতি সমর্থন জানিয়ে তাদের বিরোধের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করার জন্য জাতিসংঘ ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের প্রতি আহ্বান জানান।

ভারতীয় সেনারা পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে পড়েছে—এ রকম একটি খবরের পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামি ঐক্য সংস্থা পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের অবনতিতে উদ্বেগ জানায়। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলে, পাকিস্তান ও ভারত সরকার পূর্ব পাকিস্তান সমস্যার প্রশ্নে একটি সমাধানে পৌঁছাতে সব রকমের চেষ্টা করবে। বিবৃতিতে আশঙ্কা জানিয়ে বলা হয়, পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে উভয় দেশের মধ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষ বেধে যেতে পারে।

মরক্কোর বাদশাহ হাসান ২৪টি মুসলিম দেশের সরকারপ্রধানের কাছে এক জরুরি বার্তায় পাকিস্তান-ভারত বিরোধ মীমাংসার ব্যাপারে নিজেদের প্রভাব খাটানোর আবেদন জানান। এদিকে মরক্কোর বিরোধীদলীয় ফ্রন্ট এক বিবৃতিতে ভারত সরকারের নীতি এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের নিন্দা জানায় এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, কোনো ন্যায়সংগত কারণ ছাড়াই পাকিস্তান ভারতের শিকারে পরিণত হয়েছে।

একাত্তরের ১ ডিসেম্বর ইত্তেফাক–এ পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের একটি সাক্ষাৎকার ছাপা হয়। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘অবস্থা দেখে মনে হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধী বেআইনি ঘোষিত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে পূর্ব পাকিস্তানকে গ্রাস করতে চাচ্ছেন। পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাপারে মিসেস গান্ধীর কী করণীয় থাকতে পারে? পূর্ব পাকিস্তান কি ভারতের অংশ? পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ইন্দিরা গান্ধীকে কখনো তাদের বিষয়ে ওকালতি করতে বলেনি। তিনি কেন শেখ মুজিবের পক্ষে কথা বলছেন? যদি কিছুসংখ্যক আওয়ামী লীগার ভারতের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে থাকেন, তার অর্থ এই নয় যে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ইন্দিরাকে তাদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছে। যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সমাধান এবং শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির কথা বলেন, তখন আমি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে উঠি। পাকিস্তানের জনগণ তাদের দেশের পবিত্র ভূমির প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষা করতে সম্পূর্ণ তৈরি। পাকিস্তানের অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য ভারতের বিরুদ্ধে অবিলম্বে জিহাদ ঘোষণা করা উচিত। দাঁত ভাঙা জবাব না দেওয়া হলে ভারত কখনোই উসকানিমূলক তৎপরতা থেকে বিরত হবে না।’

মুক্তিযুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তান পুলিশের অনেক সদস্য কর্মস্থল ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। ঢাকার সামরিক আইন কর্তৃপক্ষ ২২ জন ‘পলাতক’ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সামরিক আইনের আওতায় অভিযোগ আনে। তাঁদের ৭ ডিসেম্বর সকাল আটটার মধ্যে ঢাকার এমপি হোস্টেলে অবস্থিত ৬ নম্বর সেক্টরের উপসামরিক আইন প্রশাসকের সামনে হাজির হতে বলা হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন সারদা পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল আবদুল খালেক, ভাইস প্রিন্সিপাল শৈলেন্দ্র কিশোর চৌধুরী ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার বজলুর রহমান।

রাওয়ালপিন্ডি থেকে এএফপি পরিবেশিত এক খবরে বলা হয়, ভারতীয় বাহিনী ১ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া জেলার দর্শনা এবং সিলেট জেলার শমসেরনগরে হামলা চালিয়েছে। দুটি হামলাই পর্যুদস্ত করা হয়েছে।

গোটা বিশ্ব জেনে যায়, পাকিস্তান আর ভারতের মধ্যে যুদ্ধ বেধে যাচ্ছে। ওয়াশিংটন থেকে রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ভারতে অস্ত্রের চালানের লাইসেন্স স্থগিত করেছে। ভারতীয় বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে যুদ্ধ করার জন্য সীমান্ত অতিক্রম করায় এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ২৫ মার্চ রাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁকে (পশ্চিম) পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। কারাগারের ভেতরেই তাঁর বিচারের জন্য বসে বিশেষ সামরিক আদালত। ১ ডিসেম্বর রাওয়ালপিন্ডি থেকে পিপি পরিবেশিত এক খবরে জনৈক সরকারি মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, বিলুপ্ত আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার এখনো শেষ হয়নি।

এদিকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাটকীয় পালাবদল চলছিল। প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি শিগগিরই একটি বেসামরিক সরকার গঠন করবেন। এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। দুজন এমপিসহ পাকিস্তান পিপলস পার্টির পাঁচজন সদস্য জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। তাঁরা বলেন, জামায়াতের আমির মাওলানা মওদুদী পাকিস্তান সৃষ্টির বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। জামায়াতের প্রচারপত্রেই এর প্রমাণ আছে।

মহিউদ্দিন আহমদ লেখক ও গবেষক

* মতামত লেখকের নিজস্ব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কারকাজ শেষে হবিগঞ্জ-৫নং কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহ বেড়েছে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট
  • সাভারে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার চার ছাত্র
  • সরকারকে না জানিয়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা : বাণিজ্য উপদেষ্টা
  • জামালপুরে সারের দাবিতে কৃষকদের সড়ক অবরোধ
  • নারায়ণগঞ্জে পানি সরবরাহ খাতে আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন 
  • ছাত্র সংসদ নির্বাচন হঠাৎ স্থগিত, উপাচার্যের দপ্তরের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান  
  • সরকার কড়াইল বস্তির বাসিন্দাদের অধিকারের তোয়াক্কা করছে না: জোনায়েদ সাকি
  • মুক্তিযুদ্ধের সরল গল্পের বাইরের গল্প
  • আলোচিত রায়হান হত্যার রায় ৭ জানুয়ারি
  • এবার পদ্মা ও মেঘনা কোম্পানিতে ডিজেল ‘গায়েব’, দেড় লাখ লিটার গেল কোথায়