Prothomalo:
2025-12-10@03:51:49 GMT

অর্থনীতি ও জনজীবনে অশনিসংকেত

Published: 14th, January 2025 GMT

যেখানে দেশে গ্যাসের চাহিদা দিনে ৩৮০ কোটি ঘনফুট, সেখানে ২৫০ কোটি ঘনফুট দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তারপরও অন্তর্বর্তী সরকার জোড়াতালি দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চালাচ্ছে, যদিও তার সফলতা নিয়ে সংশয় আছে।

মানুষ এখন দ্বিমুখী সংকটে আছে। একদিকে গ্যাসের সরবরাহ কম, অন্যদিকে নতুন শিল্পকারখানায় দাম দ্বিগুণের বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে। এটি বৈষম্যমূলক প্রস্তাব। পুরোনো শিল্পের সঙ্গে নতুন শিল্প প্রতিযোগিতা করতে পারবে না। এতে বিনিয়োগে উৎসাহ কমে যাবে। ইতিমধ্যে সরকার যে ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর বাড়িয়ে দিয়েছে, তা জনজীবনে প্রভাব ফেলবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম আগে থেকেই চড়া ছিল, ভ্যাট বাড়ানোর পর আরও অনেক পণ্য ও সেবার দাম বেড়ে যাবে।

মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, মিরপুর, কলাবাগান, উত্তরাসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিয়মিত গ্যাস সরবরাহ নেই। দিনে গ্যাস না থাকায় অনেক স্থানে রান্নার চুলা জ্বালাতে রাতের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।

গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের শিল্পাঞ্চলেও গ্যাসের চাপ কম। সাধারণত ১০ থেকে ১৫ পিএসআই (প্রতি বর্গইঞ্চি) চাপে গ্যাস সরবরাহ করা হয় শিল্পকারখানায়। এবার গ্যাসের সরবরাহ কম থাকায় কারখানা গ্যাস পাচ্ছে ১ থেকে ২ পিএসআই চাপে। গত রোববার গাজীপুরে ৬০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হয়েছে ৪০ কোটি ঘনফুট। নারায়ণগঞ্জেও চাহিদামতো গ্যাস পায়নি তিতাস। ফলে রপ্তানিশিল্প এলাকা হিসেবে পরিচিত নারায়গঞ্জ ও গাজীপুরের কারখানাগুলোর উৎপাদনও কমে গেছে। কোথাও কোথাও রেশনিং করে কারখানা চালু রাখতে হচ্ছে।

অদূর ভবিষ্যতে গ্যাস–সংকট কাটার সম্ভাবনা নেই বলে স্বীকার করেছেন জ্বালানি ও খনিজ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামও। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘চাইলেই চট করে গ্যাসের সংকট সমাধান করা যাবে না। দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন কমার পাশাপাশি বাইরে থেকে আমদানির সক্ষমতাও সীমিত।’

অস্বীকার করার উপায় নেই যে আওয়ামী লীগ সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই গ্যাস–সংকট বেড়েছে। তারা গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের চেয়ে বিদেশ থেকে তরলীকৃত গ্যাস আমদানির ওপর জোর দিয়েছিল। এর পেছনে কমিশন বাণিজ্যও ছিল। কিন্তু উত্তরণের পথ তো বের করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক দরপত্রের সময় বাড়িয়ে উন্মুক্ত করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এই প্রেক্ষাপটে সরকার দ্বিতীয়বার দরপত্র আহ্বানের উদ্যোগ নিয়েছে। এটি ইতিবাচক হলেও সময়সাপেক্ষ।

সে ক্ষেত্রে সরকারকে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানের পাশাপাশি তরল গ্যাস আমদানির পরিমাণও বাড়াতে হবে। চালু গ্যাসক্ষেত্র থেকে আরও বেশি গ্যাস উত্তোলন করা যায় কি না, সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে। ভোলার গ্যাস দেশের অন্যান্য স্থানে এলএনজির মাধ্যমে সরবরাহের কাজটিও জোরদার করা প্রয়োজন।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জ্বালানি খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। বর্তমান সরকার লোপাটকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাকে স্বাগত জানাই। সেই সঙ্গে আমরা এ–ও আশা করি যে গ্যাস খাতের দুর্নীতির ছিদ্রগুলো বন্ধে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। খোঁজ নিলে দেখা যাবে এখনো বিভিন্ন স্থানে গ্যাসের অনেক অবৈধ সংযোগ আছে, যা থেকে রাষ্ট্র কোনো অর্থ না পেলেও ফায়দা নিয়ে যায় দুর্নীতিবাজেরা।

সরকারের নীতিনির্ধারকদের বুঝতে হবে, গ্যাস–বিদ্যুতের সংকট জিইয়ে রেখে অর্থনীতির চাকা সচল রাখা যাবে না। রেশনিং পদ্ধতিতে কারখানা চালু রাখতে হলে মালিকের ব্যয় যেমন বাড়ে, তেমনি উৎপাদিত পণ্যের দামও বেশি পড়বে।

দেশবাসী অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে একটি বাস্তবমুখী নীতি–পরিকল্পনা এবং এর যথাযথ বাস্তবায়ন আশা করে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নোয়াখালীতে গ্যাস সরবরাহের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ 

নোয়াখালী পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে গ্যাস সরবরাহ সচল রাখার দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের নোয়াখালী আঞ্চলিক কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ করেন। এ সময় গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন  অফিসের সামনের সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিযন্ত্রণ করে।   

আরো পড়ুন:

মুন্সীগঞ্জ-৩: বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ

গোপালগঞ্জে পরিবার পরিকল্পনা সহকারীদের কর্মবিরতি

আন্দোলনকারী নাজমুল নাহার, নাজমা আক্তার ও মোজ্জামেল হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে নোয়াখালী পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের গ্রাহকরা নিয়মিত গ্যাস পাচ্ছেন না। ফলে গৃহস্থালির কাজে তারা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন সমাধান মেলেনি। এ কারণে বাধ্য হয়ে আজ তারা সড়ক অবরোধ ও অফিস ঘেরাও করেন। অবরোধের কারণে অফিসংলগ্ন ইসলামিয়া সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। 

বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রবিউশনের জেনারেল ম্যানেজার ইকবাল হোসেন বলেন, ‍“আমরা ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করব। আগামী এক সপ্তাহ সময় নিয়েছি আমরা।”

ঢাকা/সুজন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেটে পুলিশ কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাত: ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
  • রাজশাহীতে ওয়াসার মেগাপ্রকল্পের শ্রমিকদের বিক্ষোভ
  • আসামি ধরতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে সিআইডি কর্মকর্তা আহত
  • কারাবন্দী সাংবাদিকদের মুক্তির আহ্বান জানিয়ে মুহাম্মদ ইউনূসকে সিপিজের চিঠি
  • সিলেটে আসামি ধরতে গিয়ে সিআইডি কর্মকর্তা ছুরিকাহত
  • মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিমের বিরুদ্ধে করা মামলায় কারাগারে শওকত মাহমুদ
  • আমদানি শুরু হওয়ায় চট্টগ্রামে পেঁয়াজের দামে ধস
  • নোয়াখালীতে গ্যাস সরবরাহের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ 
  • বগুড়ায় আসামি ধরতে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাত
  • মাদক কারবারির ছুরিকাঘাতে পুলিশ কর্মকর্তা আহত