নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের লিফলেট বিতরণের অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় কলেজশিক্ষক মুকিব মিয়াসহ পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলামের আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

কারাগারে যাওয়া অন্যরা হলেন— যুবলীগের সদস্য কপিল হালদার সজল, মতিঝিল থানা যুবলীগের সদস্য কেএম সাইফুল খান, ফতুল্লা থানা যুবলীগের সদস্য শেখ মোহাম্মদ হাফিজ ও নিষিদ্ধ সংগঠন হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আব্দুস সালাম লাভলু। 

মুকিব নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি লালমনিরহাটের পাটগ্রামের সরকারি জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের ৩১তম ব্যাচের কর্মকর্তা। 

এদিন তাদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক কেএম রেজাউল করিম। তাদের পক্ষে আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখি জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। 

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে, সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

জানা গেছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগ দাবিতে আসামিরা লিফলেট বিতরণ করেন। তারা লিফলেট বিতরণ, স্লোগান, মিছিল দিয়ে তাদের নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের কার্যক্রমকে গতিশীল করা, সরকার তথা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, রাষ্ট্রের ক্ষতি সাধনের লক্ষে অপপ্রচারের উদ্দেশ্যে জনগণের সম্মুখে কালো আইন বাতিল, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়েছে। ঘটনার দিন আসামিরা সংঘবদ্ধভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের লিফলেট বিতরণ করেছে। এ ঘটনায় গত ২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ। 

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

‘জাতীয়তাবাদী আবেগ’ কাজে লাগানোর কৌশল অনুতিনের

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতকে ঘিরে মাথাচাড়া দেওয়া জাতীয়তাবাদী আবেগকে কাজে লাগিয়ে জনপ্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। গতকাল শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন তিনি। ফলে আগামী বছরের শুরুতেই সেখানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পথ সুগম হলো। আগাম নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী অনুভূতি কাজে লাগানোর কৌশল নিচ্ছেন অনুতিন।

সুদূরপ্রসারী এই রাজনৈতিক পদক্ষেপের আগে চলতি সপ্তাহেই আবারও কম্বোডিয়ার সঙ্গে তীব্র সীমান্ত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে জুলাই মাসে পাঁচ দিন ধরে লড়াইয়ের ঘটনা ঘটেছিল। নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হওয়ায় জাতীয়তাবাদী অনুভূতি প্রবল। অনুতিন চার্নভিরাকুল কৌশলে এ অনুভূতি কাজে লাগাতে চাইছেন।

থাইল্যান্ডের আইন অনুযায়ী, পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ৪৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। সেই হিসাবে আগামী বছরের জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত নৈতিকতা লঙ্ঘনের অভিযোগে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে পদচ্যুত করেন। এরপর ভুমজাইথাই পার্টির নেতা অনুতিন চার্নভিরাকুল দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

সীমান্ত সংঘর্ষ ঘিরে জাতীয়তাবাদের উত্থান—যা নুতিনের ভুমজাইথাই পার্টির জন্য সুফল বয়ে আনতে পারেতিতিপল পাকদেওয়ানিচ, অধ্যাপক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, উবন রাচাথানি বিশ্ববিদ্যালয়

সাধারণ নির্বাচনে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। বিশ্লেষকেরা সতর্ক করে বলছেন, এ পরিস্থিতিতে থাইল্যান্ডে আরও রাজনৈতিক দেনদরবার ও অস্থিরতা বাড়তে পারে।

উবন রাচাথানি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক তিতিপল পাকদেওয়ানিচ বলেন, সীমান্ত সংঘর্ষ ঘিরে জাতীয়তাবাদের উত্থান—যা নুতিনের ভুমজাইথাই পার্টির জন্য সুফল বয়ে আনতে পারে।

উত্তর-পূর্ব থাইল্যান্ডের প্রদেশগুলো ভোটের দিক থেকে ভুমজাইথাই পার্টির শক্ত ঘাঁটি। একই সঙ্গে নুতিনের অন্যান্য অঞ্চলেও শক্তিশালী মিত্র রয়েছে, যারা দেশপ্রেমের এই জোয়ারে ভর করে নিজেদের আসন নিশ্চিত করতে পারে।

তবে সীমান্ত ইস্যু অনুতিনের জনপ্রিয়তাকে আরও বাড়াবে বলে মনে করছেন চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক স্টিথর্ন থানানিথিচট।

ফেউ থাই ও পিপলস পার্টি

গত সেপ্টেম্বর মাসে ৫৯ বছর বয়সী অনুতিনকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পক্ষে সমর্থন দেয় বিরোধী দল পিপলস পার্টি। এর আগে তিনি ফেউ থাই পার্টির নেতৃত্বাধীন শাসক জোট ত্যাগ করেন অনুতিন। বিরোধী দলের প্রস্তাবিত সংবিধান সংশোধন বাস্তবায়নের জন্য পিপলস পার্টির সঙ্গে একটি চুক্তি রাজি হন। তবে গত বৃহস্পতিবার পিপলস পার্টি অনুতিনের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ এনে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়। একই সঙ্গে ফেউ থাই পার্টির সঙ্গেও অনুতিনের দূরত্ব বেড়েছে।

অস্থিরতা বাড়তে পারে

বিশ্লেষকেরা বলছেন, জাতীয়তাবাদী জোয়ার সত্ত্বেও আগামী নির্বাচনে অনুতিন স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন না। এতে আরও রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। অধ্যাপক তিতিপল বলেন, ‘আমি মনে করি না, আমরা ভুমজাইথাই এবং ফেউ থাইয়ের পুনর্মিলনের সম্ভাবনাকে বাতিল করতে পারি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ