আইপিএলে মাঠেই কেন ব্যাট পরীক্ষা করা হচ্ছে
Published: 15th, April 2025 GMT
টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে ব্যাট ও বলের লড়াইয়ে ভারসাম্য নেই। এবার আইপিএল শুরুর আগে কথাটা বলেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসো রাবাদা। এর আগে–পরে বলেছেন আরও অনেকেই। কারণটা প্রায় সবার জানা। টি–টোয়েন্টিতে এখন দলগুলো ২০০ পেরিয়ে ৩০০ রান তোলার চেষ্টায় মত্ত। রাবাদার মতে, এভাবে চলতে থাকলে খেলাটির নাম ‘ক্রিকেট’ পাল্টে ‘ব্যাটিং’ রাখা উচিত।
রাবাদার এ কথা নিশ্চয়ই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কানেও পৌঁছেছে। তাই গত রোববার জয়পুর ও দিল্লিতে আইপিএলের দুটি ম্যাচে দেখা গেছে অন্য রকম এক দৃশ্য। দুটি ম্যাচেই মাঠের আম্পায়াররা ক্রিজে আসা ব্যাটসম্যানদের ব্যাটের আকার পরীক্ষা করেন। আইপিএলের ইতিহাসে এমন কিছু এর আগে দেখা যায়নি। ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, আইপিএলে এবারই প্রথমবারের মতো মাঠের আম্পায়ারদের ম্যাচের মধ্যেই ব্যাটের আকার পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে বিসিসিআই।
আরও পড়ুনচূড়ান্ত হলো ভারতের বাংলাদেশ সফরের সূচি৫ ঘণ্টা আগেব্যাট নিয়মসিদ্ধ আকার অনুযায়ী বানানো হয়েছে কি না, সেটা একটি মাপার বস্তুর মাধ্যমে মাঠেই পরীক্ষা করেন আম্পায়াররা। অতীতে এ পরীক্ষাগুলো ড্রেসিংরুমে করা হতো। কিন্তু রোববার খেলার সময় মাঠেই তা দেখা গেছে। ব্যাটসম্যানদের ব্যাট যদি নিয়ম অনুযায়ী বানানো হয়, তাহলে এ যন্ত্রের সঙ্গে খাপে খাপে মিলে যাবে কিংবা সহজেই এই মাপের মধ্যে প্রবেশ করবে। আকার বড় হলে প্লাস্টিকের এই ত্রিভুজাকৃতির গেজের মধ্যে ব্যাটটি প্রবেশ করবে না কিংবা বাধাপ্রাপ্ত হবে। গেজের গায়ে ব্যাটের নিয়মসিদ্ধ আকারও লেখা আছে—পুরুত্ব ২.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি নির্বাচনে বেশি আসন জিতবে, মত ৬৬% মানুষের
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসনে বিএনপি জয়ী হবে বলে মনে করেন দেশের বেশির ভাগ মানুষ। মানুষের পছন্দের তালিকায় দ্বিতীয় দল হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। অন্যদিকে অর্ধেকের বেশি মানুষ মনে করেন, বিএনপি জয়ী হলে দেশের ভালো হবে। আর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেন, জামায়াতে ইসলামী জিতলে দেশের ভালো হবে।
প্রথম আলোর উদ্যোগে করা এক জরিপে মানুষের এই মতামত উঠে এসেছে। জরিপটি করেছে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কিমেকারস কনসাল্টিং লিমিটেড। জরিপের শিরোনাম, ‘গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়ে জাতীয় জনমত জরিপ ২০২৫’।
কোন দল বেশি আসন পাবেজরিপের প্রশ্নের মধ্যে একটি ছিল, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন দল সবচেয়ে বেশিসংখ্যক আসনে জয়লাভ করবে বলে মনে করেন? সেই দল কত আসন পেতে পারে, সেটি অবশ্য প্রশ্নে ছিল না।
জবাবে প্রায় ৬৬ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, সবচেয়ে বেশি আসনে জয়লাভ করবে বিএনপি। নারী, পুরুষ, নানা বয়স শ্রেণিভেদে প্রায় সবারই কাছাকাছি মত এসেছে। উত্তরদাতাদের প্রায় ২৬ শতাংশের মত, বেশি আসন পাবে জামায়াতে ইসলামী।
স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের পতনের পর গত ৩৫ বছরে বিএনপি তিনবার সরকার গঠন করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনে বিএনপি ১৯৯১ সালে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে। ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আওয়ামী লীগসহ বিরোধীরা বর্জন করে। বিএনপি জয়ী হয়ে সরকার গঠন করলেও তা দেড় মাস টেকে। একই বছরের জুনে আরেকটি নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসে বিএনপি। ২০০১ সালে চারদলীয় জোট হিসেবে ভোটে অংশ নিয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে বিএনপি।
প্রথম আলোর উদ্যোগে করা এক জরিপে মানুষের এই মতামত উঠে এসেছে। জরিপটি করেছে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কিমেকারস কনসাল্টিং লিমিটেড। জরিপের শিরোনাম, ‘গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়ে জাতীয় জনমত জরিপ ২০২৫’।২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ৩০টি আসন পায়। ২০১৪ সালের একতরফা এবং ২০২৪ সালের ‘ডামি ভোট’ নামে পরিচিত বিতর্কিত দুটি নির্বাচন বর্জন করে দলটি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি এবং মাত্র সাতটি আসনে জয় পায়। যদিও ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয় এবং আগের রাতেই ব্যালটে সিল মেরে বাক্সভর্তি করায় তা ‘রাতের ভোট’ নামে পরিচিতি পায়।
অন্যদিকে অতীতে কোনো নির্বাচনেই জামায়াত দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হতে পারেনি। জামায়াত ১৯৯১ সালে ১৮টি এবং ২০০১ সালে ১৭টি আসনে জয়ী হয়, যা এ যাবত তাদের সর্বোচ্চ অর্জন। অবশ্য ২০০১ সালে বিএনপির সঙ্গে জোটগত নির্বাচন করেছিল জামায়াত। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিএনপির সঙ্গে তারা সরকারেরও অংশ হয়। তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজনীতির মাঠে হঠাৎ বড় শক্তি হিসেবে উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর। দলটির ছাত্রসংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। জরিপে দেখা যাচ্ছে, একটি উল্লেখযোগ্য অংশের মানুষ (প্রায় ২৬ শতাংশ) জামায়াত এবার সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হবে বলে মনে করছেন।
প্রায় ৬৬ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, সবচেয়ে বেশি আসনে জয়লাভ করবে বিএনপি। নারী, পুরুষ, নানা বয়স শ্রেণিভেদে প্রায় সবারই কাছাকাছি মত এসেছে। উত্তরদাতাদের প্রায় ২৬ শতাংশের মত, বেশি আসন পাবে জামায়াতে ইসলামী।জরিপে সবচেয়ে বেশি আসনের জয় পাওয়ার বিষয়ের প্রশ্নে ৭ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ আওয়ামী লীগের কথা বলেছেন, যে দলটির কার্যক্রম বর্তমানে নিষিদ্ধ। আর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কথা বলেছেন শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ উত্তরদাতা। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষে মত এসেছে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ উত্তরদাতার।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দলটির নেতাদের বড় অংশ পলাতক রয়েছেন বা বিদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর আগে সরকার সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত ব্যক্তি বা সত্তার (সংগঠন) যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিধান যুক্ত করে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ জারি করেছিল। নির্বাচন কমিশনে দলটির নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে।
আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে গত বছর পতনের আগপর্যন্ত টানা দেশ শাসন করেছে। এর আগে ১৯৯৬ সালেও একবার ক্ষমতায় এসেছিল। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন প্রতিটি নির্বাচনে দলটি ৩০ থেকে ৪৮ শতাংশের মধ্যে ভোট পেয়েছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজনীতির মাঠে হঠাৎ বড় শক্তি হিসেবে উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর। দলটির ছাত্রসংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। জরিপে দেখা যাচ্ছে, একটি উল্লেখযোগ্য অংশের মানুষ (প্রায় ২৬ শতাংশ) জামায়াত এবার সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হবে বলে মনে করছেন।কোন দল সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হতে পারে, সে তালিকায় প্রথম আলোর জরিপে আরও কিছু দলের নাম এসেছে। মাত্র শূন্য দশমিক ১ শতাংশ মানুষ জাতীয় পার্টির (জাপা) নাম বলেছেন। অথচ সর্বশেষ তিনটি সংসদে তারা প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় ছিল। যদিও তারা ‘গৃহপালিত বিরোধী দল’ হিসেবে পরিচিতি পায়। কারণ, ওই নির্বাচনগুলো ছিল বিতর্কিত এবং জাপা ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে সংসদে গেছে।
১৯৯০ সালে গণ-অভ্যুত্থানে এরশাদের পতন হয় এবং তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জাপা ৩৫টি আসন পায়। ১৯৯৬ সালে ৩২ এবং ২০০১ সালে ১৪টি আসনে জয়ী হয় জাপা। সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচনে জাপা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অংশ হয়ে ভোট করে ২৭টি আসনে জয়ী হয়।
জরিপে সবচেয়ে বেশি আসনের জয় পাওয়ার বিষয়ের প্রশ্নে ৭ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ আওয়ামী লীগের কথা বলেছেন, যে দলটির কার্যক্রম বর্তমানে নিষিদ্ধ। আর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কথা বলেছেন শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ উত্তরদাতা। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষে মত এসেছে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ উত্তরদাতার।কোন দল জয়ী হলে দেশের ভালো হবেজরিপের আরেকটি প্রশ্ন ছিল, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন দল জয়ী হলে দেশের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে বলে মনে করেন? উত্তরে বিএনপির পক্ষে মত দিয়েছেন সাড়ে ৫৭ শতাংশ মানুষ।
জরিপে অংশ নেওয়া সাড়ে ৩২ শতাংশ মানুষ মনে করেন, আগামী নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী জয়ী হলে দেশের জন্য ভালো হবে।
আওয়ামী লীগ জয়ী হলে ভালো হবে বলে মনে করেন সাড়ে ৮ শতাংশ মানুষ। শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন, এনসিপি জয়ী হলে ভালো হবে। জাপা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষে জনমত শূন্য দশমিক ১ শতাংশ করে।
জরিপের আরেকটি প্রশ্ন ছিল, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন দল জয়ী হলে দেশের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে বলে মনে করেন? উত্তরে বিএনপির পক্ষে মত দিয়েছেন সাড়ে ৫৭ শতাংশ মানুষ।জরিপে দেশের ৫টি নগর ও ৫টি গ্রাম বা আধা শহরাঞ্চলের প্রাপ্তবয়স্ক (১৮-৫৫ বছর) ১ হাজার ৩৪২ জনের মতামত নেওয়া হয়। এর মধ্যে পুরুষ ৬৭৪ জন, নারী ৬৬৮ জন। জরিপে অংশ নেওয়া মানুষেরা বিভিন্ন আয়, শ্রেণি ও পেশার। গত ২১ থেকে ২৮ অক্টোবর জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
জরিপকারী প্রতিষ্ঠান বলেছে, এটি একটি মতামত জরিপ। এটা দেশের প্রতিনিধিত্বমূলক জরিপ, তবে নির্দিষ্টভাবে কোনো নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করে না। জরিপের নমুনা এমন মানুষদেরই তুলে ধরেছে, যাঁরা অনলাইন অথবা ছাপা পত্রিকা পড়তে পারেন এবং আগামী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জরিপের ফলাফলের নির্ভরযোগ্যতার (কনফিডেন্স লেভেল) মাত্রা ৯৯ শতাংশ।