আল কায়েদার সহযোগী সংগঠন জেএনআইএম জানিয়েছে, তারা উত্তর বেনিনের দুটি সামরিক পোস্টে অভিযানে ৭০ জন সেনাকে হত্যা করেছে। পশ্চিম আফ্রিকায় এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটির হাতে এটি সবচেয়ে বড় হতাহতের সংখ্যা। শনিবার সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ এ তথ্য জানিয়েছে।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বেনিন এবং তার উপকূলীয় প্রতিবেশী টোগো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধারাবাহিক হামলার শিকার হয়েছে। কারণ ইসলামিক স্টেট এবং আল কায়েদার সাথে যুক্ত গোষ্ঠীগুলি সাহেল অঞ্চলের বাইরে উত্তরে তাদের উপস্থিতি প্রসারিত করেছে।

রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে স্বাধীনভাবে প্রতিবেদনটি নিশ্চিত করতে পারেনি।

বেনিনের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র এবেনেজার হনফোগা ফোন এবং বার্তার কোনো উত্তর দেননি।

বৃহস্পতিবার জামা’আ নুসরাত উল-ইসলাম ওয়া আল-মুসলিমিন (জেএনআইএম) এর একটি বিবৃতি উদ্ধৃত করে সাইটটিই জানিয়েছে, রাজধানী কোটোনো থেকে ৫০০ কিলোমিটার (৩০০ মাইল) এরও বেশি দূরে বেনিনের উত্তর-পূর্ব কান্দি প্রদেশের আলিবোরি বিভাগের দুটি সামরিক পোস্টে হামলায় ৭০ জন সেনা নিহত হয়েছে।

২০১২ সালে উত্তর মালিতে তুয়ারেগ বিদ্রোহের পর সাহেলে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি শিকড় গেড়েছিল। সম্প্রতি বেনিনের মতো উপকূলীয় পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর উত্তরে পৌঁছানোর আগে প্রতিবেশী বুরকিনা ফাসো এবং নাইজারে তারা ছড়িয়ে পড়ে।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ছক কষা হচ্ছিল কয়েক মাস ধরে

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সংগঠিত নেটওয়ার্কের ইঙ্গিত পাচ্ছে পুলিশ।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, কয়েক মাস ধরে পরিকল্পনা করে হামলাটি চালানো হয় এবং উদ্দেশ্য ছিল দেশে বড় ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি করা; হামলার পরপরই পালানোর ছকও কার্যকর করা হয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, ঘটনায় জড়িত হিসেবে এ পর্যন্ত তিনজনকে শনাক্ত করা গেছে। তাঁদের মধ্যে মোটরসাইকেলের পেছনে বসে গুলি চালান ছাত্রলীগের নেতা ফয়সল করিম মাসুদ ওরফে রাহুল, চালক ছিলেন আলমগীর শেখ। ঘটনার আগে হাদিকে অনুসরণকালে (রেকি) এই দুজনের সঙ্গে আরও একজন ছিলেন। তাঁর নাম রুবেল। তিনি আদাবর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুনআমাকে শোরুমে নিয়ে যান, সব সত্য বেরিয়ে আসবে: আদালতে মোটরসাইকেলের মালিক১০ ঘণ্টা আগে

হাদির বিভিন্ন গণসংযোগে ওই তিনজনের একসঙ্গে থাকার ছবিও পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই ছবি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। এই তিনজনই আওয়ামী লীগ–সংশ্লিষ্ট রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে পুলিশ জানিয়েছে।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র মনে করছে, হাদিকে হত্যার লক্ষ্যে কয়েক মাস ধরে ছক কষা হচ্ছিল। অন্তত দুই মাস ধরে শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিরা তাঁকে অনুসরণ করেছে। তফসিল ঘোষণার পরদিন তাঁকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা ছিল অন্যতম লক্ষ্য। ওই ঘটনার দিন রাতে রাজধানীর বাড্ডায় বাসে আগুন ও কয়েকটি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ এবং লক্ষ্মীপুরে নির্বাচন অফিসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এসব ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জড়িতরা ভারতে পালিয়েছে?

এদিকে ‘শুটার’ (যিনি গুলি করেন) ফয়সল করিম ও আলমগীর শেখ ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাঁদের সম্ভাব্য অবস্থান শনাক্ত করে শনিবার রাতেই ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও শেরপুরের নালিতাবাড়ী সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে মানব পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে আটক করে ঢাকায় আনা হয়েছে। তাঁরা হলেন সঞ্জয় চিসিম ও সিবিরন দিও।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে সঞ্জয় চিসিম জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে দুজন বাংলাদেশি নাগরিককে ভারতে পাচারে সহযোগিতা করেছেন তাঁরা। ওই দুজন ফয়সল ও আলমগীর বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধারণা করছে।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র মনে করছে, হাদিকে হত্যার লক্ষ্যে কয়েক মাস ধরে ছক কষা হচ্ছিল। অন্তত দুই মাস ধরে শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিরা তাঁকে অনুসরণ করেছে। তফসিল ঘোষণার পরদিন তাঁকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা ছিল অন্যতম লক্ষ্য।

আটক দুই ব্যক্তি সম্পর্কে গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার এস এন নজরুল ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে লোক পারাপারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটক দুই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

আরও পড়ুনওসমান হাদিকে আগামীকাল সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে৯ ঘণ্টা আগে

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার নজরুল ইসলাম বলেন, ফয়সলের পাসপোর্ট নম্বর পাওয়া গেছে। তাঁর সর্বশেষ ভ্রমণ তথ্য অনুযায়ী সম্ভবত গত জুলাই মাসে তিনি থাইল্যান্ড থেকে ফেরেন। এরপর ইমিগ্রেশন ডেটাবেজে আর তাঁর বহির্গমনের কোনো তথ্য নেই।

তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গতকাল বিকেলে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পুলিশ ইতিমধ্যে প্রধান সন্দেহভাজনের (ফয়সল) চলাচলের খতিয়ান বা ট্রাভেল হিস্ট্রি সংগ্রহ করেছে। এতে দেখা যায়, আইটি ব্যবসায়ী পরিচয়ে তিনি কয়েক বছরে একাধিক দেশ ভ্রমণ করেছেন। সর্বশেষ গত ২১ জুলাই সিঙ্গাপুর ভ্রমণের তথ্য পাওয়া গেছে।

রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করার আগ মুহূর্তের দৃশ্য

সম্পর্কিত নিবন্ধ