আউটসোর্সিং বরাদ্দ ও ব্যয়ে নীতিমালা মানা হচ্ছে না
Published: 3rd, May 2025 GMT
আউটসোর্সিং ও অনিয়মিত প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেওয়া কর্মীদের মজুরিবিষয়ক অর্থনৈতিক কোডের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে নীতিমালা বা পরিপত্রের নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না। এ অবস্থায় আউটসোর্সিং এবং অন্য ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কোডের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়ে সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ইদানীং লক্ষ্য করা যাচ্ছে, আনুষঙ্গিক কর্মচারীর (সরকারি কর্মচারী ব্যতীত) সাকল্য বেতন, আউটসোর্সিং এবং অনিয়মিত শ্রমিক মজুরিবিষয়ক অর্থনৈতিক কোডের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে জারি করা নীতিমালা, পরিপত্র ও অফিস স্মারকের নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না। একই ধরনের কাজের জন্য বর্ণিত একাধিক কোডে অর্থ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। যে কোডে বরাদ্দ রাখার সুযোগ নেই, সেখানেও রাখা হচ্ছে– যা আর্থিক শৃঙ্খলার পরিপন্থি।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ এপ্রিল অর্থ বিভাগ আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণ এবং দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিত করার বিষয়ে দুটি নীতিমালা জারি করে। দুটি নীতিমালায় সেবা ক্রয় এবং জরুরি কাজে সম্পূর্ণরূপে সাময়িকভাবে দৈনিক ভিত্তিতে শ্রমিক নিয়োজিত করার বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অর্থ বিভাগ বলেছে, পরিচালন বাজেটের আওতায় সাকল্য বেতনে নিয়োজিত জনবলের (প্রাধিকারভুক্ত প্রিভিলেজ স্টাফ ও চুক্তিভিত্তিক) ব্যয় ‘সাকল্য বেতন (সরকারি কর্মচারী ব্যতীত)’ খাত হতে নির্বাহ হবে। যেহেতু তারা সরকারি কর্মচারী হিসেবে নিয়োজিত নন, সেহেতু তাদের প্রযোজ্য বিধিবিধান ও নিয়ম-আচার অনুসারে বেতনভাতাদি সমন্বয়ে সাকল্যে বেতন দিতে হবে। এ ছাড়া আনুষঙ্গিক কর্মচারী সরকারের নিয়মিত রাজস্বভুক্ত কর্মচারী হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত না
হয়ে নির্দিষ্ট কোনো কার্য সম্পাদনে স্কেলের বিপরীতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন। তাদের মধ্যে যাদের চাকরি নিয়মিত হয়েছে, শুধু তাদের বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় এ কোডের বিপরীতে হিসাবভুক্ত করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, এসব অর্থনৈতিক কোডের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে নির্দেশনা প্রযোজ্য ও অনুসরণীয় হবে। একই ধরনের কাজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন কোডের বিপরীতে বরাদ্দ না রেখে সব আনুষ্ঠানিকতা পালন করে প্রাপ্যতা অনুযায়ী এ-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় অর্থের সংকুলান সংশ্লিষ্ট অর্থবছরের বাজেটে নির্দিষ্ট কোডের বিপরীতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর এবং অধীন সংস্থাকে বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে এসব নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আউটস র স ক ড র ব পর ত আউটস র স স কল য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দাবি ইনকিলাব মঞ্চের
ছাত্র আন্দোলনের ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
সোমবার (১৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবির কথা জানায় সংগঠনটি।
সংগঠনটির মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা দিবস আছে, বিজয় দিবস আছে, কিন্তু আমাদের মুক্তি ঘটেনি। তাই ঐতিকহাসিক ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে। এ ছাড়াও জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার আগে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।”
আরো পড়ুন:
বেগম রোকেয়া পদকের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান
নিরাপদ খাদ্য দিবস শনিবার: ‘নিরাপদ খাদ্য উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি কমায়’
তিনি বলেন, “গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মৌলিক সংস্কার এবং ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার নিশ্চিত না করে দেশে যদি নির্বাচন আয়োজন করা হয়, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘গাদ্দার’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এই সনদে ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের নিরিখে বৈষম্যবিরোধী ইনসাফভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুস্পষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা উপধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সাংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত এবং লিঙ্গের ন্যায্য শরিকানা নিশ্চিত করতে হবে। যেখানে বলা হবে- আমরা বাংলাদেশের জনগণ এই ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান সম্পল্প করেছি।”
সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চ ১৩টি প্রস্তাবনা তুলে ধরে, যা জুলাই সনদের কার্যকর প্রয়োগ ও জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে।
প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করা সব শহীদকে রাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠ সন্তান ঘোষণা করতে হবে; যেসব জুলাই যোদ্ধার স্থায়ী অঙ্গহানি হয়েছে, তাদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে; ফ্যাসিবাদী আমলে সংঘটিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোটারবিহীন অবৈধ নির্বাচন বাতিল করে সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এছাড়া ফ্যাসিবাদী আমলের সকল মন্ত্রী, এমপি ও দোষী আমলাসহ রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের বিচারের আওতায় এনে অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ জব্দ করে তা শহীদ ও আহতদের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে; দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা রক্ষায় ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করে দেশি-বিদেশি অপশক্তি চিহ্নিত করতে হবে; রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কার করতে হবে যাতে ফ্যাসিবাদ আর স্বৈরতান্ত্রিকতা কখনও ফিরে না আসে; ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে।
বাকি দাবিগুলো হলো- জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী কল্যাণ রাষ্ট্রের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে; সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত ও লিঙ্গের ন্যায্য অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই সনদের ভাষাগত দুর্ব্যবহার পরিহার করে জনসাধারণের জন্য সহজ ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে এবং সনদ চূড়ান্ত করার পূর্বে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
আগামী ২৫ জুনের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা করা না হলে রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে ‘লাল মার্চ’ করার ঘোষণাও দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী