এখনও আদালত আমাদের সেকেন্ড হোম: গয়েশ্বর
Published: 5th, May 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আগেও আদালতপাড়া বিএনপি নেতাকর্মীদের ঠিকানা ছিল, এখনও আছে। এই আদালতপাড়া এখনও আমাদের সেকেন্ড হোম। প্রায়ই সেখানে যেতে হয়।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ পেশাজীবী জোট আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে বিগত সরকারের আমলে দায়েরকৃত মামলাসমূহের অবস্থা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নামেও অনেক মামলা দেওয়া হয়েছিল। সেসময় আমরা তার প্রতিবাদ করেছিলাম। এখন তিনি তার বিরুদ্ধের সব মামলা প্রত্যাহার করে চেয়ারে বসেছেন, অথচ আমি গয়েশ্বর কেন এখনও কোর্টে হাজিরা দিই?
তিনি বলেন, বিএনপি কখনও প্রতিহিংসার রাজনীতি করেনি। এর ফলে যে সুবিধাটা হয়েছে, অনেকেই ভেবে নিয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে লেখা ও বলা সবচেয়ে নিরাপদ। সাংবাদিকরা আগে বলতো সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নাই। তাই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কিছু লেখা যেত না, কিন্তু বিএনপির বিরুদ্ধে নানা কথা লেখা হতো। তবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা মানেই সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নয়। সংবাদপত্রের মালিক বা প্রকাশকের স্বাধীনতাই মূল স্বাধীনতা। কিছু মিডিয়ার মালিক সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে, ফলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো নিউজ করে না। অনেক মিডিয়ার পয়সার অভাব নেই, কিন্তু সাংবাদিকদের ঠিকমতো বেতন দেয় না।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট যদি হাসিনা না পালিয়ে পদত্যাগ করতেন, তাহলে নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া লাগতো। তাহলে এখন নির্বাচন কমিশনের দেড় দুই বছর সময় লাগছে কেন? আমরা এখন নির্বাচন কমিশনের কীসের প্রস্তুতির জন্য অপেক্ষা করছি?
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়াপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ র স থ য় কম ট র সদস য ব এনপ র স ব ধ নত ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
করপোরেট করে শর্ত শিথিল হচ্ছে বাড়ছে করমুক্ত আয়ের সীমা
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে করপোরেট করের শর্ত শিথিল করা হচ্ছে। শর্ত শিথিল হলেও করপোরেট করের হার কমানো হচ্ছে না। অন্যদিকে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ব্যক্তির করমুক্ত আয়ের সীমা কিছুটা বাড়ানো হচ্ছে। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি যাদের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার আইপিওতে হস্তান্তর করা হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ হারে করপোরেট কর রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে, সব ধরনের আয় ও প্রাপ্তি, প্রতি একক লেনদেনে ৫ লাখ টাকার বেশি এবং বার্ষিক মোট ৩৬ লাখ টাকার বেশি সব ধরনের ব্যয় ও বিনিয়োগ ব্যাংকের ট্রান্সফারের মাধ্যমে হতে হবে। এ শর্ত পূরণ না হলে ওই কোম্পানির করপোরেট কর হবে সাড়ে ২২ শতাংশ। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের কম শেয়ার প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়েছে, সেসব ক্ষেত্রে কর হার সাড়ে ২২ শতাংশ হবে। শর্ত পূরণ না করতে পারলে ২৫ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে। এনবিআরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে বলেন, এ বিষয়ে সরকার ইতিবাচক। বাজেটে শর্ত শিথিল হবে, অর্থাৎ করদাতাবান্ধব করা হবে।
সর্বশেষ গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ব্যক্তির করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা করা হয়। গত অর্থবছরে করমুক্ত আয়ের সীমা আর বাড়েনি। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পরামর্শক কমিটির সভায় ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে সাড়ে ৪ লাখ টাকা করার জোর দাবি জানায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। এ ছাড়া গত দুই বছরে মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। ফলে বর্ধিত মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনায় আগামী অর্থবছরে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে এনবিআর। বিদ্যমান বার্ষিক করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করা হতে পারে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বেশির ভাগ অর্থনীতি এখনও ব্যাংকের লেনদেনের বাইরে। সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক পরিকাঠামো সম্পূর্ণভাবে ব্যাংকনির্ভর নয়। বড় এবং মাঝারি কোম্পানির ক্ষেত্রে লেনদেনের শর্ত পূরণ করা সম্ভব হয় না। সেজন্য তারা কর কমানোর সুবিধা নিতে পারছেন না। তাদের ভাষ্য, কোম্পানি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের আয় বা প্রাপ্তি এবং ব্যয় ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংক লেনদেনের সীমারেখা নির্ধারণ করে দেওয়া বাস্তবসম্মত নয়। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানের অনেক ব্যয়কে করের আওতায় ধরা হয়। বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে কর ২০ শতাংশ হলেও ক্ষেত্র বিশেষে বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ হয়।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ সমকালকে বলেন, ব্যবসায়ীদের জন্য করপোরেট কর কমানো হলেও কঠিন শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে ব্যবসায়ীদের কোনো লাভ হয়নি। এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ লেনদেন এখনও ব্যাংকের বাইরে। যেমন একটি কারখানায় ১ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী আছে। তাদের বেতন ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের টিএ, ডিএ বা তাদের পেছনে অন্য যেসব খরচ হয়, সেগুলো নগদে সম্পন্ন হয়। ফলে বড় আকারের এসব লেনদেন ব্যাংকের আওতার বাইরে থেকে যায়।