গণহত্যার আসামি সালাউদ্দিনের পক্ষে দাঁড়ালেন পিপি খোরশেদ মোল্লা!
Published: 5th, May 2025 GMT
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণহত্যা মামলার আসামি সালাউদ্দীনের পক্ষে আদালতে আইনজীবী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন নারায়ণগঞ্জ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের পিপি এডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লা।
একজন সরকারি কৌশলী হয়েও গণহত্যা মামলার আসামির পক্ষে আইনজীবী হিসেবে দাঁড়ানোয় এডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লার বিরুদ্ধে ক্ষুদ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন মাসদাইর এলাকার সালাউদ্দিন একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং একাধিক মামলার আসামি। সে ছিলো খুনি আজমেরী ওসমানের বিশ্বস্ত সহযোগী। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সে আজমেরী ওসমানের বাহিনীর সাথে ছাত্র জনতার উপর হামলা চালায়।
যে কারণে তার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণহত্যার মামলা হয়। সে মামলায় সালাউদ্দিন এজাহার ভুক্ত আসামি হিসেবে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় এবং কিছুদিন আগে জামিনে বের হয়।
জামিনে বের হয়ে সালাউদ্দিন আবারো সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যাহত রাখে এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক উজ্জীবিত বাংলাদেশ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মিলন বিশ্বাস হৃদয় ও ফটো সাংবাদিক হাবিব খন্দকারের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে হত্যার চেষ্টা করে।
সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলা এবং হত্যা চেষ্টার অভিযোগে ফতুল্লা থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার করা হয় সালাউদ্দিনকে। সেই সালাউদ্দিনকে বাঁচাতে তার পক্ষে আদালতে আইনজীবী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন নারায়ণগঞ্জ আদালতের নারী ও শিশু দমন ট্রাইবুনালের পিপি অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লা।
অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লার কর্মকান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আইনজীবী এবং সাংবাদিক মহল। একজন সরকারি কৌশলী হয়েও খুনি সন্ত্রাসী এবং গণহত্যা মামলার আসামির পক্ষে কি করে তিনি দাঁড়ালেন সেই প্রশ্ন এখন সকলের মুখে মুখে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আইনজীবী বলেন, অ্যাডভোকেট খোরশেদ মোল্লা বিএনপিপন্থী আইনজীবী এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনা হচ্ছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যা মামলার আসামিদের পক্ষে কোনো বিএনপির আইনজীবী দাঁড়াতে পারবে না ।
এই নির্দেশনা অমান্য করে খোরশেদ আলম মোল্লা অপরাধ করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লা বলেন, আমি জানতাম না সে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যা মামলার আসামি। আমি বিষয়টি জানার পর তার মামলাটি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
  
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হত য ন র য়ণগঞ জ আইনজ ব গণহত য আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো–কাণ্ডের সেলিম প্রধান রিমান্ডে
রাজধানীর গুলশান থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো–কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানের ৩ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মিছিলে অর্থ জোগান দেওয়ার অভিযোগ এনেছে রাষ্ট্রপক্ষ। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার ঢাকার ভারপ্রাপ্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান তাঁর রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হারুনুর রশিদ জানান, গত ২৬ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক মো. মোজাম্মেল হক আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। ওই দিন আদালত তাঁর উপস্থিতিতে শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য করেছিলেন। শুনানির জন্য আজ সেলিম প্রধানকে আদালতে আনা হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী তাওহিদুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী তাওহিদুল ইসলাম বলেন, আগের সরকারের সময় সেলিম প্রধানকে নিয়ে অভিযোগ ছিল তিনি তারেক রহমানের কাছে টাকা পাঠাতেন এবং বর্তমান মামলাতেও একই রকম অভিযোগ আনা হচ্ছে, যা যৌক্তিক নয়।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জিজ্ঞেস করেন, ‘তারেক রহমানকে কে টাকা দিয়েছেন?’ উত্তরে আসামিপক্ষের আইনজীবী একটি সংবাদ প্রতিবেদনের কপি আদালতে দেখান। এ সময় আদালতের ভেতর হট্টগোল সৃষ্টি হয়।
একপর্যায়ে আদালতের অনুমতি নিয়ে সেলিম প্রধান বলেন, ২০১৯ সালের একটি মামলায় তিনি জামিন না পেয়ে কারাভোগ করেছেন। জেল থেকে মুক্ত হয়ে তিনি গাজী গ্রুপের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরু করেন এবং আওয়ামী লীগের আমলে তাঁর ব্যক্তিগত বাড়িতে হামলা হয়েছে। তিনি জোসেফ হারিছের বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন।
শুনানি শেষে আদালত সেলিম প্রধানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ৫ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার দিকে গুলশানের বারিধারার নেক্সাস ক্যাফে প্লেস নামক একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়।
এর গত ২২ অক্টোবর আওয়ামী লীগের মিছিলে অর্থ জোগান দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সেলিম প্রধানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, গত ২২ এপ্রিল সকাল ৭টায় গুলশান-১ এর জব্বার টাওয়ারের পাশের রাস্তায় আসামিসহ ৩০ থেকে ৩৫ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি সমবেত হন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সংগঠনের অর্থদাতা, পরামর্শদাতা ও নির্দেশদাতাদের নিয়ে সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা এবং জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করা। সেখানে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানার ও আওয়ামী লীগের অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা দেশবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বাকিরা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় পুলিশ গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করে।