ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের এফডিসি থেকে পলাশী পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ বাতিলের দাবি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন। চিঠিতে এই সংযোগ সড়ককে ‘রাজধানীর পান্থকুঞ্জ ও হাতিরঝিল ধ্বংসকারী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

পাশাপাশি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের রাষ্ট্রীয় আইন অমান্য, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, জনভোগান্তি, হতাহতের ঘটনা, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতি উদ্‌ঘাটনে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়েছে চিঠিতে।

সোমবার প্রধান উপদেষ্টার পাশাপাশি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে। গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব প্রথম আলোকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল রক্ষার দাবিতে চলমান লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ১৪৩তম দিনে গাছ রক্ষা আন্দোলন এই চিঠি দিল।

প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়া চিঠিতে গাছ রক্ষা আন্দোলন বলেছে, যেখানে বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, সেখানে কতিপয় ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলের জন্য বিগত সরকারের আমলে এই প্রকল্প নেওয়া হয়। দিনে দিনে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়া এই রাজধানী শহরের অতিসংবেদনশীল প্রাকৃতিক পরিবেশের শেষটুকুও কেড়ে নিচ্ছে এই প্রকল্প। চিঠিতে আরও বলা হয়, ঢাকা শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা কাঁঠালবাগান, সেন্ট্রাল রোডসহ দিলু রোডের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ হাতিরঝিল ভরাট করে এবং এই এলাকার একমাত্র সবুজ এলাকা পান্থকুঞ্জ পার্কের ৪৫ প্রজাতির ২ হাজার গাছ ধ্বংস করে এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের রাস্তার নির্মাণকাজ চলছিল, যা গাছ রক্ষা আন্দোলনের কর্মীদের প্রচেষ্টায় এখন সাময়িকভাবে স্থগিত রয়েছে।

চিঠিতে বেশ কিছু দাবিও জানানো হয়েছে। গাছ রক্ষা আন্দোলনের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের চুক্তি পুনর্মূল্যায়নের মাধ্যমে দেশের স্বার্থ নিশ্চিত করতে হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কারণে হাতিরঝিল ভরাট করে স্থাপিত পিলারগুলো সরিয়ে জলাধারের পরিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। পান্থকুঞ্জ পার্কে চলমান প্রকল্পের কাজ অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের এফডিসি থেকে পলাশী পর্যন্ত সংযোগ সড়কের পূর্ণাঙ্গ কারিগরি নকশা, অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা প্রতিবেদন ও সামগ্রিক লাভক্ষতির উপযোগিতা বিশ্লেষণ, পরিবেশগত সমীক্ষা প্রতিবেদন, পরিবহনগত সমীক্ষা প্রতিবেদন ও সামাজিক প্রভাবগত বিশ্লেষণ জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।

এই সংযোগ সড়ক নকশা প্রণয়নকারী, পরামর্শক ও বাস্তবায়নকারী সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিবেশ ও জনজীবনবিনাশী প্রকল্পের পুনরাবৃত্তি না হয়সহ আরও বেশ কিছু দাবি তুলে ধরা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প র স য গ সড়ক পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

চার শতাধিক প্রোগ্রামার নিয়ে রাজধানীতে ‘হিরোইউনিয়ন’

সারাদেশের চার শতাধিক প্রোগ্রামারকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্যতিক্রমী মিললমেলা। শুক্রবার রাজধানীর আইডিইবি অডিটোরিয়ামে দিনব্যাপী এ মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। ‘হিরোইউনিয়ন’ শীর্ষক এ আয়োজনে সারাদেশের উদীয়মান প্রোগ্রামিং প্রফেশনালসরা অংশ নেয়। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এডটেক প্রতিষ্ঠান ‘প্রোগ্রামিং হিরো’।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন প্রোগ্রামার ও প্রোগ্রামিং হিরো–এর প্রধান নির্বাহী (সিইও) ঝংকার মাহবুব। আরও উপস্থিত ছিলেন সফটওয়্যার কোম্পানি ব্রেইন স্টেশন ২৩–এর সিইও রাইসুল কবির, ব্র্যাক আইটিস-এর সিনিয়র টেকনোলজি অ্যাডভাইজার শাহ আলি নেওয়াজ তপুসহ অন্যান্য প্রযুক্তিবিদ ও ইন্ডাস্ট্রি লিডাররা।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ঝংকার মাহবুব বলেন, সামনে যতই এআই টুল আসুক না কেন, আমাদের সেটিকে কাজে লাগিয়ে নিজের কোডিং স্কিল ও প্রোডাক্টিভিটি বাড়িয়ে নিতে হবে। লিংকডইনের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা বলছে— গিটহাব কো-পাইলটের মতো এআই টুল ব্যবহার করলে একজন প্রোগ্রামারের কোড লেখার গতি গড়ে ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে। তবে কোড লেখা যত সহজই হোক না কেন, ফিচার টেস্টিং, বাগ ফিক্সিংয়ের জন্য দক্ষ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজন থেকেই যাবে। তাই প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে, এআইকে সহযোগী করে, নিজেদের দক্ষতা অব্যাহতভাবে বাড়াতে হবে।

অনুষ্ঠানের শেষে গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীদের মাঝে সার্টিফিকেট ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে ইন্টার‌অ্যাক্টিভ লার্নিং অ্যাপের মাধ্যমে ‘প্রোগ্রামিং হিরো’র যাত্রা শুরু হয়। এতে মজার ছলে প্রোগ্রামিং শেখার সুযোগ পেত শিক্ষার্থীরা। পরে এডটেক ইন্ডাস্ট্রির প্রচলিত কাঠামো থেকে বের হয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ গাইডেড লার্নিং এনভায়রনমেন্ট গড়ে তোলে প্রতিষ্ঠানটি; যেখানে একজন শিক্ষার্থী শূন্য থেকে শুরু করে জব–রেডি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে ওঠার জন্য ধারাবাহিকভাবে উন্নত ট্রেনিং পেয়ে থাকে। গত পাঁচ বছরে প্রোগ্রামিং হিরো ইতিমধ্যে ৬০টিরও বেশি দেশে ২ হাজার ২৬০ কোম্পানিতে ৪ হাজার ৭০০ জনের শিক্ষার্থীকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ