বাহুবলে চিনাবাদাম চাষে সাফল্য পেলেন কৃষক শফিউল
Published: 6th, May 2025 GMT
আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে চিনাবাদাম চাষ করে সফলতা পেয়েছেন হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার পূর্ব রূপশংকর গ্রামের কৃষক মো. শফিউল আলম।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রায় ৩০ শতক জমি আবাদ করে চিনাবাদামের বীজ বোনেন এই কৃষক। প্রায় ৪ মাসে চিনাবাদামের ভালো উৎপাদন তার মুখে হাসি এনে দেয়। সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চিনাবাদাম চাষ করে তিনি এই সাফল্য পান।
পূর্ব রূপশংকর গ্রামে চিনাবাদাম নতুন ফসল। তাই এ ফসলটির দেখতে আসেন এলাকার অনেক কৃষক। কৃষক শফিউলের ক্ষেতে ভালো ফলন দেখে এরই মধ্যে অনেকে চিনাবাদাম চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তারাও চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
শফিউল আলম বলেন, “চিনাবাদাম চাষে খরচ নেই বললেই চলে। তবে নিজেদের গোবর থাকলে জমিতে প্রয়োগ করে বাদামের বাম্পার ফলন পাওয়া সম্ভব। ক্ষেতে পানি দিতে হয়েছে। তেমন কোনো বিষ প্রয়োগ ছাড়াই চিনাবাদাম চাষ করতে পেরে আমি আনন্দিত।”
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার শামীমুল হক শামীম পরামর্শ দিয়ে তাকে চাষে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন বলে জানান।
শফিউল আলম ধারণা করছেন, অন্তত ৫০ হাজার টাকা চিনাবাদাম তিনি বিক্রি করতে পারবেন। অথচ এই চাষে তার খরচ হয়েছে মাত্র ১০ হাজার টাকা।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার শামীমুল হক শামীম বলেন, “চিনাবাদাম যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি পাতাও বেশ সুদর্শন। পাতার গড়ন অনেকটা আলুপাতার মতো। এ বাদাম মাটির নিচে জন্মে। চিনাবাদামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরে কঠিন রোগকে বাসা বাধতে বাঁধা দান করে। এখানে কৃষক শফিউল আলম প্রমাণ করলেন চেষ্টা করলে সফল হওয়া সম্ভব। তাকে সহযোগিতা করেছি। তিনি শ্রম দিয়েছেন। বাদামের ভালো ফলন হয়েছে। এমন ফলন দেখে এলাকার অন্য কৃষকরাও বাদাম চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।”
তিনি বলেন, “বাদাম আমাদের কৃষি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাহুবল উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া বাদাম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বিনা উদ্ভাবিত ধান, তৈলবীজ, গম, ডালসহ বিভিন্ন ফসলের জাত প্রচলিত জাতের তুলনায় ২-৩ গুণ বেশি ফলন দেয়।
ঢাকা/মামুন/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
উপাচার্যসহ সব দপ্তরে তালা, ববির প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিনের পদত্যাগের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে মঙ্গলবার সকাল ১১টা পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। তিনি পদত্যাগ না করায় দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের কমপ্লিট শাটডাউনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তালা দেওয়ার সময় উপাচার্য তার দপ্তরে ছিলেন না। উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে দপ্তর থেকে বের হলে তালা দেন শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা মৃত প্রশাসনের প্রতীকী কফিন নিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আশিক আহমেদ বলেন, ‘উপাচার্য ড. শুচিতা শারমিনের ববিতে থাকার কোনো অধিকার নেই। দ্রুত তিনি পদত্যাগ না করলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
এ দিকে প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়ার আগাম খবরে গতকাল সোমবার উপাচার্য গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন কর্মকর্তাকে ঢাকায় ডেকে নেন এবং সেখানে একটি রেস্ট হাউজে অফিস করছেন বলে জানা গেছে। উপাচার্যের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, উপাচার্য দপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার হাফিজুর রহমান, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. সোলায়মানসহ অর্থ এবং পরিকল্পনা দপ্তরের দুজন কর্মকর্তা ঢাকায় গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক মুস্তাকিম রহমান বলেন, ‘আমার বিভাগের একটি ব্যাচ সব ক্লাস শেষ করে ৩ মাস ধরে অপেক্ষায় আছে উপাচার্যের একটি স্বাক্ষরের আশায়। যে উপাচার্য ৩ মাসে একটা স্বাক্ষর দিতে সময় পান না, সেই ভিসিকে প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজন কতটুকু?’ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ছাত্ররা প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। আর ভিসি ঢাকায় রেস্ট হাউজে বসে বিশ্ববিদ্যালয় চালাচ্ছেন। কর্মকর্তাদের ঢাকায় ডেকে নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের ভিসি মাসের ২৫ দিনই ঢাকায় থাকেন। যে কারণে প্রশাসনিক, একাডেমিক কার্যক্রম ৯ মাস স্থবির হয়ে পড়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার মামুন অর রশিদ বলেন, ‘ছাত্রদের আন্দোলনের কারণে আমি এবং উপউপাচার্য কার্যালয় থেকে বের হয়ে যাই। আমার জানা মতে, উপাচার্য ক্যাম্পাসে নেয়।’
এ বিষয়ে জানতে ববি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিনের মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। উপউপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম রব্বানী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
উল্লেখ্য, চার দফা দাবিতে গত ২১ এপ্রিল থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। সোমবার তারা উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা ঘোষণা করেন।