পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে নাটকীয় উত্তেজনার এক ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

যদিও অনুমান করা হচ্ছিল যে, ভারত কোনো না কোনো ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে, তবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার তীব্রতা অনেককে বিস্মিত করেছে।

বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের সাউথ এশিয়া এটিডর আনবারাসান এথিরাজন।

আরো পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ দেখানোর তাগিদ জাতিসংঘ মহাসচিবের

ভারতের হামলাকে ‘কাপুরুষের কাজ’ বললেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর উদ্ভূত পরিস্থিতির ওপর পর্যালোচনা করে এমন মন্তব্য করেছেন বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের সাউথ এশিয়া এটিডর আনবারাসান এথিরাজন।

আনবারাসন লিখেছেন, ভারতের দাবি করছে তারা যে স্থানগুলোতে বোমা বর্ষণ করেছে, সেগুলোর সঙ্গে জঙ্গিদের সংযোগ ছিল এবং তাদের লক্ষ্য পাকিস্তানি সামরিক স্থাপনা ছিল না।

অন্যদিকে, পাকিস্তান পাল্টা জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, আর সেই প্রতিক্রিয়ার ধরন ও লক্ষ্য নির্ধারণ করবে দিল্লির পরবর্তী প্রতিক্রিয়া কী হবে।

দুই দেশই মনে করে তারা উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, উত্তেজনা এখন তুঙ্গে এবং যে কোনো সামরিক সংঘাতের সম্ভাব্য পথ কীভাবে গড়াবে তা বলা কঠিন।

ইতিহাসে দেখা যাচ্ছে, অতীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য শক্তিধর দেশগুলো মাঝেমধ্যে হস্তক্ষেপ করে এই দুই দেশের উত্তেজনা প্রশমনে সাহায্য করেছে।

কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন বর্তমানে অন্যান্য বৈশ্বিক ইস্যুতে মনোযোগ দেওয়ায় এবার কত দ্রুত ওয়াশিংটন হস্তক্ষেপ করবে, তা এখনো অনিশ্চিত।

এদিকে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশের রাজনৈতিক নেতারাই জনগণকে দেখাতে চাইবেন তারা দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং বিজয় অর্জন করেছেন।

এই পদক্ষেপে উভয় দেশের নেতারাই তাদের জনগণের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করবেন।

ঢাকা/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ