Samakal:
2025-05-08@04:03:07 GMT

কে ব্যবহার করল কোন অস্ত্র

Published: 7th, May 2025 GMT

কে ব্যবহার করল কোন অস্ত্র

কাশ্মীরের পেহেলগাম ইস্যুতে উত্তেজনার মধ্যে একে অপরের ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। পাল্টাপাল্টি হামলায় দুই দেশে অন্তত ৪১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। উত্তেজনা এখনো থেমে নেই। যেকোনো সময় আরও বড় পরিসরে হামলার শঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। চিরবৈরি দু’দেশের সংঘাতে এখন পর্যন্ত কী কী সমরাস্ত্রের ব্যবহার হলো, তা নিয়ে কৌতূহল অনেকের। এই প্রতিবেদনে সেই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অপারেশন সিঁদুরে উচ্চ ও দীর্ঘ পাল্লার হামলা চালাতে সক্ষম এমন বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করেছে দিল্লি। এই অস্ত্রগুলোর মধ্যে স্কাল্প ক্রুজ মিসাইল, হেমার বোমা ও লোটারিং মিউনিশন (আত্মঘাতী ড্রোন) উল্লেখযোগ্য।

কোন অস্ত্রের কী কাজ

স্কাল্প ক্রুজ মিসাইল: এটি একটি দূরপাল্লার মিসাইল, যা আকাশ থেকে নিক্ষেপ করা হয়। এটি ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত অতিক্রম করতে পারে। প্রতিপক্ষের কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানার জন্য এটি ডিজাইন করা হয়েছে। মিসাইলটি মূলত বাঙ্কার, সামরিক ঘাঁটি ও সুরক্ষিত অবকাঠামো ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়।

হেমার বোমা: এটি একটি স্মার্ট বোমা। নির্ভুলভাবে লক্ষ্যে আঘাত হানার জন্য এটি ডিজাইন করা হয়েছে। বিশেষ করে শক্তিশালী অবকাঠামো- যেমন কংক্রিটের বাঙ্কার ও বহুতল ভবন ধ্বংসে এই বোমা ব্যবহার করা হয়। এটি ৫০-৭০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। 

লোটারিং মিউনিশন: এটি এক ধরনের ড্রোন। শত্রুপক্ষের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নজরদারি, লক্ষ্যবস্তু শনাক্তকরণ এবং চূড়ান্ত আঘাত হানার কাজে ব্যবহৃত হয়। এই ড্রোনগুলো নির্দিষ্ট এলাকায় বাতাসে ঘোরাফেরা করতে পারে এবং লক্ষ্যবস্তুকে শনাক্তের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে অথবা দূরনিয়ন্ত্রিতভাবে হামলা চালিয়ে লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করে। 

এই অস্ত্রের বিশেষত্ব হলো- একবার লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করা হলে, এরা সরাসরি নিজেদের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আঘাত হানে। ফলে এগুলোর পুনঃব্যবহার সম্ভব নয়।

ভারত সরকারের প্রকাশিত বিবৃতি অনুসারে, অপারেশন সিঁদুরে মোট ৯টি স্থানে হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে চারটি পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডে এবং পাঁচটি পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অবস্থিত।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই হামলায় কোনো পাকিস্তানি সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করা হয়নি। টার্গেটগুলো আগে থেকে যাচাই করা হয়েছিল। সেসব জায়গায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর অপারেশন সেন্টার রয়েছে এমন তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পরেই হামলা চালানো হয়।

অন্যদিকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভারতের চালানো হামলার জবাব দিয়েছে পাকিস্তানও। ইসলামাবাদের হামলায় ভারত শাসিত কাশ্মীরে ১৫ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৪৩ জন। দিল্লির বিমান হামলার জবাবে দেশ দুটির মধ্যে কার্যত সীমান্ত হিসেবে পরিচিত এলাকায় পাকিস্তান যখন ভারী গোলাবর্ষণ শুরু করে, তখন এই ঘটনা ঘটে ।

ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানি ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর তাৎক্ষণিক প্রতিরক্ষায় ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে পরে বলা হয়, তারা তিনটি রাফাল, একটি এসইউ-৩০ এবং একটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।

স্থলভাগের শক্তি বিবেচনায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভারত এগিয়ে থাকলেও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র সেলফ প্রোপেলড আর্টিলারি ও মোবাইল রকেট প্রোজেক্টর বা রকেট লঞ্চারের সংখ্যায় এগিয়ে রয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের সেলফ প্রোপেলড আর্টিলারি সংখ্যা ৬৬২, ভারতের ১০০। পাকিস্তানের মোবাইল রকেট প্রোজেক্টর ৬০০, ভারতের ২৬৪।

এছাড়া অন্যান্য সমরাস্ত্রের মধ্যে ভারতের ট্যাংক সংখ্যা ৪ হাজার ২০১টি, সাঁজোয়া যান ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৯৪টি, টোওড আর্টিলারি বা টেনে নেয়ার কামান ৩ হাজার ৯৭৫টি। পাকিস্তানের ট্যাংক রয়েছে ২ হাজার ৬২৭টি, সাঁজোয়া যান ১৭ হাজার ৫১৬টি, টোওড আর্টিলারি ২ হাজার ৬২৯ টি।

তবে পাকিস্তান ঠিক কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভারতের হামলার জবাব দিয়েছে তা এখনো স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর আর ট ল র লক ষ য

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ের লিচু বাজারে, ৭ কোটি টাকার বিক্রির আশা 

প্রাচীন বাংলার রাজধানী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রসালো পাকা লিচু বাজারে আসতে শুরু করেছে। এ মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে এবার আগেই পেকেছে লিচু। সোনারগাঁয়ের বাগানের গাছগুলোতে এখন পাকা লিচু ঝুলছে।

আগে বাজারে আসায় এবং ব্যতিক্রম টক মিষ্টি স্বাদের কারণে মানুষের কাছে সোনারগাঁয়ের লিচুর কদর রয়েছে। সাধারণত বৈশাখের শেষ সময়ে এ লিচু প্রথম বাজারে আসে। 

লিচু চাষিরা জানান, এ বছর দেশের আবহাওয়া লিচু চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় ভালো ফলন হয়েছে। ফলে লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার আশা করছেন তারা।

সোনারগাঁয়ের পানাম গাবতলী এলাকায় এ উপজেলার সবচেয়ে বড় এবং পুরাতন সাধু’র লিচুর বাগান ঘুরে কথা হয় এ বাগানের ক্রেতা রুবেল রানার সাথে। তিনি বলেন, “সোনারগাঁয়ে বর্তমানে কদমী, মোজাফফরপুরী, চায়না-৩, এলাচি ও পাতি — এ পাঁচ ধরনের লিচুর চাষ হচ্ছে। তবে অন্যান্য জাতের তুলনায় কদমী লিচুর চাষেই এখন চাষিরা বেশি মনোযোগী। অন্য ফসল বাদ দিয়ে এখন অনেকেই লিচুর দিকেই ঝুঁকেছেন।”

প্রতি বছর একটি বাগান থেকে ৪-৫ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করতে পারেন একজন চাষি। তাই খালি জায়গা পেলে অনেকেই কদমী লিচুর বাগান তৈরি করছেন। যদিও খরার কারণে মুকুল কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবু ফলন ভালো হয়েছে। সোনারগাঁয়ে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫ শতাধিক লিচুর বাগান রয়েছে। এসব বাগানে বেশিরভাগই কদমী লিচু চাষ হচ্ছে।

আব্দুর রউফ নামের আরেকজন লিচু ব্যবসায়ী ও চাষি জানান, বর্তমানে কদমী লিচু প্রতি শত ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় এবং পাতি লিচু প্রতি শত ৪০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সোনারগাঁ পৌরসভা, বৈদ্যেরবাজার, মোগরাপাড়া, বারদী, সনমান্দি ও সাদিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে লিচুর বাগান রয়েছে। তবে পৌরসভার সর্দারবাড়ী, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের আশপাশ, বাড়ি মজলিশ, দিঘিরপাড়, পানাম, অর্জুন্দি, বাগমুছা, দত্তপাড়া, ইছাপাড়া, কৃষ্ণপুরা, হাড়িয়া, সাহাপুর, পানাম গামতলী, ষোলপাড়া ও ভট্টপুর এলাকায় উৎকৃষ্ট মানের লিচু চাষ হয়। 

সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক বলেন, “এ বছর সোনারগাঁয়ে ছোট-বড় মিলিয়ে ৮৫টি গ্রামে ১০৭ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রায় ৭২০ মেট্রিক টন ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। সে হিসেবে এ বছর প্রায় ৭ কোটি টাকার লিচু কেনাবেচা হতে পারে। ”

ঢাকা/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ