চট্টগ্রামে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী পরস্পরকে টেক্কা দিতে একই ধরনের কর্মসূচি করছে। সম্প্রতি নগরীর বির্জা খাল খনন ও পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু করে জামায়াত। এ কর্মসূচির আদলে জনগণের নজর কাড়তে দুটি খাল খননের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি।

মূলত খালগুলোর যেসব পয়েন্টে পানি চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, এক্সক্যাভেটর দিয়ে সেখানে খননের পাশাপাশি ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করে পানি চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি-জামায়াতের সাম্প্রতিক উদ্যোগ ‘খাল খননের রাজনীতি’ তকমা পেলেও প্রশংসার দাবিদার। প্রত্যেক ওয়ার্ডে এমন কার্যক্রম হলে জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে চট্টগ্রামবাসী মুক্তি পাবে। যদিও দলীয় নেতাকর্মীর পাশাপাশি নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছ থেকে ‘চাঁদা’ তুলে কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন থেকে অনুমোদন নিয়ে নগরীর বাকলিয়া এলাকায় বির্জা খাল খনন করছে জামায়াত। দলটির দাবি, এজন্য তাদের ব্যয় হবে প্রায় কোটি টাকা। ১৯ এপ্রিল নগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরীসহ দলটির নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে বির্জা খাল খনন কর্মসূচি উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র ডা.

শাহাদাত হোসেন।
জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কার্যক্রম বাস্তবায়নের টাকা তারা নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাসিক যে জমা হয় বায়তুল মালে, সেখান থেকে দিচ্ছে। দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক ছাড়াও জামায়াতের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী এবং সমর্থক খাল পরিষ্কারে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন। দুই সপ্তাহের মধ্যে কাজটি শেষ হতে পারে বলে জানা গেছে।

নগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে দলীয় উদ্যোগে কাজটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’ নগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মহানগর জামায়াত কাজটি করছে। এজন্য কারও কাছে চাঁদা নিচ্ছি না।’

অন্যদিকে নগরীর নাজির খাল ও কালীর ছড়া খাল খনন করছে বিএনপি। প্রায় ৮০ লাখ টাকা ব্যয় হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। ২ মে থেকে ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডের উদ্যোগে নাজির খাল ও কালীর ছড়া খাল খনন শুরু করে বিএনপি। নেতাকর্মী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে জনবান্ধব উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করছে তারা।

২৯ এপ্রিল খাল দুটি সিটি করপোরেশন থেকে বুঝে নেন বিএনপি নেতারা। বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মী ও সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনকে নিয়ে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছিলেন, ‘বিএনপির একটি ওয়ার্ডের উদ্যোগে দুটি খাল খনন করা হচ্ছে। এটি প্রত্যেক ওয়ার্ডে ছড়িয়ে দিতে হবে।’ ১০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি রফিক উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘জনস্বার্থে খাল দুটিকে পানি চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করছি। এ জন্য ৭০-৮০ লাখ টাকা খরচ হতে পারে। এত টাকা কারও একার পক্ষে জোগান দেওয়া সম্ভব নয়। তাই নেতাকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।’

সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৫৭টি চিহ্নিত করলেও মাত্র ৩৬ খাল খনন করছে। চসিক করছে একটি। অন্তত ২০টি অতিগুরুত্বপূর্ণ খাল খননের বাইরে থাকায় নগরবাসী জলাবদ্ধতার ভয়াবহতা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না। এ অবস্থায় খাল খননে রাজনৈতিক দলের উদ্যোগ খুবই ইতিবাচক।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত নগর জ ম য় ত খ ল খনন র ন ত কর ম র জন ত ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

মিরপুরে দেড় ঘণ্টা দেরিতে উচ্ছেদ অভিযান, তিনটি টংদোকান ভেঙে তিন দিনের বিরতি

অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদের পূর্বঘোষিত অভিযানটি দেড় ঘণ্টা দেরিতে শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। আধঘণ্টা চালানো অভিযানে তিনটি টংদোকান ও কিছু ভাঙারির দোকানের আংশিক ভেঙে দেওয়া হয়। এরপরই অবৈধ দখলদারদের মালপত্র সরিয়ে নিতে তিন দিনের সময় দিয়ে অভিযান স্থগিত করে দেন ডিএনসিসির কর্মকর্তারা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুরের কালশী স্টিল ব্রিজ–সংলগ্ন বেড়িবাঁধ এলাকায় অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদে চালানো অভিযানে এমন ঘটনা ঘটে।

অভিযানটি সকাল ১০টায় শুরু করার কথা ছিল। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুরু করা অভিযানটি দুপুর ১২টা ৭ মিনিটের মধ্যেই শেষ করে দেওয়া হয়। অভিযানে ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের থাকার কথা থাকলেও অভিযানে তিনি ছিলেন না।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা উত্তর সিটির জনসংযোগ বিভাগের পাঠানো ‘মিডিয়া কাভারেজের অনুরোধে’ বলা হয়, কালশী স্টিল ব্রিজ–সংলগ্ন বেড়িবাঁধ এলাকায় আজ সকাল ১০টায় ‘অবৈধ দোকান/স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান’ চালানো হবে। এতে উপস্থিত থাকবেন প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

আজ সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দিকে কালশী স্টিল ব্রিজ এলাকায় গিয়ে ঢাকা উত্তর সিটির কোনো কর্মকর্তা, কর্মী কিংবা উচ্ছেদের কাজে ব্যবহারের জন্য কোনো যানবাহন এনে রাখতে দেখা যায়নি। ১০টা ১৭ মিনিটে দায়িত্বপ্রাপ্ত জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারজানা ববির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কাছাকাছি আছেন বলে জানান এবং কয়েক মিনিট পর সেখানে উপস্থিত হন।

এরপর অভিযানের বিষয়ে খোঁজ নিতে ঢাকা উত্তর সিটির অঞ্চল-২–এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের মুঠোফোনে ১০টা ১৯ মিনিট থেকে ১০টা ২০ মিনিটের মধ্যে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। তিনি ফোন ধরেননি। দেরির বিষয়ে জানতে চাইলে জনসংযোগ বিভাগের কর্মীরা জানান, অভিযানের জন্য পুলিশ ফোর্স সময়মতো না পাওয়ায় কর্মকর্তাদের আসতে দেরি হচ্ছে।

রাজধানীর মিরপুরের কালশী স্টিল ব্রিজ–সংলগ্ন বেড়িবাঁধ এলাকায় অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ