যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইতিহাসে প্রথম পোপ হলেন ‘লিও চতুর্দশ’
Published: 8th, May 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের কার্ডিনাল রবার্ট ফ্রান্সিস প্রেভোস্ট রোমান ক্যাথলিক চার্চের ২৬৭তম পোপ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। ‘পোপ লিও চতুর্দশ’ নামে অভিষিক্ত হয়েছেন তিনি।
সিএনএন লিখেছে, বৃহস্পতিবারের (৮ মে) এই ঐতিহাসিক ঘটনাটি প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নাগরিকের পোপ নির্বাচিত হওয়ার নজির স্থাপন করেছে।
পোপ লিও চতুর্দশ ১৯৫৫ সালে শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি আগস্টিনিয়ান ধর্মীয় গোষ্ঠীর একজন সদস্য। তিনি বহু বছর পেরুতে মিশনারি হিসেবে কাজ করেছেন এবং সেই দেশের নাগরিকত্বও লাভ করেছেন।
২০২৩ সালে তাকে পোপ ফ্রান্সিস ভ্যাটিকানে বিশপ নিয়োগ সম্পর্কিত দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তর ‘ডিক্যাস্টারি ফর বিশপস’-এর প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করেন।
তার নির্বাচনকে ঘিরে সম্মেলন দুই দিন ধরে চলে, যেখানে ১৩৩ জন কার্ডিনাল ভোটাভুটিতে অংশ নেন।
সিস্টিন চ্যাপেলের চিমনি থেকে ঐতিহ্যবাহী সাদা ধোঁয়া উড়ার মাধ্যমে প্রেভোস্টের পোপ নির্বাচিত হওয়ার তথ্য জনসমক্ষে ঘোষণা করা হয়।
এরপর পোপ লিও চতুর্দশ সেন্ট পিটার্স বাসিলিকার বারান্দা থেকে জনগণের উদ্দেশ্যে তার প্রথম অভিভাষণ দেন। তিনি বলেন, “তোমাদের সঙ্গে শান্তি থাকুক।”
পোপ লিও চতুর্দশের নির্বাচনকে পোপ ফ্রান্সিসের উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হচ্ছে, যিনি চার্চে ঐক্য, শান্তি ও সহমর্মিতা জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করে গেছেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৬টায় (বাংলাদেশর সময় রাত ১০টা) সিস্টিন চ্যাপেলের চিমনি থেকে সাদা ধোঁয়া বের হওয়া শুরু করে। তখন সেখানে উচ্ছ্বসিত জনতার ব্যাপক উপস্থিত দেখা যায়।
নির্বাচনের পর নতুন পোপকে সিস্টিন চ্যাপেলের পাশের একটি ছোট কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে তিনি ঐতিহ্যবাহী সাদা পোপের পোশাক পরিধান করবেন। এরপর শীর্ষস্থানীয় কার্ডিনাল ‘হাবেমাস পাপাম (আমাদের একজন পোপ আছেন)’ বলে নতুন পোপের নাম ঘোষণা করেন। এরপর তার নির্বাচিত পোপীয় নাম ঘোষণা করা হয়।
সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে উপস্থিত হাজার হাজার মানুষ ও বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী নতুন পোপের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন।
ঢাকা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বাদ যাচ্ছে না, জুলাই সনদে যা যা আছে
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ (সিপিবি) চারটি বামপন্থী দলের আপত্তির পর জুলাই জাতীয় সনদ–২০২৫ এ পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর ফলে সংবিধান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বাদ পড়ছে না।
প্রায় আট মাস ধরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সনদের অনুলিপি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। সেখানে বলা হয়েছিল, বিদ্যমান সংবিধানের ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানাবলি–সংক্রান্ত ১৫০ (২) অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হবে এবং এ সংশ্লিষ্ট পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তফসিল সংবিধানে রাখা হবে না। এই সিদ্ধান্তে ৯টি দল একমত ছিল না।
এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আজকের সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে না আসার ঘোষণা দেন সিপিবি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদের নেতারা। সনদে কেন স্বাক্ষর করবেন, তার যে কারণগুলো তাঁরা বলেছিলেন, তার মধ্যে একটি ছিল স্বাধীনতার ঘোষণা বাদ দেওয়ার সুপারিশের বিষয়টি। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সংবিধানের ১৫০ (২) অনুচ্ছেদে ক্রান্তিকালীন বিধানে ৬ষ্ঠ তফসিলে থাকা স্বাধীনতার ঘোষণা ‘ডিক্লারেশন অব ইনডিপেনডেন্স’ এবং ৭ম তফসিলে থাকা ‘প্রক্লেমেশন অব ইনডিপেনডেন্স’ বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, যা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি, তা বাদ দিলে বাংলাদেশের অস্তিত্বই থাকে না।
এরপর জুলাই সনদের এই জায়গায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। চূড়ান্ত সনদে বলা হয়েছে, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫০(২) সংশোধন করা হবে এবং এ সংশ্লিষ্ট পঞ্চম ও ষষ্ঠ তফসিল সংবিধানে রাখা হবে না।
সংবিধানের পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তফসিল যুক্ত করা হয়েছিল ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। পঞ্চম তফসিলে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণ। ষষ্ঠ তফসিলে আছে ১৯৭১ সালের ‘২৫ মার্চ মধ্যরাত শেষে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে’ বঙ্গবন্ধুর দেওয়া স্বাধীনতার ঘোষণা। আর সপ্তম তফসিলে আছে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের জারি করা স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র।
অর্থাৎ জুলাই সনদ অনুসারে সংবিধানে সংস্কার হলে তাতে সংবিধানের তফসিলে ৭ মার্চের ভাষণ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা থাকবে না। তবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সংবিধানের তফসিলে থাকবে।
আরও পড়ুনস্বাধীনতার ঘোষণা বাদ দেওয়ার সুপারিশ, তাই জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না সিপিবিসহ চার দল১৬ অক্টোবর ২০২৫আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫–এ স্বাক্ষর করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, কমিশনের অন্যান্য সদস্য এবং ২৪টি রাজনৈতিক দলের নেতারা। সংস্কারের লক্ষ্যে দীর্ঘ আলোচনার মধ্য দিয়ে প্রণীত এই জুলাই জাতীয় সনদ হুবুহু নিচে তুলে ধরা হলো—
জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫–এ স্বাক্ষরের পর সনদের কপি তুলে ধরেন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায়