সরকারের কঠোর নীতিমালার কারণে চলতি বছর বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হতে যাচ্ছেন দেশের প্রকৃত দরিদ্র পরিবারের তিন শতাধিক মেধাবী মেডিকেল শিক্ষার্থী। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ গত ১৫ এপ্রিল এ নীতিমালা জারি করেছে। ফলে চলতি বছর প্রকৃত মেধাবী ও দরিদ্র পরিবারের সন্তানেরা বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির এ সুযোগ পেতে যাচ্ছেন।

এর আগে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস ভর্তি কোটায় প্রভাবশালীদের গরিব আত্মীয়স্বজন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। নীতিমালায় কঠোর বিধান যুক্ত করার কারণে প্রভাবশালীরা এবার দরিদ্র কোটায় ভর্তির সুযোগ নিতে পারবেন না।

আরও পড়ুনচীনের সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি, মিলবে বই কেনারও অর্থ, আইইএলটিসে ৭ হলে আবেদন০৭ মে ২০২৫

স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব সরোয়ার বারী বাসসকে জানান, তিনি নিজেও একজন মেডিকেল শিক্ষার্থী হিসেবে শিক্ষার্থীদের কষ্টের কথা বোঝেন। তাই বছরের শুরুতে যখন মোট ভর্তিযোগ্য আসনের ৫ শতাংশ কোটার প্রসঙ্গ এসেছে, তখন তিনি স্বাস্থ্য উপদেষ্টার অনুমোদন নিয়ে দরিদ্র কোটায় প্রকৃত মেধাবী কিন্তু অসচ্ছলদের খুঁজে বের করতে একটি নীতিমালার প্রয়োজন বলে মনে করেন। সে অনুযায়ী একটি নীতিমালা তৈরি করে তা স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হলে তিনি সেটা অনুমোদন দেন। পরে এই কোটায় ভর্তি হতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের আবেদনগুলো যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট)। তিনি বলেন, ‘এই নীতিমালা পরবর্তী সরকার অনুসরণ করলে আগামী দিনেও প্রকৃত মেধাবী ও অসচ্ছল পরিবারের সন্তানেরা মেডিকেল কলেজে ভর্তিদৌড়ে এগিয়ে থাকতে পারবে।’

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ জানায়, দরিদ্র ও অসচ্ছল কোটায় ২ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। তবে বুয়েটের বাছাইয়ে টিকেছিলেন প্রকৃত মেধাবী অসচ্ছল পরিবারের ৩২৮ জন শিক্ষার্থী। ১২ মে পর্যন্ত সারা দেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে এই ভর্তিপ্রক্রিয়া চলবে।

আরও পড়ুনক্যাডেট কলেজে আপনার সন্তানকে ভর্তি করতে চান?০৭ মে ২০২৫

এদিকে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীর এমবিবিএস পড়ার জন্য যেখানে ২৭ থেকে ৩৫ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়, সেখানে এই দরিদ্র বা অসচ্ছল কোটায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কোনো টাকাপয়সা দিতে হবে না। তাঁদের শুধু মাসে খাওয়া খরচ হিসেবে দুই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ করতে হবে। তাঁদের ভর্তি ফি, টিউশন ফি, সেশন ফি, লাইব্রেরি ফি থেকে শুরু করে প্র্যাকটিক্যাল—সব ধরনের পরীক্ষায় অংশগ্রহণও বিনা মূল্য করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মল্লিকা খাতুন বাসসকে জানান, এ বছর ৬৭টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ৬ হাজার ২৯২টি আসনের বিপরীতে ৫ শতাংশ দরিদ্র কোটায় যাতে প্রকৃত মেধাবীরাই টিকে থাকেন, এ জন্য স্বাস্থ্য উপদেষ্টার অনুমোদন নিয়ে নীতিমালাটি কঠোরভাবে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর ফলে প্রকৃত দরিদ্র মেধাবীরাই এ কোটায় ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।

আরও পড়ুনজাপানের স্টাডি সাপোর্ট স্কলারশিপ, ইংরেজি ও জাপানিজ দুই ভাষার দক্ষতা প্রয়োজন০৮ মে ২০২৫

মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, দরিদ্র কোটা ছাড়াও যাঁরা সাধারণ কোটায় ২৭ থেকে ৩০ লাখ টাকা দিয়ে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁদেরও আগের মতো এককালীন নয়, ভর্তির সময় মাত্র ২০ শতাংশ টাকা দিয়ে ভর্তির সুযোগ করে দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এর কারণ অনেক মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে একসঙ্গে ২৭ লাখ টাকা দিয়ে ভর্তি হওয়া খুবই কষ্টের ব্যাপার। তিনি জানান, আগে সেশন ফি মাসে ১০ হাজার টাকা হিসাবে ৫ বছরের টাকা অর্থাৎ ৬০ মাসের জন্য ৬ লাখ টাকা আগেভাগেই নিয়ে নেওয়া হতো। এ বছর তা প্রতি সেশনের জন্য প্রতি মাসে নেওয়ার বিধান করে হয়েছে। তাই শিক্ষার্থীরা এখন থেকে সেশন ফি হিসেবে এককালীন নয়; বরং প্রতি মাসের সেশন ফির টাকা প্রতি মাসে দেবে, অগ্রিম নয়।

সরকারের ভিজিএফ কার্ডধারী পুরুষ বা নারীর সন্তান, মন্ত্রিসভা বিভাগের জারি করা দরিদ্র এলাকার বাসিন্দার সন্তান, প্রতিবন্ধীর সন্তান, এতিম সন্তান এবং বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তার সন্তান বা বছরে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার চেয়ে কম আয়ের লোকের সন্তান, এভাবে দরিদ্র পরিবার চিহ্নিতকরণের অনেকগুলো ক্যাটাগরি দেওয়া হয় নীতিমালায়।

*নীতিমালা দেখতে এখানে ক্লিক করুন

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ও পর ব রকল য ণ ম ড ক ল কল জ দর দ র ক ট ক ট য় ভর ত ভর ত র স পর ব র র ব সরক র মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

মোহাম্মদপুরে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ২৯

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কয়েকটি অপরাধপ্রবণ এলাকায় বুধবার দিনভর বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অভিযোগে ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে তিনটি ছুরি, দুটি ধারালো চাকু, দুটি লোহার রড, একটি সাইকেল ও ৩০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে নিয়মিত মামলা, মাদক মামলা, পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধী রয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন হীরা (১৯), রফিক (২১), আবদুর রহমান (৩৯), নাবিদ হাসান ওরফে চয়ন (২৬), খোকন (৩১), মনসুর (৩৫), জুয়েল (৩২), সানজু (২২), মিলন (৪২), শাওন (৩৬), নোয়াজ শরীফ (২৮), সেলিম (৩৪), আসাদুজ্জামান ওরফে ইমন (২৩), আনোয়ার হোসেন (৩৬), সজল (৩০), বরকত গাজী (২৮), জুয়েল (৩৮), আরমান (৩০), বাদল (৩৮), কোরবান (২৮), নয়ন (২৭), মাসরুফ (২৩), আল আমিন (২৭), রাকিব (১৮), মিলন (২৫), ওয়াজিদ (৩৬), এরশাদ (২৫), ছালাম ওরফে সামাদ (৩৭) ও দিলসার (৩০)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ