Risingbd:
2025-05-09@19:37:32 GMT

কালো জাতের আখ চাষে সফল মাসুদ

Published: 9th, May 2025 GMT

কালো জাতের আখ চাষে সফল মাসুদ

দেড় বিঘা জমিতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে আখ গাছ। আকারে লম্বা এই আখের বাইরের অংশ দেখতে কালো ও খয়েরি। দেশীয় আখের মতো হলেও এর কাণ্ড নরম। হাত দিয়েই উঠানো যায় ছোবড়া। খেতে মিষ্টি ও রস বেশি হওয়ায় লাভও বেশি। তবে, এই আখ চিনি বা গুড় উৎপাদনের জন্য নয় বরং চিবিয়ে খাওয়ার জন্য।

ফিলিপাইনের কালো জাতের আখ ‘ব্ল্যাক সুগার কেইন’ চাষ করেছেন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা মাসুদ ভূঁইয়া। উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের মাঠে প্রথমবারের মতো এই জাতের আখ চাষ করে সফলতাও পেয়েছেন তিনি। সামুদ ভূঁইয়াকে দেখে এখন আশপাশের কৃষকরাও কালো জাতের আখ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন ।  

মাসুদ ভূঁইয়া জানান, ইউটিউবে ভিডিও দেখে কালো জাতের আখ চাষে আগ্রহী হন তিনি। টাঙ্গাইল থেকে আখের এই জাতটি সংগ্রহ করেন। দেড় বিঘা জমিতে কালো জাতের আখ চাষে এখন পর্যন্ত লাখ খানেক টাকা খরচ হয়েছে তার। প্রথম বছর ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার আখ বিক্রির আশা করছেন মাসুদ ভূঁইয়া। তবে দ্বিতীয় বছর লাভের হার বাড়বে। কারণ প্রথম বছর সব কিছু নতুন করতে হয়েছে।

আরো পড়ুন:

এক কলেজের ৫৩ শিক্ষার্থী পেলেন মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ

‘স্মার্টবয়-২’ তরমুজ চাষে সফল দুই বন্ধু

তিনি বলেন, “এই জাতের আখ ১২ থেকে ১৬ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। একবার বীজ রোপণ করলে তিন-চার বছর আর নতুন করে বীজ রোপণ করতে হয় না। কেটে ফেলা গোড়া থেকে নতুন করে চারা গজায় এবং আখ হয়। ফিলিপাইনের কালো-খয়েরি রঙের আখ চাষের পর অনেকেই বীজ কেনার জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।”

রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক নেহার উদ্দিন শেখ বলেন, “গত বছর মাসুদ ভূঁইয়া দেড় বিঘা জমিতে আখ চাষ শুরু করেন। আমি মনে করেছিলাম, খুব বেশি সুবিধাজনক হবে না। আখ খেয়ে দেখেছি তা খুব নরম এবং মিষ্টি।” 

নিজের আখ ক্ষেতে মাসুদ ভূঁইয়া 

তিনি বলেন, “এলাকার ছোট বড় সবােই মাসুদ ভূঁইয়ার ক্ষেত থেকে খুচরা দরে আখ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কাছের এবং দূরের পাইকাররা তার কাছে গিয়ে পুরো ক্ষেত কিনে নেওয়ার জন্য দরদাম করছেন।”        

একই গ্রামের কৃষক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “মাসুদ ভূঁইয়া কালো জাতের আখ চাষ করেছেন। আখ চাষ ও এর উৎপাদন গ্রামের অনেকে কৃষকের ভালো লেগেছে। তারা এই জাতের আখ চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন। আমি মাসুদ ভূঁইয়ার কাছ থেকে কাটিং সংগ্রহ করে আখ চাষ শুরু করেছি।”

মোক্তারপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আজিজুর রহমান রুবেল বলেন, “মাসুদ ভুঁইয়া কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার কেইন চাষ শুরু করেছেন।” 

উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো.

আক্তারুজ্জামান বলেন, “ব্ল্যাক সুগার কেইন ফিলিপাইনের চিবিয়ে খাওয়া আখের একটি জাত। বাংলাদেশে কয়েক বছর ধরে এই জাতের আখ চাষ হচ্ছে। এটি খুব নরম, মিষ্টি ও রসালো।” 

তিনি বলেন, “কালীগঞ্জে কৃষক মাসুদ ভূঁইয়া টাঙ্গাইল থেকে ফিলিপাইনের আখের কাটিং সংগ্রহ করেছেন। যেহেতু এটি মিষ্টি নরম ও রসালো তাই এতে মাজরা পোকার একটা সমস্যা থাকে। মাসুদ ভূঁইয়া আমাদের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে দেড় বিঘা জমিতে আখ চাষ শুরু করেন। তার কাছ থেকে কাটিং নিয়ে আশেপাশের অন্য  কৃষকরাও এই ফিলিপাইনের আখ চাষ করছেন।” 

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবীদ ফারজানা তাসলিম বলেন, “উপজেলায় এবারই প্রথম ফিলিপাইনের কালো জাতের আখ চাষ হচ্ছে। সব মিলিয়ে এ উপজেলায় ১ হেক্টর জমিতে এই আখ চাষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে এবং কৃষক মাসুদ ভূঁইয়াকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই আখ চাষে কৃষকরা কম খরচে লাভবান হতে পারবেন। এজন্য কৃষি অফিস থেকে সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”

ঢাকা/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সফলত ফসল ফ ল প ইন র চ ষ কর র জন য কর ছ ন করছ ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্ত গণমাধ্যম ছাড়া আইনের শাসন, গণতন্ত্র কিছুই থাকে না

মুক্ত গণমাধ্যম ছাড়া আইনের শাসন, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার– কোনোকিছুই থাকে না। বর্তমান সরকার সাংবাদিকতার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। ফ্যাসিস্ট সরকার গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে আইয়ামে জাহেলিয়াত কায়েম করেছিল। সংবাদ সম্মেলনগুলোকে তারা প্রশংসা-স্তুতির বিষয়ে পরিণত করে দেশের মানুষকে অপমান করত।

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) ২০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে খুনের মামলা দেওয়া প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, মিথ্যা মামলার বাদীদের বিরুদ্ধে প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ব্যবস্থা তখনই নেওয়া যায়, যখন মামলাটি আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। আমরা দায়িত্বে থাকলে ব্যবস্থা নেব, তা না হলে যারা ক্ষমতায় আসবে, আশা করি তারা নেবে। তিনি বলেন, ‘আমরা তদন্ত ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার না করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি।’

আসিফ নজরুল বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে দলদাসে পরিণত করা হয়েছে। অথচ ৯০ দশকে স্বৈরশাসক এরশাদের পতনে এই সংগঠনগুলোর দারুণ ভূমিকা ছিল। তাদের নিরপেক্ষভাবে চলতে দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে নোয়াব সভাপতি এ. কে. আজাদ বলেন, আমরা একটি স্বাধীন ও দলনিরপেক্ষ সাংবাদিকতার পরিবেশ চাই এবং এই পরিবেশ আগামীতেও অক্ষুণ্ন থাকবে– এমন নিশ্চয়তা চাই। তিনি বলেন, বর্তমানে সংবাদপত্র নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ছাপা সংবাদপত্র এমনিতেই রুগ্ণ শিল্পে পরিণত হয়েছে। ছাপা পত্রিকার সার্কুলেশন ও বিজ্ঞাপন বাজার ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। নোয়াব সভাপতি জানান, করোনা মহামারির সময় সব শিল্প প্রণোদনা পেলেও সংবাদপত্র শিল্প কিছুই পায়নি।

নোয়াবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন সাংবাদিকতা আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। কোনো সরকারকে আমরা বোঝাতে পারিনি, সমালোচকরাই আপনাদের সত্যিকারের বন্ধু। তারা কেবলই প্রশংসা পছন্দ করেন। তিনি বলেন, মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার জন্য এরশাদ সরকারের পতনের পর থেকে আমরা চেষ্টা করছি। গত ১৫ বছর তার আরও অবনমন ঘটেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ২৬৬ জন সাংবাদিক খুনের মামলার আসামি হয়েছেন। এটা সারাবিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। মব কালচারের কারণে এসব সাংবাদিক অফিসে যেতেও ভয় পান। এই পরিবেশে স্বাধীন সাংবাদিকতা হতে পারে না।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা দেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, আমরা এ থেকে উত্তরণের চেষ্টা করছি। পুলিশি তদন্ত সবসময় সঠিক গতিতে এগোয় না। অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করছে মুক্ত গণমাধ্যম নিশ্চিত করতে। তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের বেতন-ভাতা নিশ্চিত করতে নোয়াবের প্রতি আহ্বান জানান। 

বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি আবদুল হাকিম। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন নোয়াবের সহসভাপতি এ এস এম শহীদুল্লাহ খান বাদল। অনুষ্ঠানের শুরুতে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ওয়ার্দা আশরাফ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ইনকিলাব সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দীন, প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ, মানবজমিনের সম্পাদক মাহবুবা চৌধুরী, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ ও সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী।

বিশিষ্টজনের মধ্যে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকসহ অংশ নেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন রহমান, সায়হাম গ্রুপের এমডি সৈয়দ শাফকাত আহমেদ, পূবালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদার, বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ, অর্থনীতিবিদ মাসরুর রিয়াজ, বাংলাদেশ চেম্বারের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রীতি চক্রবর্তী, ওরিয়ান গ্রুপের এমডি সালমান করিম, বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ