পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির তথ্য নিশ্চিত করেছে ভারত। শনিবার ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই ‘ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রে সব ধরণের গুলিবর্ষণ এবং সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করবে।”
আরো পড়ুন:
ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত: ট্রাম্প
মোদির বাসভবনে চলছে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি কোনো জাদুর কাঠি নয়: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করার কথা প্রায়ই বলা হয়। সবাই বলে, এফটিএ জাদুর কাঠি। বাস্তবে এফটিএ কোনো জাদুর কাঠির সমাধান নয় বা মহৌষধ নয়।’
বিষয়টি বোঝাতে বাণিজ্য উপদেষ্টা উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘চীনের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য আমদানিনির্ভর। এখানে যা লেনদেন হয়, তা থেকে ২০–২২ হাজার কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ রাজস্ব তৈরি হয়। চীনের বাজারে ৯৯ শতাংশ শুল্কমুক্ত বাণিজ্য–সুবিধা পাই।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা চীনের সঙ্গে এফটিএ করলে হারব। আমরা জিততে পারব না। চীন প্রচণ্ড চাপ দিয়েছে এফটিএ করার জন্য। আমাদের এফটিএ করা কি ঠিক হবে?’
আজ বুধবার প্রথম আলোর আয়োজনে ‘রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গোলটেবিল বৈঠক আয়োজনে সহায়তা করেছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।
এফটিএ সম্পর্কে শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বে থেকে আমার কাছে মনে হয়, এফটিএ কোনো জাদুর কাঠি নয়। আপনাদের ধারণা, আমি জাপানের সঙ্গে এফটিএ সই করছি। আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সই করছি।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যখন কোথাও মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে যায়, তখন এটি কেবল বাণিজ্যচুক্তি নয়। এখানে অনেক কিছু ভাবতে হবে যে আমাদের বিদেশের বাজারে কী পণ্য দেওয়ার আছে। আমাদের একটাই পণ্য তৈরি পোশাক। আমাদের যখন ছাড় দিতে হবে, তখন ভাবতে হয়। কী ছাড় দেব এবং এর বিপরীতে আমরা কী পাব।’
উপদেষ্টার মতে, বাণিজ্যচুক্তি এত সহজ নয়, এটা অনেক জটিল হিসাব। অনেকে এফটিএ মানে ধরে নেন, এফটিএ জাদুর কাঠি। সব সমস্যার একটাই বটিকা। এটি দিয়ে সব সমস্যার সমাধান হবে, তা ঠিক নয়।
এত খেলাপি ঋণ বহু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশেও নেই
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘গত ১৬ বছরের দুর্বৃত্তায়নে অর্থনীতিতে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে, তাতে সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ হয়েছে। এত খেলাপি ঋণ পৃথিবীর বহু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশেও নেই।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময়ে ১২ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল। এর মধ্যে ছয় বিলিয়ন ডলার বিদেশি দায় অপরিশোধিত ছিল। এর মানে তখন নিট রিজার্ভ ছয় বিলিয়ন ডলার ছিল। এটি এক মাসের কম সময়ের রিজার্ভ ছিল। এখন তিন-চার মাসের রিজার্ভ আছে। যে ক্ষত তৈরি হয়েছে, সেখান থেকে উত্তরণ করতে চাই। উত্তরণের ক্ষেত্রে ক্ষতের মূল বিষয় ভুলে গেলে আমরা ভুল করব।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, সহজ ব্যবসা ও ব্যবসার পরিচালন ব্যয়—এই দুটি বিষয় বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায় ভালো করার জন্য এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে নানা সমস্যা উঠে এসেছে। নির্দিষ্ট কিছু নীতিমালার কারণে এসব ক্ষেত্র সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যা চিহ্নিত করা প্রয়োজন।
কারওয়ান বাজারের প্রথম আলো কার্যালয়ে এই গোলটেবিল বৈঠক হয়। এতে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য নাহিয়ান রহমান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ, বার্জার পেইন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী, রেনাটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ এস কায়সার কবির, দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি) বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব উর রহমান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়েমা হক বিদিশা, চামড়া পণ্য, জুতা উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সমিতির (এলএফএমইএবি) সহসভাপতি মো. নাসির খান, বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহজাহান চৌধুরী এবং বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সামিম আহমেদ।
গোলটেবিল সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন।