মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর সবচেয়ে বড় পরাজয়ের স্বাদ পেলেন লিওনেল মেসি। মিনেসোটা ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে আর্জেন্টাইন তারকার দলটি।

দ্বিতীয়ার্ধে একমাত্র গোলটি করে দলকে কিছুটা স্বস্তি দিতে চেয়েছিলেন মেসি। কিন্তু ম্যাচজুড়ে দুর্বল রক্ষণভাগ আর স্ট্রাইকারের অভাবে ছন্দ হারায় ইন্টার মায়ামি। ফলে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে শেষ পাঁচ ম্যাচে এটি তাদের চতুর্থ হার, যার মধ্যে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়ানোর চেয়ে নিজেদের জাল থেকে বল কুড়াতে হয়েছে ১৪ বার!

সুয়ারেজ ইনজুরিতে পড়ায় স্বীকৃত স্ট্রাইকার ছাড়াই একাদশ সাজান কোচ হাভিয়ের মাসচেরানো। শুরু থেকেই তার খেসারত দিতে থাকে মায়ামি। ম্যাচের ৩২তম মিনিটে হোয়াকিন পেরেইরার পাস থেকে কার্লোস হার্ভে বল বাড়িয়ে দেন দক্ষিণ আফ্রিকান ফরোয়ার্ড বোঙ্গোকুহলে লংওয়ানের কাছে, যিনি প্রথম গোলটি করেন।

ছয় মিনিট পরই গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন মেসি, কিন্তু তার নিচু শটটি ছিল দুর্বল এবং প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের জন্য সহজ শিকার। বিরতির আগেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে মিনেসোটা। মাইকেল বক্সওয়েলের লং থ্রো থেকে হেড করেন নিকোলাস রোমেরো, যার পর অ্যান্থনি মারকানিচ গোল করে স্কোরলাইন করেন ২-০।

বিরতির পর তৃতীয় মিনিটেই মেসি লক্ষ্যভেদ করেন। জর্ডি আলবার পাস থেকে দারুণভাবে বল জালে পাঠান তিনি। তবে সেটিই ছিল মায়ামির একমাত্র সান্ত্বনা। এরপর আরও দুইবার জাল কাঁপায় মিনেসোটা। ৬৮ মিনিটে কর্নার থেকে নিজেদের ভুলে আত্মঘাতী গোল করেন ডিফেন্ডার মার্সেলো ভেইগান্ট। আর ৭০ মিনিটে রবিন লড চতুর্থ গোলটি করে ম্যাচে ইন্টার মায়ামির সব প্রত্যাশার ইতি টানেন।

ম্যাচ শেষে হতাশ কোচ মাসচেরানো বলেন, ‘হারটা আমাদের জন্য খুব কষ্টের। জানতাম, মিনেসোটা এই ধরণের চ্যালেঞ্জ দিতে পারে এবং সেটাই সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে আমাকে।’ তিনি জানান, নির্ধারিত ফরোয়ার্ড হিসেবে ফাফা পিকাউল্টের ওপর নির্ভর করলেও ম্যাচের আগমুহূর্তে তিনি মাইগ্রেনে আক্রান্ত হওয়ায় বিকল্প পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

সব দায় নিজের কাঁধে নিয়ে মাসচেরানো বলেন, ‘যদি খেলোয়াড়েরা মাঠে নিজেদের মান অনুযায়ী খেলতে না পারে, তাহলে সেটা কোচ হিসেবে আমারই ব্যর্থতা। আমি দায় নিচ্ছি।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইন ট র ম য ম

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ