এপ্রিলে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। ভারত এই ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলে পাকিস্তান হামলার সঙ্গে যে কোনো ধরণের যোগসূত্রের কথা অস্বীকার করেছিল। এরপরেও কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই ৭ মে রাতে ভারত পাকিস্তানের মাটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। আগে থেকেই প্রস্তুত পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ভারতের এই হামলা প্রতিহত করেছিল। ঘটনার তিন দিন পর প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তান ১০ মে ভোররাতে ‘অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুস’ নামে ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় সমন্বিত ও পরিকল্পিত হামলা চালায়। তবে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১০ মে বিকেলে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ভারত-পাকিস্তান। এই যুদ্ধে কোনো দেশই তাদের প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির তথ্য এখনো প্রকাশ করেনি। তবে উভয় দেশের সংবাদমাধ্যম ও সামরিক কর্মকর্তাদের দেওয়া পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে রাইজিংবিডি যুদ্ধে ভারত ও পাকিস্তানের ক্ষয়ক্ষতির একটি আনুমানিক চিত্র পেয়েছে।

পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ড ও আজাদ কাশ্মীরে সামরিক অভিযানে ভারতের অত্যাধুনিক রাফায়েল যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছিল। এগুলো থেকে ছোড়া হয় স্টর্ম শ্যাডো মিসাইল এবং হ্যামার বোমা। এর পাশাপাশি ড্রোন হামলা চালিয়েছে ভারত। এতে পাকিস্তানের দুই থেকে তিনটি বিমান ঘাঁটিসহ বেশ কয়েকটি সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।

ভারতের হামলা ঠেকাতে পাকিস্তান জে-১০সি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে এবং কোরাল ইলেকট্রনিক জ্যামিং সিস্টেম ব্যবহার করে। পাকিস্তানের দাবি, তারা তিনটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান, একটি মিগ-২৯ ও একটি সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে এবং ৭৭টি ভারতীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে। এছাড়া ভারতের এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, সাতটি বিমান ঘাঁটি ধ্বংসের দাবি করেছে পাকিস্তান।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাত্র ৮৭ ঘণ্টা ২৫ মিনিটের এই সংঘাতে ভারতের অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৮৩ বিলিয়ন ডলার। ৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত ভারতের শেয়ারবাজারে ক্ষতি হয়েছে ৮২ বিলিয়ন ডলার। উত্তর ভারতের আকাশসীমা বন্ধ থাকায় প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে বিমান চলাচলে। আইপিএল বন্ধ হওয়ায় আর্থিক ক্ষতি হয় ৫০ মিলিয়ন ডলার। সামরিক অভিযানে ব্যয় হয়েছে ১০০ মিলিয়ন ডলার, যুদ্ধবিমান হারিয়ে ক্ষতি হয়েছে ৪০০ মিলিয়ন ডলার।  লজিস্টিক ও বাণিজ্য খাতে ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে ২ বিলিয়ন ডলার।

অন্যদিকে পাকিস্তানের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় চার বিলিয়ন ডলার। করাচি শেয়ারবাজারে সূচক পড়ে গিয়ে ক্ষতি হয় ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) বন্ধ থাকায় ক্ষতি হয়েছে ১০ মিলিয়ন ডলার। আকাশসীমা বন্ধ থাকায় ক্ষতি হয়েছে ২০ মিলিয়ন ডলার, আর সামরিক খাতে প্রতিদিন ২৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ের পাশাপাশি ড্রোন বিধ্বস্ত ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়তে ব্যয় হয় ৩০০ মিলিয়ন ডলার।

তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে পাকিস্তানের চেয়ে ২০ গুণ বেশি ক্ষতি হয়েছে ভারতের। 

এতো গেলো আর্থিক ক্ষতির কথা। এবার আসুন, প্রাণহানির চিত্রটি দেখি। 

ভারতের মতে, পাকিস্তানের হামলায় তাদের পাঁচ সেনা নিহত, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের পাঁচ জওয়ান আটক এবং ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ৫৯ জন আহত হয়েছে। তবে পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, ২৫-৫০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে।

ভারতের দাবি  অনুযায়ী, তারা পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী রেঞ্জারের এক সদস্যকে আটক করেছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বা ও জইশ-ই-মোহাম্মদের ৭০ সদস্যকে হত্যা করেছে। আর পাকিস্তানের দাবি, ভারতীয় হামলায় তাদের বিমানবাহিনীর পাঁচ সদস্য নিহত, চার সেনা আহত এবং ৩৩ বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ৫৮ জন আহত হয়েছে।

এসব তথ্য কোনো তৃতীয় সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে উভয় দেশের দাবির দিকে যদি লক্ষ্য করা যায়, তাহলে দেখা যাবে এই যুদ্ধে ভারতের বেশি সংখ্যক সেনা নিহত হয়েছে। অর্থাৎ ক্ষতির পাল্লা ভারতের দিকেই বেশি।

ভারত -পাকিস্তানের এই শত্রুতা তাদের স্বাধীনতার পর থেকেই। যুদ্ধ যে কখনো ভালো ফল কিংবা স্থায়ী সমাধান নিয়ে আসে না তা বোধ হয় এই দুই দেশের নেতারা কখনোই বুঝবেন না।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

চুরির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ

পাবনার ঈশ্বরদীতে অটোরিকশা চুরির টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণ এবং একজনকে ছুরিকাঘাত করার ঘটনা ঘটেছে। রোববার রাতে শহরের আলহাজ মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সন্ধ্যার পর আলহাজ ক্যাম্প এলাকায় পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মো. তারেক ও মো. সাইদের মধ্যে চুরি করে আনা অটোরিকশা বিক্রির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। তাদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান একই এলাকার মো. মাসুদ, মো. রিপন ও মো. রনি। এক পর্যায়ে মাসুদ, রিপন ও রনি লাঠি দিয়ে তারেক ও সাইদকে মারধর করেন। তারা তারেকের মাথায় ছুরিকাঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় স্বজনরা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। 

হামলার ঘটনার জেরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে আলহাজ মোড়ে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল লাঠিসোটা নিয়ে মাসুদ, রিপন, রনিসহ অভিযুক্তদের ধাওয়া দেয়। এ সময় হামলাকারীরা বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঈশ্বরদী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় অভিযুক্তরা পালিয়ে যান। 

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম শহিদ বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ