২০ মে চা-শ্রমিক দিবসে সবেতন ছুটি ঘোষণার দাবি
Published: 12th, May 2025 GMT
২০ মে চা-শ্রমিক দিবসে সবেতন ছুটি ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ফেডারেশন। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় সিলেটের খান চা-বাগানে আয়োজিত এক সভায় এ দাবি জানান বক্তারা।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে গতকাল সন্ধ্যা সাতটায় কর্মিসভা শুরু হয়। ফেডারেশনের নেতা উপেন রায়ের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা উজ্জ্বল রায় ও আবু জাফর, ফেডারেশনের জেলা আহ্বায়ক বীরেন সিং, জেলা শাখার নেতা শীপন পাল, রতন বাউরি, সুমি রায়, নিখিল দাস, হৃদয় দাস প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, ব্রিটিশ বাগানমালিকদের প্রতারণা, বঞ্চনা ও শোষণের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ঐতিহাসিক ‘মুল্লুক চলো’ আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি ঘটে ১৯২১ সালের ২০ মে। ইতিহাসে যুক্ত হয় শ্রমজীবী মানুষকে পৈশাচিকভাবে হত্যার একটি ঘৃণ্যতম ঘটনা। চা-শ্রমিকদের জন্য ঐতিহাসিক দিনটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সবেতন ছুটি ঘোষণার আহ্বান রইল।
ব্রিটিশ-পাকিস্তানিদের তাড়িয়ে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও চা-শ্রমিকদের বঞ্চনার শেষ হয়নি বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। তাঁরা বলেন, শ্রমিকদের জন্য শিক্ষা ও চিকিৎসার ন্যূনতম আয়োজন নেই চা-বাগানে। নেই ভূমিরও মালিকানা।
কর্মিসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০ মে চা-শ্রমিক দিবস হিসেবে প্রতিটি চা-বাগানে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, ২৩ মে সিলেট নগরের দরগাগেট এলাকার কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের (কেমুসাস) সাহিত্য আসর কক্ষে মতবিনিময় সভা এবং ২৫ মে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় চা-শ্রমিক কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণে চাঁদা দাবি সন্ত্রাসীদের
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন প্রশাসনিক-একাডেমিক ভবনের কাজে চাঁদা দাবি করে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার হুমকি দিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে এ দুটি ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোতোয়ালি থানায় জিডি করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ক্যাম্পাসে বর্তমানে ১৬ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন তলা প্রশাসনিক ভবন ও ১৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন তলা একাডেমিক ভবনের নির্মাণ চলছে। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ভবন দুটির নির্মাণ চলছে। উভয় ভবনের নির্মাণকাজ পেয়েছে চট্টগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমই-আরবিজেবি। গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সাতজনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী ক্যাম্পাসে ঢুকে ঠিকাদারের কর্মচারীদের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। পরে সন্ত্রাসীরা নির্মাণ শ্রমিকদের থাকার জন্য তৈরি করা টিনশেডের ঘরে ঢুকে তাদের ১০ থেকে ১২টি মোবাইল ফোনসেট ছিনিয়ে নেয়। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার আগে চাঁদা না দিলে নির্মাণকাজ বন্ধের হুমকি দেয়। চাঁদা না দিয়ে কাজ চলমান রাখলে পরবর্তী সময়ে ক্ষতি হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পর ঠিকাদারের লোকজন ও শ্রমিকরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানায়।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া প্রায় ছয় মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ২৬ জুন রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে সাত সন্ত্রাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক ধরে হেঁটে ক্যাম্পাসে ঢুকছে। তাদের মধ্যে চারজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। ক্যাম্পাসে ঢোকার মুখে চেয়ারে বসা নিরাপত্তা প্রহরী অস্ত্রধারীদের দেখে উঠে দাঁড়ান। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাঁর কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। অস্ত্রধারীরা শ্রমিকদের ঘরে ঢুকে কয়েক মিনিট অবস্থান করার পর একই পথে চলে যায়।
এ ব্যাপারে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাঙামাটি কোতোয়ালি থানায় জিডি করেছে। পাশাপাশি অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকেও জানানো হয়েছে বিষয়টি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সন্ত্রাসীরা আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কাজে দুইবার চাঁদা দাবি করেছিল। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ভবনের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী মীর হোসেন জানান, চাঁদা না দেওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে বলেছে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের কাউকেই চিনতে পারিনি। এরা কোনো দলের কিনা জানি না।
কোতোয়ালি থানার ওসি সাহেদ উদ্দীন জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আতিয়ার রহমান এ ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন, এর আগে সিসিটিভি ফুটেজ না থাকায় কারা চাঁদা চাইতে এসেছিল জানা যায়নি। তবে এবার কারা এসেছে আমরা জানতে পেরেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে দেখবেন।