জুন মাসের আন্তর্জাতিক ফুটবল সূচিতে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচ লিওনেল স্কালোনি কঠিন এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। কারণ, বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের গুরুত্বপূর্ণ দুটি ম্যাচের সময়ই তার মূল স্কোয়াডের প্রায় ১৪ জন শীর্ষ তারকা জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামতে না-ও পারেন।

আগামী ৬ জুন চিলির বিপক্ষে এবং ১০ জুন কলম্বিয়ার সঙ্গে হোম ম্যাচে খেলবে আলবিসিলেস্তেরা। তবে একই সময়ে শুরু হচ্ছে ১৪ জুন থেকে নতুন ফরম্যাটের ক্লাব বিশ্বকাপ, যেখানে অংশ নিচ্ছে ৩২টি ক্লাব। স্কালোনির বিশ্বকাপজয়ী দলের একাধিক সদস্য এই ক্লাবগুলোর গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়ায়, জাতীয় দলে তাদের উপস্থিতি নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা।

যদিও এই ম্যাচগুলো ফিফা স্বীকৃত ক্যালেন্ডারের অন্তর্ভুক্ত, তাই ক্লাবগুলোর খেলোয়াড় ছাড়ার নিয়ম রয়েছে, বাস্তব পরিস্থিতি বলছে— ক্লাব বিশ্বকাপের গুরুত্বের কারণে অনেক ক্লাবই চায় না তাদের তারকারা জাতীয় দলে খেলুক।

আরো পড়ুন:

বার্সার সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়ালেন ফ্লিক

ব্রাজিলের নতুন কোচ আনচেলত্তি, দায়িত্ব নিচ্ছেন চলতি মাসেই

জুনের সেই আন্তর্জাতিক বিরতিতে যারা আর্জেন্টিনা স্কোয়াডে না থাকার শঙ্কায় রয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন— লিওনেল মেসি (ইন্টার মায়ামি), জুলিয়ান আলভারেজ (ম্যানচেস্টার সিটি), লাউতারো মার্টিনেজ (ইন্টার মিলান), এনজো ফার্নান্দেজ (চেলসি), নিকোলাস ওটামেন্দি (বেনফিকা), রদ্রিগো ডি পল, নাহুয়েল মোলিনা, অ্যাঞ্জেল কোরেয়া, জুলিয়ানো সিমিওনে (অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ), নিকোলাস গঞ্জালেজ (জুভেন্টাস), গঞ্জালো মন্টিয়েল, মারকোস আকুনা, জার্মান পেজ্জেলা ও লুকাস মার্টিনেজ কোয়ার্তা (রিভার প্লেট)।

এই তারকাবিহীন অবস্থায় জাতীয় দলের শক্তি কিছুটা কমে আসবে ঠিকই, তবে স্কালোনির সামনে এটি হতে পারে ভবিষ্যতের জন্য নতুন প্রতিভা আবিষ্কারের সেরা সময়। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের এই সময়েই তিনি চাইলে তরুণ এবং অনভিজ্ঞ ফুটবলারদের মাঠে সুযোগ দিয়ে তাদের সামর্থ্য যাচাই করতে পারেন।

সব মিলিয়ে, আর্জেন্টিনার জন্য জুন মাসের এই সূচি হয়ে দাঁড়াচ্ছে এক রকম পরীক্ষা, যেখানে চোট, ক্লাব ব্যস্ততা ও জাতীয় দলের প্রয়োজন—সবকিছুর ভারসাম্য রক্ষা করাটাই হবে স্কালোনির সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল আর জ ন ট ন জ ত য় দল র আর জ ন ট ন ব শ বক প

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ