আনুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে ভোট আরও বেশি স্বৈরতন্ত্রের দিকে ঠেলে দেবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এতে স্থানীয় পর্যায়ে নেতা ও নেতৃত্ব তৈরি হবে না বলেও মনে করেন তিনি। 

বৃহস্পতিবার সকালে রংপুর নগরীর গ্রান্ড হোটেল মোড়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যূত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রপিং অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। 

রুহুল কবীর রিজভী বলেন, পিআর পদ্ধতিতে ভোটাররা দলকে ভোট দেবে। পরবর্তীতে দল তাদের প্রার্থী বেছে সেই আসনে দেবে। এতে এলাকায় আর কেউ নেতা হতে পারবে না। স্থানীয় পর্যায়ে আর কেউ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়বে না। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি দেশকে আরও বেশি স্বৈরশাসনের দিকে ঠেলে দেবে। 

চাঁদাবাজি-দখলবাজির সঙ্গে যেন বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম শোনা না যায়- সতর্ক করে  রিজভী বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি হিসেবে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। আমাদের দ্বারা যেন কোন সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। চাঁদাবাজি, দখলবাজির সঙ্গে যেন কোন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীর নাম শোনা না যায়। মানুষ যেন আমাদের কোন আচারণে ব্যথিত না হয়, সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। 
তিনি বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের গত ১৬ বছর দূর্বিসহ দিন গেছে। কোন তরুণ রাতে ঘুমাতে পারেনি। শেখ হাসিনার করাল গ্রাস থেকে কেউ নিস্তার পায়নি। শহীদ আবু সাঈদ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তাক করা বন্দুকের সামনে বুক চেতিয়ে আত্মদান করেছিলেন। তাঁর আত্মদানের মধ্য দিয়ে সারাদেশে তীব্র আন্দোলন গড়ে ওঠে। আমরা অনেক তরুণ ছাত্রদের হারিয়ে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। 

অনুষ্ঠানে রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন নবী ডন, ড্যাব মহানগরের আহ্বায়ক ডা.

নিখিলেন্দ্র শংকর গুহ, রংপুর মেডিকেল কলেজের আহ্বায়ক ডা. মাহমুদল হক সরকার, জেলা ড্যাবের আহ্বায়ক ডা. খালেকুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত ব এনপ ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ