আষাঢ়ের এক বৃষ্টিস্নাত সকালে মেঘের গর্জন ও টিপ টিপ বৃষ্টিকে সাথে নিয়ে তিতুমীর কলেজ ক্যাম্পাসে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে ন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ফেস্টিভ্যালের রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম।

সরকারি তিতুমীর কলেজ ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাবের ( জিটিসিইএলসি) সৌজন্যে শুরু হতে যাচ্ছে ন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ফেস্টিভ্যাল ২০২৫। সরকারি তিতুমীর কলেজ ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব একটি সৃজনশীল কার্যক্রম ও মেধাবিকাশের প্ল্যাটফর্ম। উক্ত ক্লাবটি তিতুমীর কলেজের একটি অন্যতম সক্রিয় ও শৃঙ্খলার প্রতিচ্ছবি। ইংরেজি ভাষাগত দক্ষতা অর্জন ও চর্চা এবং পারস্পরিক মিল বন্ধন এ ক্লাবের মূল লক্ষ্য।

আগামী ১০ থেকে ১৩ জুলাইয়ে  শুরু হবে  ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ফেস্টিভ্যালের বাছাই পর্ব।যার রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। উক্ত ফেস্টিভ্যালকে সামনে রেখে গঠন করা হয়েছে তিন দল বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি। কর্তৃপক্ষ ও উক্ত কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করতে পারবে দেশের যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা। ক্লাবটির সভাপতি মোঃ আল আমিন বলেন,

“আমাদের এই ফেস্টিভ্যাল শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, এটি ইংরেজি ভাষায় আত্মপ্রকাশ ও দক্ষতা বিকাশের এক উন্মুক্ত মঞ্চ।”  ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক মো.

সাইফুল ইসলাম রাকিব  জানান, “দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এবারের ফেস্টিভ্যাল হয়ে উঠবে শেখা, ভাবনা আর বন্ধনের এক ঐতিহাসিক মিলনমেলা।"

এ বছরের ফেস্টিভ্যালে থাকছে সাতটি ইন্ডিভিজুয়াল ইভেন্ট ও একটি গ্রুপ ইভেন্ট। এটি সৃজনশীলতা, প্রতিযোগিতা ও পারস্পরিক সংযোগের সুযোগ প্রদান করবে। ইন্ডিভিজুয়াল ইভেন্সগুলোর মধ্যে থাকছে, পাবলিক স্পিকিং, ইংরেজি কবিতা আবৃত্তি, স্পেলিং বি, ভিজুয়াল ন্যারেশন, উপস্থিত বক্তৃতা, গ্রামার ও ভোকাবুলারি প্রতিযোগিতা। এছাড়া গ্রুপ ইভেন্ট এর মধ্যে থাকছে ইংরেজি বিতর্ক প্রতিযোগিতা। উক্ত ফেস্টিভ্যাল ইন্ডিভিজুয়াল ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে  ১৫০ থেকে শুরু করে ২০০ টাকা এবং গ্রুপ ইভেন্টে নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি দল ৫০০ টাকা। রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলমান থাকবে আগামী ৯ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত। এই ফেস্টিভ্যালের পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৪ শে জুলাই, যা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও আয়োজক কমিটির জন্য  একটি বড় ইতিহাস রচনা করতে যাচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ত ম র কল জ

এছাড়াও পড়ুন:

গ্যালারি কায়ার আলোকপথ

আলো ও ছায়ার বুননে শিল্পের যে রূপরেখা আঁকা হয়, তার গভীরতায় ডুবে থাকা এক বিশেষ উপলক্ষ হলো ‘গ্যালারি কায়ার ২১তম বার্ষিকী’। ঢাকার অন্যতম শিল্পপ্রতিষ্ঠানটি তাদের যাত্রার দুই দশকেরও বেশি সময় উদযাপন করছে এক অনন্য প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে। যেখানে স্থান পেয়েছে ৩৫ জন আধুনিক ও সমসাময়িক শিল্পীর অসামান্য কাজ। ১৯৫২ থেকে ২০২৫– সাত দশকের শিল্পচর্চার বিস্তীর্ণ আয়তন ও গহিন ভাবনা জগৎকে ধারণ করেছে এই প্রদর্শনী, যা চলছে গ্যালারির নিজস্ব প্রাঙ্গণে, ২৭ জুন থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত।
এই বিশেষ প্রদর্শনী যেন কায়ার দীর্ঘ শিল্পযাত্রার এক সজীব অনুরণন। একদিকে যেমন এখানে আছে বিখ্যাত শিল্পীদের মাস্টারপিস, তেমনি রয়েছে তরুণ প্রজন্মের উদ্দীপনামূলক কাজও। একটি প্রদর্শনী শুধু চোখ নয়, মনকে ছুঁয়ে যায়, যদি সেখানে গল্প থাকে– রঙে, রেখায়, রূপে ও অভিব্যক্তিতে। গ্যালারি কায়ার এই আয়োজন সেই গল্পেরই নাম।
প্রদর্শনীর গ্যালারিতে হাঁটতে হাঁটতে দেয়ালে ঝোলানো কাজগুলো দেখে যেন মনে হয় প্রতিটি শিল্পকর্ম সময়ের প্রতিধ্বনি। 
চোখে পড়ে মোহাম্মদ ইকবালের ‘আননোন ফেস’ (২০১৮)। ২২x৩০ ইঞ্চির এই মিশ্র মাধ্যমের চিত্রকর্মটি যেন এক অপার প্রশ্নচিহ্ন। এক অজানা মুখাবয়ব, যার গভীর চাহনিতে ধরা পড়ে দর্শকের নিজস্ব আত্মদর্শনের ছায়া। টেক্সচার ও রঙের স্তরবিন্যাসে মুখটি হয়ে ওঠে আত্মানুসন্ধানের এক প্রতীক। আহমেদ শামসুদ্দোহার ‘সুন্দরবন’ (২০২৪) ছবিটি ক্যাটালগের পেছনের প্রচ্ছদে। সবুজ, ছায়া ও আলোয় নির্মিত ৩০x৩০ ইঞ্চির এই অ্যাক্রেলিক চিত্র প্রকৃতির সত্তা তুলে ধরে। সুন্দরবনের প্রাণবন্ততা যেন ক্যানভাস ছাপিয়ে ছড়িয়ে পড়ে দর্শকের মনে।
অন্যদিকে আবুল বারক আলভীর ‘ফ্রম দ্য নেচার-১’ (২০২৫) ছবিটি বিমূর্ততার এক অপূর্ব ব্যঞ্জনা। ৩০x৪২ ইঞ্চির এই অ্যাক্রেলিক ক্যানভাসে জৈবিক রূপ ও প্রকৃতির শক্তি এক অনন্ত প্রবাহের মতো গলে পড়ে। শিল্পীর তুলির টানে সেখানে ধরা পড়ে প্রকৃতির মৌল গঠন ও আত্মা। স্মৃতি ও ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রদর্শনীতে রয়েছে একাধিক অনন্য কাজ। দেবদাস চক্রবর্তীর ‘লাভ’ (১৯৯২) নামে ক্ষুদ্র কালিচিত্রটি (৫x৮ ইঞ্চি) এক নিভৃত প্রেমের মুহূর্তকে জীবন্ত করে তোলে। এই ছবিতে ভালোবাসা শব্দহীন কিন্তু গভীর। ফরিদা জামানের ‘সুফিয়াস বার্ড’ (২০২৫) আকারে যেমন বিশাল (৩৫.৫x৩৫.৫ ইঞ্চি), তেমনি ভাবগত দিক থেকে আধ্যাত্মিক। উড়ন্ত পাখির রূপকতায় শিল্পী যেন জীবনের মুক্তি ও আত্মার পরিশুদ্ধির কথা বলেন, রং ও রূপের পরাবাস্তব ব্যবহারে।
শিল্পী হাশেম খানের ‘ক্রেন’ (২০২৪) ছবিতে দেখা যায় রাজসিক পাখির দৃশ্য, ৪২x৩০ ইঞ্চির এই অ্যাক্রেলিক ক্যানভাস যেন প্রকৃতির নরম কোমলতা ও মহিমার প্রতিচ্ছবি। প্রাণবন্ত রেখায় ধরা পড়ে জীবনের ছন্দ।
প্রদর্শনীর পুরোনো চিত্রকর্মের মধ্যে মুর্তজা বশীরের ‘ব্লাডি ২১স্ট’ (১৯৫২)– এক জ্বলন্ত সামাজিক-রাজনৈতিক চেতনার দলিল। ভাষা আন্দোলনের রক্তাক্ত ইতিহাস এখানে ফিরে আসে কালো রেখার উত্তাল শক্তিতে।
কাইয়ুম চৌধুরীর ‘ফ্রিডম ফাইটার’ (১৯৯১) ছবিটি ২২x১৬ ইঞ্চির এক অসামান্য পেন ও ইঙ্কের কাজ। স্বাধীনতার সংগ্রামে অংশ নেওয়া এক মুখ বা মুহূর্ত যেন এখানে জীবন্ত হয়ে ওঠে; দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগ এখানে আঁকা হয় নিঃশব্দ শ্রদ্ধায়। সমসাময়িক ধারায় রঞ্জিত দাসের ‘ফিলিং’ (২০২৪) ছবিটি বিমূর্ত শিল্পের এক সাহসী অভিযাত্রা। ৩০x৩০ ইঞ্চির ক্যানভাসে ধরা পড়ে অন্তর্গত আবেগের রং ও টেক্সচারের বহমানতা– যা দর্শকের মনে এক অন্তর্নিহিত অনুরণন সৃষ্টি করে।
এই ২১ বছরের যাত্রায় গ্যালারি কায়া শুধু প্রদর্শনীর আয়োজনই করেনি, বরং শিল্পকে ঘিরে গড়ে তুলেছে এক ধরনের পরিশীলিত ও সহমর্মী পরিবেশ। শিল্পী রঞ্জিত দাস বলেন, ‘গ্যালারি কায়া নবীন শিল্পীদের যেমন জায়গা দিয়েছে, তেমনি প্রবীণ ও কিংবদন্তি শিল্পীদেরও প্রাপ্য মর্যাদায় স্থান দিয়েছে। এই ভারসাম্যই কায়াকে আলাদা করেছে অন্যদের থেকে।’
এ ছাড়াও প্রদর্শনীর সমন্বয়ক রাজেন জেন বলেন, শিল্পের ভাষা সময়ের চেয়ে বড়। সেই ভাষাকে ধারণ করে গ্যালারি কায়া ২১ বছর ধরে যে শিল্পভুবনের বিস্তার ঘটিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এই প্রদর্শনী শুধু একটি গ্যালারির বর্ষপূর্তিই নয়, এটি একান্তভাবেই দেশের শিল্পচর্চার এক অনন্য উদযাপন।
প্রদর্শনীতে যেসব বরেণ্য শিল্পীর চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন আব্দুস শাকুর শাহ, আবুল বারক আলভী, হামিদুজ্জামান খান, হাশেম খান, কনকচাঁপা চাকমা, কাজী আব্দুল বাসেত, মুর্তজা বশীর, রঞ্জিত দাসসহ অনেকেই।
তাদের চিত্রকর্ম এসেছে বিভিন্ন মাধ্যমে– তেলরং, অ্যাক্রেলিক, জলরং, চারকোল, কালি ও কলম, মিশ্র মাধ্যম, কাঠছাপ এবং ক্যানভাস। প্রতিটি মাধ্যমেই উঠে এসেছে শিল্পীর নিজস্ব ভাষা ও চিন্তাজগতের প্রতিফলন।
এই আলোকময় পথচলায় গ্যালারি কায়া শুধু শিল্প প্রদর্শনের একটি স্থান হয়ে ওঠেনি; বরং হয়ে উঠেছে সময়ের সাক্ষী। উদ্যোক্তারা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেছেন দর্শক, সংগ্রাহক, সমালোচক ও প্রয়াত শিল্পীদের, যাদের অবদান ছড়িয়ে আছে গ্যালারির প্রতিটি দেয়ালে। v

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গ্যালারি কায়ার আলোকপথ
  • সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজে প্রফেশনাল মাস্টার্স, আবেদনের শেষ সময় ১৭ জুলাই
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (৩ জুলাই ২০২৫)
  • বার্জার পেইন্টসের ৫২৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (২ জুলাই ২০২৫)
  • মেসির ইন্টার মায়ামি ছাড়ার গুঞ্জন  
  • রাইট শেয়ার ইস্যুতে সম্মতি পায়নি কনফিডেন্স সিমেন্ট
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১ জুলাই ২০২৫)