মহারাষ্ট্রে ৩ মাসে ৭৬৭ কৃষকের আত্মহত্যা, সংখ্যাটা কেন এত বেশি
Published: 3rd, July 2025 GMT
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ—এই ৩ মাসে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে ৭৬৭ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ কৃষক রাজ্যের বিদর্ভ এলাকার বাসিন্দা। রাজ্য বিধানসভায় সরকারের পক্ষ থেকে এই তথ্য দাখিল করা হয়েছে।
কৃষিকাজে লোকসানের বহর বেড়ে যাওয়া, অনেক সময় ফসলের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ফসল নষ্ট হওয়া ও ঋণের বোঝা বৃদ্ধি কৃষকদের আত্মহত্যার অন্যতম কারণ। ঋণের বোঝা শোধ করতে না পারায় বহু কৃষক মৃত্যুকে বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
রাজ্য সরকার বিধানসভায় জানিয়েছে, অকাল বর্ষণ ও অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে যাঁদের ফসল নষ্ট হয়েছে, সরকার তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে। তা ছাড়া দরিদ্র কৃষকদের প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান যোজনা থেকে বছরে ছয় হাজার টাকা সহায়তা যেমন দেওয়া হচ্ছে, তেমনই রাজ্য সরকারও দিচ্ছে বাড়তি ছয় হাজার টাকা। সরকারি সহায়তা সত্ত্বেও কৃষকদের আত্মহত্যার প্রবণতা ঠেকানো যাচ্ছে না কেন, তা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন।
কৃষকদের আত্মহত্যা–সংক্রান্ত প্রশ্নটি তুলেছিলেন কংগ্রেস সদস্যরা। গত মঙ্গলবার সেই প্রশ্নের লিখিত জবাব পেশ করেন এনসিপি নেতা ও ত্রাণমন্ত্রী মরকন্দ পাটিল। তিনি বলেন, আত্মহত্যা করেছেন এমন কৃষকদের পরিবারকে সরকার এক লাখ টাকা সাহায্য দিয়েছে। যদিও তাঁর পেশ করা তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, ৭৬৭ জন আত্মহত্যা করলেও সরকারি সাহায্য পাওয়ার যোগ্য মাত্র ৩৭৬ জন। যে যে কারণে সরকারি সাহায্য পাওয়া যায়, ওই ৩৭৬ জন সেই শর্ত পূরণ করেছেন।
সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী উপযুক্ত বলে স্বীকৃত না হওয়ায় ২০০ কৃষক সাহায্য পাবেন না। বিরোধীদের অভিযোগ, সরকার আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় স্থবির। এসব ক্ষেত্রে সরকারকে মানবিক হতে হয়। দেবেন্দ্র ফাডনবিশ সরকার সেই মানবিকতার পরিচয় রাখতে পারছে না।
মন্ত্রীর পেশ করা তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি পশ্চিম বিদর্ভে। শুধু এই এলাকাতেই আত্মহত্যা করেছেন ২৫৭ জন কৃষক। যদিও সরকার এখনো নিশ্চিত নয়, তাদের তৈরি তালিকার ১৯৪ জন সত্যি সত্যিই আত্মহত্যা করেছেন, নাকি তাঁদের মৃত্যুর কারণ অন্য।
বিরোধী বিধায়কেরা অভিযোগ করেন, তুচ্ছ কারণ দেখিয়ে সরকার হতভাগ্য কৃষকদের বঞ্চিত করছে। তাঁরা বলেন, ক্ষতিপূরণ ও সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি করার দাবি সত্ত্বেও সরকার কর্ণপাত করছে না।
কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার কখনো কৃষকবান্ধব বলে পরিচিত হতে পারেনি। কৃষকদের ভাতে মেরে করপোরেট দুনিয়ার মুনাফা বাড়াতেই নরেন্দ্র মোদির সরকার কৃষি আইন এনেছিল। কৃষকদের বিক্ষোভ ও বিদ্রোহের মুখে সেই আইন খারিজ করতে বাধ্য হলেও এখনো কৃষকদের কোনো রকম সুরাহা দিতে পারেনি। তাই আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে।
মহারাষ্ট্রে ২০২৩ সালে আত্মহত্যা করেছিলেন ২ হাজার ৮৫১ জন কৃষক। ২০২৪ সালে সংখ্যাটা সামান্য কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৬৩৫–এ। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, কৃষকদের এই মৃত্যুমিছিল সত্ত্বেও বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের টনক নড়েনি। কৃষকদের কল্যাণে কোনো ব্যবস্থাই সরকার নিতে পারেনি। তাই ৩ মাসে ৭৬৭ জন কৃষককে আত্মহননের পথ বেছে নিতে হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ষকদ র কর ছ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা, ৪৩০৫ আসনে আবেদনে সময় বৃদ্ধি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের প্রথমবর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তিতে আবেদনের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ছিল আবেদনের শেষ দিন। এখন শিক্ষার্থীরা ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে অনলাইন আবেদনের সময়সীমা ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ রাত ১১:৫৯ পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। ফি প্রদানের সময়সীমা একই সময় পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকবে।’
বিভিন্ন ইউনিট ও উপ-ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য উচ্চমাধ্যমিক বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা শর্ত সাপেক্ষে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। প্রতি ইউনিট বা উপ-ইউনিটের জন্য আবেদন ফি (প্রসেসিং ফিসহ) এক হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবেদন করতে ভর্তি-ইচ্ছুকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ওয়েবসাইট থেকে ‘অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া’ অনুসরণ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এ বছর ৪ হাজার ৩০৫টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এর মধ্যে সাধারণ আসন ৩ হাজার ৭৮৬ ও বাকি ৫১৯টি কোটার জন্য বরাদ্দ। গত বছর এ আসন ছিল ৪ হাজার ৬৮৪ টি। এর মধ্যে ৪ হাজার ১১টি সাধারণ আসন আর বাকি আসন কোটার জন্য বরাদ্দ ছিল। এ বছর পোষ্য কোটায় বরাদ্দ ৫৪টি আসন কমছে।
আরও পড়ুনএমবিবিএস–বিডিএসে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হতে পারে আজ, মেধাতালিকা যেভাবে৫৯ মিনিট আগেআবেদন সংশোধনের সুযোগ কবে—আবেদনপত্র সংশোধনের জন্য ১ থেকে ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ হিসেবে ৩০০ টাকা প্রযোজ্য।
আবেদনের যোগ্যতা—আবেদনের যোগ্যতা অনুযায়ী বাংলাদেশের যেকোনো শিক্ষা বোর্ডের অধীন ২০২২ বা ২০২৩ সালের মাধ্যমিক/দাখিল/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং ২০২৪ বা ২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক/আলিম/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারী ভর্তি নির্দেশিকায় উল্লিখিত ইউনিট, উপ-ইউনিট, অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও বিষয়ে নির্ধারিত যোগ্যতা পূরণ করলে সংশ্লিষ্ট ইউনিট বা উপ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন।
ইউনিট ও উপ-ইউনিটের মধ্যে রয়েছে A ইউনিট (বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেরিন সায়েন্স অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদভুক্ত সব বিষয়); B ইউনিট (কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত ৯টি বিষয়); B1 উপ-ইউনিট (নাট্যকলা, চারুকলা, সংগীত); B2 উপ-ইউনিট (আরবি, ইসলামিক স্টাডিজ, পালি); C ইউনিট (ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত সব বিষয়); D ইউনিট (সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, আইন অনুষদ, শিক্ষা অনুষদ ও মানবিক শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা, মনোবিজ্ঞান) এবং D1 উপ-ইউনিট (ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স)।
GCE (O/A Level) এবং সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত সমতা নিরূপণের ব্যবস্থা থাকবে। ২০২২ বা ২০২৩ সালের O-Level এবং ২০২৪ বা ২০২৫ সালের A-Level পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা সমতা নিরূপণ সাপেক্ষে আবেদন করতে পারবেন। সমতা নিরূপণ ফি ১ হাজার টাকা এবং প্রক্রিয়া আগামী ১ থেকে ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত সম্পন্ন করতে হবে। সমতা নিরূপণ শেষে শিক্ষার্থীরা Equivalent ID দিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
ছবি: প্রথম আলো