পশ্চিমা বিশ্বের সহায়তা ছাড়া কি ইসরায়েল টিকে থাকতে পারবে
Published: 3rd, July 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা এবং তা থেকে শুরু হওয়া ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক যুদ্ধ দুটি ভয়াবহ সত্যকে আমাদের সামনে নিয়ে এসেছে। প্রথমত, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃত ও আগ্রাসীভাবে পুরো মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে অবজ্ঞা করছে। দ্বিতীয়ত, ইসরায়েল রাষ্ট্র কোনোভাবেই একা টিকে থাকতে সক্ষম নয়।
এই দুটি বিষয়ের একটি অন্যটি থেকে আলাদা মনে হলেও বাস্তবে একটি অন্যটির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। কারণ, যারা সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে ইসরায়েলকে টিকিয়ে রেখেছে, তারা সেই সমর্থন প্রত্যাহার করে নিলে মধ্যপ্রাচ্য আর সেই বিস্ফোরণপ্রবণ অঞ্চল থাকবে না। কয়েক দশক ধরে ইসরায়েলের আগ্রাসী ভূমিকার কারণে অস্থিতিশীল হয়ে আছে এই অঞ্চল। বিশেষ করে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
অতিমাত্রায় সরলীকরণ না করেও বলা যায়, কঠিন বাস্তবতা হলো ইসরায়েল যদি গাজা থেকে সরে যায় এবং ধ্বংসস্তূপে পরিণত ও গণহত্যার শিকার সেই অঞ্চলকে একটু স্থিতিশীল হয়ে উঠার সুযোগ দেয়, তাহলেই পার্থক্য প্রকাশ্য হয়ে আসবে। এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি নৃশংসতায় ৫৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৭ হাজারে বেশি শিশু ও ও ২৮ হাজারের বেশি নারী রয়েছেন।
গাজার নিখোঁজ ব্যক্তিদের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হলে নিহত ব্যক্তিদের এই সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে।
‘যার শক্তি, সেই সঠিক ও ন্যায্য’—আগামী দিনগুলোর রাজনৈতিক সমীকরণ থেকে এই ঘৃণ্য নীতি সম্পূর্ণ মুছে ফেলতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যের আরব ও মুসলিম দেশগুলোর সামনে এখন সময় এসেছে, তারা যেন সত্যিকারের ভূমিকা নেয়।ব্লার্ব: ইসরায়েল বহু বছর ধরেই একদল সমর্থক ও উপকারভোগীর সাহায্য নিয়ে চলছে। ওই উপকারভোগীরা এটিকে মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা ঔপনিবেশিক স্বার্থরক্ষার একটি ঘাঁটি হিসেবে দেখে থাকে।
আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার রক্ষায় বিশ্ব এগিয়ে এলে হয়তো কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থার দিকে ফিরে যাওয়া সম্ভব হবে।
‘যার শক্তি, সেই সঠিক ও ন্যায্য’—আগামী দিনগুলোর রাজনৈতিক সমীকরণ থেকে এই ঘৃণ্য নীতি সম্পূর্ণ মুছে ফেলতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যের আরব ও মুসলিম দেশগুলোর সামনে এখন সময় এসেছে, তারা যেন সত্যিকারের ভূমিকা নেয়। তারা যেন নিজেদের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণকে সাহায্য করে এবং নিশ্চিত করে যে ইসরায়েল আর তাদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করতে পারবে না।
ইসরায়েলের দৃষ্টিতে এই দাবি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য, এমনকি চিন্তার বাইরে। বোঝা যায়, তাদের এই নীতি তাদের ঔপনিবেশিক অবস্থানের কারণেই। কেন?
বিখ্যাত গবেষক প্যাট্রিক উলফ বলেছিলেন, ‘আক্রমণ কেবল কোনো ঘটনা নয়, এটি একটি কাঠামো।’ এই গভীর বক্তব্যটি বুঝিয়ে দেয়, ১৯৪৮ সালের নাকবা বা ফিলিস্তিনিদের জাতিগত নিধন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত ইসরায়েলের সব যুদ্ধ ও দখলদারত্ব কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি নিরবচ্ছিন্ন শক্তি কাঠামোর অংশ। তাদের এসবের পেছনে মূল উদ্দেশ্য স্থানীয় বা আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া।
তাই ৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েলের আচরণকে শুধু প্রতিশোধ বলেই মনে করা ভুল, বরং এর পেছনে সুস্পষ্ট কৌশল ছিল।
গাজার বিভীষিকাময় হত্যাকাণ্ড দেখে আমরা হয়তো প্রথমে এই বিষয় বুঝতে পারিনি। কারণ, গাজায় প্রতিদিনের নৃশংসতা ঘটনা থেকে ইসরায়েল যেন এক অদ্ভুত আনন্দ নিচ্ছে বলেও মনে হচ্ছে।
তবে ইসরায়েল নিজেই তাদের আসল উদ্দেশ্য স্পষ্ট করে বলেছে। দেশটির উগ্রবাদী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর বলেছিলেন, ‘আমরা গাজাকে জনশূন্য দ্বীপে পরিণত করব।’
নেতানিয়াহুর এই উম্মত্ত বক্তব্য ইসরায়েলের ঔপনিবেশিক কাঠামোরই অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং যতক্ষণ না এটিকে থামানো যায়, ততক্ষণ তার থেকে মুক্তি নেই। কিন্তু কে বা কারা ইসরায়েলকে থামাবে?
গাজায় প্রায় ২১ মাসের অসহনীয় গণহত্যা আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে এক কঠিন সত্য—ইসরায়েল হচ্ছে আসলে একটি ‘সামন্ত রাষ্ট্র’ (যে রাষ্ট্র অন্য কোনো প্রভাবশালী রাষ্ট্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত)। এমন রাষ্ট্র নিজে যুদ্ধ করতে পারে না, নিজেকে রক্ষা করতে পারে না, এমনকি নিজ অর্থনীতি চালাতেও পারে না।ইসরায়েল বহু বছর ধরেই একদল সমর্থক ও উপকারভোগীর সাহায্য নিয়ে চলছে। ওই উপকারভোগীরা এটিকে মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা ঔপনিবেশিক স্বার্থরক্ষার একটি ঘাঁটি হিসেবে দেখে থাকে।
২০২২ সালের জুলাইয়ে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি জনগণের সম্পর্ক রক্ত-মাংসের মতো গভীর। আমরা অভিন্ন মূল্যবোধে ঐক্যবদ্ধ।’
বাইডেনের এই তথাকথিত ‘অভিন্ন মূল্যবোধ’ যে গণহত্যাকে সমর্থন করে, সে বিষয়ে প্রশ্ন না তুলেই বাইডেন আসলে স্বীকার করেছিলেন, ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক কেবল রাজনীতির বিষয় নয়, বরং গভীর আদর্শিক ও কৌশলগত বন্ধন।
পশ্চিমা বিশ্বের অন্যান্য নেতাও ইসরায়েল সম্পর্কে অন্ধভাবে একই কথা বলে চলেছেন। তবে গাজায় ইসরায়েলের চলমান এই নৃশংস গণহত্যা বহু দেশকে, বিশেষ করে কিছু পশ্চিমা ও বেশির ভাগ অ–পশ্চিমা দেশকে সাহসের সঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কথা বলতে বাধ্য করেছে।
নেতানিয়াহু ও তাঁর চরমপন্থী মতাদর্শের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার পর থেকে কখনো এতটা জোরালোভাবে উচ্চারিত হয়নি।
স্পেন, নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড ও স্লোভেনিয়ার মতো দেশ প্রমাণ করেছে, পশ্চিমা ‘বন্ধন’ চিরকাল অটুট থাকে না। তাদের সমর্থন ইসরায়েলের প্রতি একচেটিয়া বা নিরঙ্কুশ নয়।
কেন কিছু দেশ ইসরায়েলকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সাহস করছে, আবার কিছু দেশ শত অন্যায় সত্ত্বেও চুপ থাকছে? এই বিষয় আসলে বিশ্লেষণের দাবি রাখে।
পশ্চিমাদের সঙ্গে ইসরায়েলের এই কথিত বন্ধন ভেঙে দেওয়া এখন জরুরি। এটি শুধু ন্যায়ের ভিত্তিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নয়, বরং ফিলিস্তিনি জনগণের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য।
মার্কিন সরকার নিঃশর্তভাবে ইসরায়েলকে অস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নানা সময় ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে সরব থাকছেন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র ঔপন ব শ ক গণহত য র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি-জামায়াত দেশকে অন্য এক সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে অনৈক্যের সুর দেখতে পাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘এই বিভেদ এবং অনৈক্য উসকে দিয়েছে বাংলাদেশের একটি বড় পার্টি, সেটা হলো বিএনপি। অভ্যুত্থানের পরে যদি ইতিহাসে লেখা থাকে, প্রথম কোন দল বাংলাদেশে অনৈক্য জন্ম দিয়েছে? সেটা হলো বিএনপি।’ একে ‘অসুস্থ রাজনৈতিক চর্চা’ উল্লেখ করে এখান থেকে সরে আসতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
‘জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং জাতীয় নির্বাচন কোন পথে’ শীর্ষক সেমিনারে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এ কথাগুলো বলেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সেমিনারের আয়োজন করে দলের যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তি।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘জামায়াত প্রশ্ন নিয়ে এসেছে, লোয়ার হাউসে (নিম্নকক্ষে) পিআর; বিএনপি প্রশ্ন নিয়ে এসেছে, নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত); এগুলো নিয়ে তারা সরকারের সাথে বার্গেইন (দর–কষাকষি) করতে চায়—কোথায় ডিসি নিয়োগ দিবে, কোথায় এসপি নিয়োগ দিবে? জাতি যখন সংকটে, এই দুই দল বাংলাদেশকে অন্য একটা সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’
গণভোটের প্রসঙ্গ তুলে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হলে এটি বাংলাদেশের জনগণের বিজয় হবে। তিনি বলেন, ‘এটা তো জামায়াতে ইসলামীর জয় হবে না। এ জন্য আমরা জামায়াতে ইসলামীর কাছে আহ্বান রাখব, ভণ্ডামি বাদ দেন আপনারা। ভণ্ডামি বাদ দিয়ে অন্তরে কী আছে, একটু খুলে বলেন।’
অসুস্থ রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান
নোট অব ডিসেন্টের (ভিন্নমত) বিষয়ে বিএনপির বক্তব্যের সমালোচনা করে এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘নোট অব ডিসেন্টের বিষয়ে সালাহউদ্দিন সাহেব (সালাহউদ্দিন আহমদ) বলেছেন, কমিশনে যে নোট অব ডিসেন্টগুলো দিয়েছে, আমি সেগুলোকে বলব, “নোট অব ডিসেন্ট” নয় “নোট অব চিটিং”। ঠিক এই “নোট অব চিটিং”য়ের মাধ্যমে তারা পুরো বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের সাথে প্রতারণা করতে চেয়েছিল। কিন্তু সেই প্রতারণাটা বাংলাদেশের তরুণ ছাত্র–জনতার কাছে ধরা পড়েছে।’
বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে ‘ভেটো’ দিয়েছে উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘অথচ তারা (বিএনপি) একটা সময় এটা চেয়েছিল।’
সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) নিরপেক্ষ হওয়ার প্রস্তাবে বিএনপির ভিন্নমতের সমালোচনা করেন নাসীরুদ্দীন। নিরপেক্ষ পিএসসি ও দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) গঠনের দাবি জানান তিনি।
জাতীয় পার্টি সম্পর্কে বিএনপিকে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে উল্লেখ করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘এই কুসুম কুসুম প্রেম আপনারা আওয়ামী লীগের সাথে দিয়েছিলেন। এখন জাতীয় পার্টির সাথে দিচ্ছেন, জাতীয় পার্টি সম্পর্কে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, “‘নোট অব চিটিং” বাংলাদেশের মানুষ কখনো মেনে নেয়নি, ভবিষ্যতেও নিবে না। এবং এই “নোট অব চিটিং”য়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বিএনপি যে ধরনের অসুস্থতা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে, আমরা তাদেরকে আহ্বান জানাব যে আপনারা এই সব কার্যক্রম থেকে সরে আসুন। নতুনভাবে বাংলাদেশের মধ্যে রাজনীতি করুন।’
‘নিম্নকক্ষে পিআর জামায়াতের ভণ্ডামি’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘বাংলাদেশে জামায়াত একটা “বাইট” দেওয়ার চেষ্টা করছে যে তারা খুব সংস্কারের পক্ষে। কিন্তু বিএনপি খারাপ হলেও একদিকে ভালো যে তারা যে সংস্কারের বিপক্ষে, এটা জনগণের সামনে সরাসরি বলে। আর জামায়াত হলো এমন যে মনে বলে সংস্কারের বিপক্ষে; মুখে তারা বলে সংস্কারের পক্ষে। আমরা এখনো সুপারিশমালার কোনো সমাধান করতে পারি...তারা নতুন করে মার্কেটে নিয়ে এসেছে গণভোট হবে।’
জামায়াতে ইসলামীকে সঠিক জায়গায় কথা বলার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘সঠিক জায়গায় কথা বলুন, বেজাগায় কথা বলিয়েন না। ’৭১–এ আপনারা (জামায়াতে ইসলামী) উল্টাপাল্টা কাজ করেছিলেন, ’২৪–এ এসে এখন উল্টাপাল্টা কাজ শুরু করেছেন। এ জন্য জামায়াতে ইসলামীকে আমরা বলব, গণভোট নিয়ে জনগণের আতঙ্ক সৃষ্টি না করে, সংস্কারের জন্য নোট অব ডিসেন্টের প্রক্রিয়াগুলো কীভাবে সমাধানে পৌঁছতে পারি, আদেশটা কীভাবে জারি করা যায়?... সে বিষয়ে আপনার দাবি তোলা উচিত। আমরা এনসিপির পক্ষ থেকে মনে করি, জামায়াত যে দাবিগুলো তুলছে, লোয়ার হাউসের পিআর...এগুলো হলো জামায়াতের ভণ্ডামি, এগুলো হলো কিছু সিটের (আসন) বার্গেনের (দর–কষাকষি) জন্য।’
এনসিপির রাজনীতির একটি সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে উল্লেখ করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা সেই সম্ভাবনার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। আপনারা দেখছেন, আপনারা বিচার করবেন। পুরো বাংলাদেশ বিচার করবে।’ এনসিপির নেতাদের গাড়ি–বাড়ি অর্জনের অভিযোগও নাকচ করেন তিনি। এ ছাড়া প্রতীক হিসেবে এনসিপিকে শাপলা বরাদ্দ দিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বানও জানান নাসীরুদ্দীন।
‘জনতা বঙ্গভবনে যাবে’
দেশবাসী উৎকণ্ঠা থেকে মুক্তির জন্য গণ–অভ্যুত্থানের সরকারপ্রধান উপদেষ্টার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন উল্লেখ করে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশমালা দ্রুত আদেশ জারি করার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাঁদের আবেদন থাকবে।
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার একমাত্র এখতিয়ার প্রধান উপদেষ্টার উল্লেখ করে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘ডক্টর ইউনূসকে বাংলাদেশের সামনে অতিসত্বর শহীদ মিনারে গিয়ে জনগণের সামনে উপস্থিত হয়ে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির আদেশ জারি করতে হবে। যদি সে ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় হয়, তাহলে সেটা আমরা কীভাবে করব, সেটা আমরা বাংলাদেশের জনগণকে আবার রাজপথে দেখিয়ে দিব ইনশা আল্লাহ। আমরা যথেষ্ট উৎকণ্ঠা এবং উদ্বেগের মধ্যে রয়েছি।’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘সরকারের কাছে আমাদের আবেদন থাকবে যে আপনাদের কাছে নীতিমালা এসেছে। আপনারা দ্রুত আদেশ জারি করুন। আমাদের এই উৎকণ্ঠা, বিএনপি অনৈক্য সৃষ্টি করতে চাচ্ছে, এটা থেকে বাংলাদেশকে মুক্তি দিন। আমরা দ্রুত ইলেকশনের ফেজে (নিবার্চনী পর্বে) ঢুকতে চাই।’
অধ্যাদেশ বা প্রজ্ঞাপন বা আদেশ জারির বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কোনো বৈধতা নেই, এমন মন্তব্য করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘যদি চুপ্পুকে (রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন) দিয়ে আদেশ দেওয়ার বাংলাদেশে কোনো চেষ্টা চালানো হয়, তাহলে জনতা বঙ্গভবনে চলে যাবে। আগে গণভবনে গিয়েছিল, নতুন করে যদি এ ধরনের কোনো প্রচেষ্টা চালানো হয়, তাহলে জনতা আবার বঙ্গভবনে যাবে ইনশা আল্লাহ।’
জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক মো. তারিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য দেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ প্রমুখ।