শেখ হাসিনা বার বার জাতির সাথে বেইমানি করেছে : সালাম
Published: 3rd, July 2025 GMT
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব এড. আব্দুস সালাম আজাদ বলেছেন, শেখ হাসিনা বার বার জাতির সাথে বেইমানি করেছে। শেখ হাসিনা এরশাদের সাথে আপোষ করেছিল প্রতিবেশী দেশসহ বিভিন্ন সাথে আপোষ করেছেন।
দেশে গণতন্ত্র বলে কিছুই ছিল না তখন। তার পিতা শেখ মুজিব যেভাবে দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। পরবর্তীতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সিপাহী বিপ্লবের মাধ্যমে এদেশের দায়িত্ব নিয়ে গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল। তিনি ১৯৭৮সালে রাষ্ট্রপতির নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছিলেন।
জিয়াউর রহমানের পরিবার বারবার এদেশের মানুষের গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন । আর শেখ মুজিবের পরিবার বারবার মানুষের দেশের মানুষকে, গুম, খুন ও হত্যা করেছে। যেভাবে শেখ মুজিবর ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল ঠিক একইভাবে তার মেয়ে শেখ হাসিনা মানুষকে হত্যা, গুম ও খুন করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন উপলক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ডক্টরস্ এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ড্যাব) নারায়ণগঞ্জ আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল এগারোটায় খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, খুনি শেখ হাসিনা পাঁচ হাজারের অধিক বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে হত্যা করেছে। সর্বশেষ জুলাই আগস্টের আন্দোলনে দুহাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতাকে পুলিশ ও প্রশাসনের লোক দিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে পাখির মতন গুলি করে খুন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সর্বশেষ ছাত্ররা তাদের আন্দোলন একপ্রকার প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন কিন্তু তারেক রহমান বলেছেন যে না এ আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
আপনি বলেছিলেন আমরা কোটা আন্দোলন না দেশের গণতন্ত্র পূর্ণ উদ্যার যতদিন না পর্যন্ত শেষ হবে আমরা ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাব। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের মাধ্যমে আমরা এদেশের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনব। সর্বশেষ তারেক রহমানের নেতৃত্বে ৫ আগস্ট আন্দোলনের মাধ্যমে খুনি শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন বিগত ২০১৪ সালের ১৮ সালের ও সর্বশেষ ২৪ সালের নির্বাচন কি হয়েছিল। আমরা চাই একটি সুষ্ঠু অবাধ ও গণতন্ত্রমূলক নির্বাচন। জুলাই বিপ্লবের পরে অন্তবর্তী কালীন সরকার গঠন হয়েছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন এই সরকারকে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব।
সামনের নির্বাচনকে নিয়ে অনেক রকমের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সেই নির্বাচনে অনেক সংকট দলেই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের কথা বলে। যারা বিগত সময়ে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে নির্বাচন অংশগ্রহণ করেছিল তারাই এখন এইসব কথা বলে। সুতরাং দলীয় নেতাকর্মীদেরকে সজাগ থাকতে হবে যারা দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে তাদেরকে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দিব।
ডক্টরস্ এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ড্যাব) নারায়ণগঞ্জ শাখার কমিটির আহ্বায়ক ডাঃ জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য ডাঃ জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব এড.
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ডাঃ মজিবুর রহমান, মাসুদ রানা, খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ আবুল বাশার, ডক্টরস্ এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ড্যাব) নারায়ণগঞ্জ শাখার কমিটির সদস্য ডাঃ আমির উল মুলক, ডাঃ কাসেদুর রহমান, ডাঃ বয়েজ উদ্দিন, ডাঃ পংকজ নাহা, ডাঃ আবু সালেহ প্রমুখ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ র গণতন ত র ন র য়ণগঞ জ র রহম ন ব এনপ র কম ট র কর ছ ল সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০ (ভিডিও)
নারায়ণগঞ্জ শহরে যানজট নিরসনে সড়কে কাজ করা শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যাটারিচালিত রিকশা (ইজিবাইক) চালকরা হামলা চালিয়েছে। এ নিয়ে ইজিবাইক চালকদের সাথে সংঘাতে জড়ালে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ইজিবাইকচালকরা প্রায় দুই ঘণ্টা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড অবরোধ করে রাখেন। তাদের অবরোধে পুরো শহরজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের চাষাঢ়া ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রবেশ গেটে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষার্থী ও ইজিবাইক চালকদের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিষয়টি সমাধান হয়।
এদিকে আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৯ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলো- মোঃ আবু সাঈদ (১৯), মারুফ (১৯), আসিফ (৩০), মাহিম (২২), ফয়সাল আহমেদ (২৮), হুমায়ন কবির (২৬), এনামুল হক শান্ত (২৩), শাহীন খন্দকার (২২) ও নুহেল মুন্সী আপন (২২)। তবে আহত ইজিবাইক চালকদের নাম পাওয়া যায়নি।
(ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন)
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা শিক্ষার্থীরা চাষাড়ায় ঢুকতে বাঁধা দেয় ইজিবাইক চালকদের। এ নিয়ে কথাকাটাকিাটি হয় উভয়ের মধ্যে এক পর্যায়ে ইজিবাইকরা চালকরা সংঘবদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ করতে গেলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ও সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অনেকেই আহত হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ইজিবাইক চলকরা সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী সাধারণ। পরে আইনশৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এদিকে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, সংঘর্ষের সময় ইজিবাইক চালকদের অনেকেই তাদের গাড়ির সিটের নিচ থেকে লাঠি ও লোহার রড বের করে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়।
ধারণা করা হয়, আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল ইজিবাইক চালকরা যে শিক্ষার্থীদের উপর সুযোগ পেলেই হামলা করবে। কারণ গত এক দেড় মাস ধরেই চাষাড়ায় ইজিবাইক ঢুকতে বাধা দিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা। এতে ক্ষোভ জমতে থাকে ইজিবাইক চালকদের মধ্যে। আজকে তারা সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে।
ওদিকে যানজট নিরসনে কাজ করা শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘আমরা এক মাস ধরে শহরের যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি। চেম্বার অব কমার্স এবং বিকেএমই থেকে আমাদেরকে ট্রাফিক মনিটরিং সেলে দেওয়া হয়। আমাদের দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকেই বড় অটোরিকশাগুলো চাষাঢ়ায় প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।
কিন্তু তারা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চাষাঢ়ায় প্রবেশ করেন। পরে বাধা দিলে তারা আমাদের ওপর ক্ষেপে যান। এবং পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
তবে উজ্জল নামে এক অটোরিকশাচালক জানায়, ‘আমাদের চাষাঢ়া যাওয়া নিষেধ। আমরা নিষেধ উপেক্ষা করে চাষাঢ়া গেছি, এটা আমাদের অপরাধ। কিন্তু তারা আমাদের অটোরিকশার গ্লাস ভেঙে দিয়েছে। গ্লাস ভাঙার কারণ জানতে চাইলে তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমাদের অনেককে তারা মারধর করেছে। কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি আছে।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে ভালো একটি সমাধানে আসা সম্ভব হয়েছে। আলোচনা সভায় দুই পক্ষই ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জেলা প্রশাসনের সব সিদ্ধান্ত মানতে একমত হয়েছেন। এ ঘটনায় একটি কমিটি গঠন করা হবে।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জ শহরের অসহনীয় যানজট নিরসনের লক্ষ্যে গত কয়েক মাস ধরে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন বিকেএমইএ, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এরই ধারাবাহিকতায় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স ও বিকেএমইএ’র যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শতাধিক যানজট নিরসন কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়। এ কাজে নিয়োগপ্রাপ্তরা বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
গত প্রায় এক মাস ধরে এই শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার ফাঁকে যানজট নিরসন কর্মী হিসেবে বিভিন্ন সড়কে দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে নগরীর যানজট অনেকটা কমে এসেছে।