২০২৪ সালের ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ এর আত্মত্যাগ ও আন্দোলনের চেতনাকে স্মরণীয় করে রাখতে পাঁচ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রশিবির।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের কাছে এসব প্রস্তাবনা সম্বলিত স্মারকলিপি জমা দেন জাবি শাখা ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ।

তাদের প্রস্তাবিত দাবিগুলো হলো- জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিচার ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে; ১৫ জুলাইয়ের ঘটনার স্মৃতিতে উপাচার্য বাসভবন-চৌরঙ্গী সড়কের নাম ‘জুলাই স্মৃতি সড়ক’ রাখতে হবে; আন্দোলনের ইতিহাস ও আত্মত্যাগ স্মরণে ‘জুলাই কর্নার’ স্থাপন ও ‘জুলাই স্মৃতি স্মারক’ সম্পাদন করতে হবে; প্রস্তাবিত চারটি আবাসিক হলের নামকরণ জুলাইয়ের চেতনা অনুযায়ী করতে হবে; আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের একাডেমিক হয়রানি বন্ধে খাতা পুনর্মূল্যায়নের মতো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

আরো পড়ুন:

বাস সংকট নিরসনের দাবিতে সুবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম

৪৪তম বিসিএসে ক্যাডার হয়েছেন রাবির অন্তত ৬০ শিক্ষার্থী

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ১৫ জুলাইয়ের কালরাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহসী শিক্ষার্থীরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে রক্ত দিয়েছিল। সে সাহসিকতা এবং আত্মত্যাগ যেন বিস্মৃত না হয়, বরং আগামীর প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণায় পরিণত হয়—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণকারী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই দাবিগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে এবং বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নেবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করে শাখা শিবিরি।

গত বছর জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিণত হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, আত্মত্যাগ ও সংহতির স্পষ্ট ছাপ পড়ে গোটা ক্যাম্পাস জুড়ে।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅভ য ত থ ন প রস ত ব

এছাড়াও পড়ুন:

রাষ্ট্র সংস্কার না হ‌লে দেশ অন্ধকারে ঢেকে যাবে: এবি পার্টি

আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থান উদযাপনের অংশ হিসেবে "কোটা না মেধা: এক রক্তস্নাত অধিকারের সংগ্রাম' শীর্ষক ৩৬ দিনব্যাপী চিত্র প্রদর্শনী শুরু হ‌য়ে‌ছে।

বুধবার (২ জুলাই) বিকেল ৪টায় এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ ড. দিলারা চৌধুরী।

এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রদর্শনী চলবে বুধবার থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের সঞ্চালনায় চিত্রপ্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান, শহীদ জিসানের মা জেসমিন আক্তার, শহীদ নুরু ব্যাপারীর স্ত্রী রোমানা বেগমসহ বিশিষ্টজনেরা।

প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিলারা চৌধুরী বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা এখনো কোন গান, সিনেমা, নাটক কিছুই সুন্দরভাবে করতে পারিনি। হাজার শহীদের রক্তের বিনিময়ে মানুষ মুক্তি পেল সেটাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে, যেভাবেই হোক। এত ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ের পর দেশে যদি কোনো সংস্কার না হয়, আগের ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থাই যদি চলতে থাকে তাহলে শহীদদের স্বজন কিংবা আহত, পঙ্গুত্ববরণকারীদের আমরা কি জবাব দেব।”

তিনি বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কার যদি সম্ভব না হয়, আবারো নতুন কোন ফ্যাসীবাদের কবলে পড়ি তাহলে আমার ভয় হয়, দেশ একটা গভীর অন্ধকারে ঢেকে যাবে।”

তিনি সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গঠনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা এই গণঅভ্যুত্থান যদি ধরে রাখতে না পারি এর ভুক্তভোগী আপনাদেরই হতে হবে।”

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “ক্ষমতার মোহে অন্ধ ও চরম অহঙ্কারী হয়ে শেখ হাসিনা কোটা নিয়ে জাতির সাথে উপহাস করতে চেয়েছিল।সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁর অহঙ্কারের চরম শিক্ষা অবধারিত হয়ে পড়ে। ফলে জঘন্যতম নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েও তার শেষ রক্ষা হয়নি।”

জুলাইয়ের নির্মমতা স্মরণ করে তিনি বলেন, “এ গণহত্যা পৃথিবীর যেকোনো পৈশাচিক দুঃশাসনের ইতিহাসকে ম্লান করেছে। গুম, খুন, লুটপাট, হেলিকপ্টার থেকে গুলি, কারফিউ জারিসহ সব ধরনের অত‍্যাচার চালিয়ে জনগণকে দমন করার চেষ্টা হয়েছে।”

“জুলাই ৩৬ দিনের নৃশংসতা যেই দেখবে সে-ই বলবে, বিশ্বে শেখ হাসিনার চাইতে নির্দয় নারী ঘাতক আর হতে পারে না। তিনি শেখ হাসিনাসহ সব খুনি ও সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।”

ডা. জাহেদুর রহমান বলেন, “পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে এখন মনে হয় খুনি হাসিনার কাছে ক্ষমা চাই। তিনি এমন নির্লজ্জ খুনি এখনো ভারতে বসে দেশের মানুষকে হুমকি দিচ্ছে, যারা আন্দোলন করেছে, প্রোফাইল লাল করেছে তারা ক্ষমা চাইলে তিনি ক্ষমা করবেন। কতবড় আস্ফালন, এখনো খুনিরা দেশের মানুষকে হুমকি দেয়।”

তিনি চিত্র প্রদর্শনীর দেখে বলেন, “জুলাই নিয়ে গান হওয়া দরকার, সিনেমা হওয়া দরকার, হাজার হাজার ছবি সব জায়গায় প্রদর্শন হওয়া উচিত।”

শহীদ জিসানের মা জেসমিন আক্তার বলেন, “আমার ছেলে আব্দুর রহমান জিসান রায়েরবাগ শহীদ হন। জিসানের শহীদের পর তার শোক ও দুঃখে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করে। আমার একসাথে দুটি সন্তান হারাতে হয়েছে। জিসান ছিল আমার একমাত্র ছেলে। আমি খুনি হাসিনার বিচার চাই।”

শহীদ নুরু ব্যাপারীর স্ত্রী রোমানা বেগম বলেন, “আমার স্বামী রায়েরবাগে শহীদ হন।পরিস্থিতি এমন ছিল আমার স্বামীর লাশটাও তখন আমি আনতে পারিনি।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, আনোয়ার সাদাত টুটুল, এবিএম খালিদ হাসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিম খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খানসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সবুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধূসর চিত্র
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ ও ‘শহীদ দিবস’ পালন বাধ্যতা
  • সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শহীদ দিবস পালনের নির্দেশ
  • দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য মাউশির নতুন নির্দেশনা
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে বিরূপ মন্তব্য, চুল কেটে থানায় হস্তান্তর
  • ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’. সাধারণ ছুটি ঘোষণা
  • রাষ্ট্র সংস্কার না হ‌লে দেশ অন্ধকারে ঢেকে যাবে: এবি পার্টি
  • জাবিতে গাছ উপড়ে ফেলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ 
  • গাছ উপড়ে ফেলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগরে বিক্ষোভ