চলচ্চিত্রে রাষ্ট্রীয় অনুদান দেওয়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মাঝেই জানা গেল, অনুদান কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম অনেক আগেই পদত্যাগ করেছেন। এ তথ্য মম নিজেই জানিয়েছেন।  

১ জুলাই তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৩২টি চলচ্চিত্রকে মোট ১৩ কোটি টাকার অনুদান প্রদানের প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পরদিন থেকেই এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। এ পরিস্থিতিতে জানা গেল—অনুদানের এই তালিকা প্রণয়ন বা অনুমোদনের সঙ্গে জাকিয়া বারী মমর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। 

এ বিষয়ে জাকিয়া বারী মম বলেন, “অনুদানের এই তালিকা তৈরি কিংবা ঘোষণার সময়, আমি এই কমিটির অংশ ছিলাম না। ব্যক্তিগত ও পেশাগত কারণে ২৫ মে আমি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর। প্রায় এক মাস ধরে আমি এই কমিটির সঙ্গে নেই।” 

আরো পড়ুন:

আমিরের বিয়ের আনন্দ নষ্ট করেন ক্রিকেটার জাভেদ

‘যারা জুলাই বিপ্লবকে ভুল বলে, আমি সত্যি তাদের জন্য দুঃখিত’

সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো প্রসঙ্গে জাকিয়া বারী মম বলেন, “অনুদানের প্রজ্ঞাপন জারির পর বিভিন্ন সংবাদে আমার নাম আসছিল কমিটির সদস্য হিসেবে। অনেকেই বিভিন্ন মন্তব্য জানাচ্ছিল আমাকে। অথচ আমি এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতই নই।” 

শুধু ব্যস্ততা নয়, অনুদান কমিটিতে কাজের সুযোগ ও বাস্তবতাও ছিল মমর অব্যাহতির পেছনে অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, “কাজ করার সুযোগ ছিল না। নিয়মের জটিলতা, আমলাতান্ত্রিক বাধা—সব মিলিয়ে আগের নিয়মেই সবকিছু এগোচ্ছিল। সংস্কারের সুযোগ কম। ফলে আমার কাজের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি। এটি কারো প্রতি অভিযোগ নয়, বরং আমাদের সিস্টেমের বাস্তবতা।” 

এদিকে মমর মতো আরো দুজন সদস্যও একই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। তারা হলেন—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক, অভিনেতা ও নির্দেশক ড.

আবুল বাশার মো. জিয়াউল হক (তিতাস জিয়া) এবং নির্মাতা-সম্পাদক সামির আহমেদ। তারাও ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে দায়িত্ব ছাড়েন। 

বর্তমানে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন— তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (চলচ্চিত্র), মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, নির্মাতা-প্রযোজক খান শারফুদ্দীন মোহাম্মদ আকরাম (আকরাম খান), নির্মাতা-চিত্রনাট্যকার নার্গিস আখতার এবং রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি আহমেদ মুজতবা জামাল। 

কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। শুরুতে এ পদে ছিলেন উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চলচ চ ত র কম ট র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুরে এ কে আজাদের বাড়িতে চড়াও বিএনপির একাংশ

ফরিদপুর–৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে আজাদের বাড়িতে চড়াও হয়েছেন স্থানীয় বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীরা। ‘আওয়ামী লীগের গোপন মিটিং’ হচ্ছে অভিযোগ তুলে এই ঘটনা ঘটানো হয়।

বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের ঝিলটুলীতে মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই বাড়িতে ছিলেন হা-মীম গ্রুপের ল্যান্ড অফিসার মো. রাফিজুল খান, হা-মীম গ্রুপের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. সোলাইমান হোসেন, সিকিউরিটি গার্ড মেহেদী হাসান ও ক্লিনার মো. হান্নান মিয়া।

রাফিজুল খান বলেন, কিছু লোক বাড়ির গেটে বারবার আঘাত করলে সিকিউরিটি গার্ড মেহেদী হাসান এগিয়ে যান। একপর্যায়ে গেট খুলে দিলে মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব গোলাম মোস্তফা, মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম নাহিদসহ কয়েকজন বাড়িতে ঢুকে পড়েন। তাঁরা বাড়িতে আওয়ামী লীগের গোপন সভা হচ্ছে কি না, এই বলে ধমকাধমকি করেন। একপর্যায়ে খালি বাড়ি থেকে তাঁরা বেরিয়ে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ কে আজাদের বাসা থেকে বের হয়ে মহানগর বিএনপির নেতা–কর্মীরা পাশে ভূমি অফিসের সামনে জড়ো হন। পরে সেখানে শতাধিক লোক জড়ো করা হয়। তাঁরা মিছিল বের করেন। মিছিলটি ভূমি অফিসের সামনে থেকে শুরু হয়ে অনাথের আচারের মোড় এলাকায় যায়।

মিছিলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন ফরিদপুর মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলী রেজোয়ান বিশ্বাস, ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব শাহরিয়ার হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুনিব হাসান প্রমুখ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ বলেন, ‘আমরা জানতে পারি ঝিলটুলীর ওই বাড়িতে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করার জন্য সভা করছে। সে জন্য আমরা ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম।’

একটি রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে দেশের শীর্ষ একজন ব্যবসায়ীর বাড়িতে এভাবে চড়াও হতে পারেন কি না, জানতে চাইলে মিরাজ বলেন, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করছে পুলিশ।

এ কে আজাদ হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং দৈনিক সমকাল ও চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের স্বত্বাধিকারী। তিনি ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে ফরিদপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল মার্কা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় এ কে আজাদকে জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পদ থেকে বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এ কে আজাদ।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৩ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ নির্বাচন করতে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন এই সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক মন্ত্রী বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান প্রয়াত চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে নায়াব ইউসুফ। তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ কে আজাদের বাড়িতে যাঁরা চড়াও হয়েছিলেন, তাঁরা সবাই নায়াব ইউসুফের সমর্থক।

এ ব্যাপারে নায়াব ইউসুফ জানান, ‘শহরে এ কে আজাদের অনেকগুলো বাড়ি। আজ (গতকাল) বিএনপির একটি মিছিল হয়েছে, কিন্তু কোন বাড়িতে বিএনপির নেতা–কর্মীরা চড়াও হয়েছে, এ খবর আমার জানা নেই।’

নায়াব ইউসুফ দাবি করেন, ‘এ কে আজাদ আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এলাকায় মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তবে আমি হিংসার রাজনীতি করি না, হামলার রাজনীতি করি না। আমি এর পক্ষপাতী নই। সন্ত্রাস–বিশৃঙ্খলা আমি পছন্দ করি না এবং আমার নেতা–কর্মীদের করতে দিই না।’

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী জানান, তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। এ কে আজাদের বাড়িতে কিছু ঘটেছে বলে তাঁর জানা নেই। কেউ তাঁকে জানায়নি।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদউজ্জামান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে খবর পাই, এ কে আজাদের বাড়িতে বিএনপির লোকজন গেছে। পরে দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ কাউকে পায়নি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ