পূর্ব শত্রুতার জেরে কুপিয়ে হত্যা, ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড
Published: 3rd, July 2025 GMT
পূর্ব শত্রুতার জেরে শরীয়তপুরের পালং উপজেলায় এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার মামলায় পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার এ রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ হালিম উল্লাহ চৌধুরী। এ মামলায় মোট ৩১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মিজানুর রহমান।
এই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ইসমাইল সরদার, ছালমুল সরদার, আমিনুল সরদার, রেজাউল সরদার ও জুয়েল সরদার।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে দেলোয়ার হোসেন (৩০) ও দুলাল সরদার (২৬) সুবচনী বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে পশ্চিম চররোসুদ্ধির পাকা রাস্তায় পৌঁছালে ৩১ জন নামধারী ও অজ্ঞাতনামা আসামি পরিকল্পিতভাবে অটোরিকশার গতিরোধ করে।
এরপর দেলোয়ারকে নামিয়ে লোহার রড, হাতুড়ি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। দুলাল সরদার তাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও কুপিয়ে ও মারধর করে জখম করা হয়। ভাগ্নি পারভীন আক্তার বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়।
পরবর্তীতে আশপাশের লোকজন এসে আহতদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেয় এবং দেলোয়ারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের পিতা সালাম সরদার মামলা দায়ের করেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল সরদ র
এছাড়াও পড়ুন:
তিন মাস মাঠে হাঁটুপানি ক্লাসে আসে না শিক্ষার্থীরা
কুড়িগ্রামের উলিপুরের থেতরাই দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার মাঠে জমে রয়েছে হাঁটু পরিমাণ পানি। প্রায় তিন মাস ধরে এই জলাবদ্ধতা থাকলেও সমস্যা সমাধানে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। দুর্গন্ধযুক্ত পানির কারণে মাদ্রাসায় আসছে না শিক্ষার্থীরা। এতে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হয়েছে।
মাঠের পানি আগে পশ্চিম দিক দিয়ে নেমে যেত। সীমানা প্রাচীর দেওয়ার কারণে পানি যেতে পারছিল না। মাদ্রাসা ঘেঁষেই নূর হোসেন নামে এক ব্যক্তির পুকুর। কমিটির সদস্যরা তাঁকে অনুরোধ করলে তিনি পানি নিষ্কাশনের জন্য পুকুরের সঙ্গে নালা তৈরিতে অমত করেননি। মাঠের দুর্গন্ধযুক্ত পানি পুকুরে পড়ায় মাছ মরে যায়। সে কারণে নূর হোসেন পানি যাওয়া বন্ধ করে দেন।
জানতে চাইলে নূর হোসেন বলেন, পুকুরে মাছ ছাড়া হয়। মাদ্রাসার মাঠের দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানির কারণে মাছ মরে যাচ্ছিল। তাই নালা বন্ধ করে দিয়েছি। বিষয়টি ইউএনওকেও জানিয়েছি।
তবে ভিন্ন কথা শোনা গেছে গোলাম রব্বানী, বাবু মিয়া, আবু বক্কর সিদ্দিকসহ স্থানীয় কয়েকজনের কাছ থেকে। তারা বলছেন, সুপার থেতরাই ইউনিয়নের বিবাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে কাজ করেন। মাদ্রাসার প্রতি উদাসীন। তিনি স্থানীয়দের বাদ দিয়ে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী লালমনিরহাটের বাসিন্দা নিলুফা আক্তারকে আয়া পদে চাকরি দিয়েছেন। এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা মাঠের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেয়।
মাদ্রাসা ঘুরে দেখা গেছে, পুরো মাঠে পানি থইথই। কোথাও গোড়ালিসম পানি; কোথাও হাঁটু পর্যন্ত। কালো থিকথিকে পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। মাটি পেরিয়ে শ্রেণিকক্ষে যাওয়ার মতো পরিবেশ নেই। পা রাখলেই নির্ঘাত খোসপাচড়া হবে।
মাদ্রাসা থেকে বের হওয়ার পর কথা হয় সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোরছালিনের সঙ্গে। সে জানায়, হাঁটু সমান পানি ভেঙে ক্লাসে যেতে হয়। পচা পানির কারণে চুলকানি হয়। ক্লাসে মশার উপদ্রব। লেখাপড়ার পরিবেশ নেই। করোনা-ডেঙ্গুর ভয়ও আছে। বাবা-মা মাদ্রাসায় আসতে দিতে চান না।
অফিস সহকারী রুহুল আমিন বলেন, আগে নূর হোসেন মিয়ার পুকুর দিয়ে পানি বের হয়ে যেত। এখন তিনি পানি যেতে দেন না। বেশি বৃষ্টি হলে ক্লাসরুমে পানি ওঠে। পুরো বর্ষায় মাঠে পানি থাকে। তাই মাদ্রাসা খোলা থাকলেও শিক্ষার্থীরা আসে না।
সুপার ওয়াহেদ আলী বলেন, নূর হোসেনকে ডেকে তাঁর পুকুর দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দিতে অনুরোধ করা হয়। তিনি রাজি হননি। আমাদের সামর্থ্য নেই মাটি ফেলে মাঠ ভরাট করব। জলাবদ্ধতার বিষয়টি সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা সরেজমিন দেখে গেছেন। সভাপতিকে এ বিষয়ে সহায়তা করতে অনুরোধ করেছি।
শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি জানি না। সরেজমিন দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাদ্রাসা সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার সাহা বলেন, নূর হোসেন ও মাদ্রাসা সুপারকে নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছি। সমাধান হয়নি। মাঠ ভরাটের জন্য ২ লাখ টাকা দেওয়া হবে।