জীবন কখন যে থমকে দাঁড়ায়, কেউ জানে না। সময়ের স্রোতে ভেসে চলা মানুষটা এক মুহূর্তেই হারিয়ে যায় চিরতরে। এমনই এক মর্মান্তিক পরিণতির নাম আজ দিয়েগো জোটা। পর্তুগিজ ফুটবলের উজ্জ্বল তারা, লিভারপুলের স্ট্রাইকার। আর অনেকে যে তাকে চিনত ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সতীর্থ হিসেবে।

মাত্র ২৮ বছর বয়সে জীবনের সমস্ত গৌরব, সাফল্য আর স্বপ্নের পথ থেমে গেল এক ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনায়। স্পেনের জামোরা শহরে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় শুধু জোটা নন, প্রাণ হারিয়েছেন আরও এক তরুণ, জোটার ভাই। গাড়িটি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি কারোর জীবন।

জোটা যেন জীবনের সেরা সময়টাই কাটাচ্ছিলেন। কয়েক দিন আগেই নেশন্স লিগ জিতেছেন পর্তুগালের হয়ে। ক্লাব লেভেলে লিভারপুলের হয়ে জিতেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। মাঠে ছন্দে ছিলেন, মাঠের বাইরেও। মাত্র দু’সপ্তাহ আগেই জীবনের নতুন ইনিংস শুরু করেছিলেন, বিয়ে করেছিলেন প্রেমিকাকে।

আরো পড়ুন:

ভারতের কোচের পদত্যাগ

আবেগে নেইমারের স্বাক্ষর করা বল নিয়ে ১৭ বছরের কারাদণ্ড

পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল পোর্তোয়, এরপর অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে চুক্তি। সেখান থেকে উলভারহ্যাম্পটন হয়ে লিভারপুলে আসেন এই গতিময় ফরোয়ার্ড। জার্গেন ক্লপের অধীনে এফএ কাপ ও লিগ কাপ জিতেছেন। আর নতুন কোচ আর্নে স্লটের নেতৃত্বে সম্প্রতি লিভারপুলকে এনে দিয়েছেন প্রিমিয়ার লিগ শিরোপাও।

এত সাফল্যের মাঝখানে এভাবে বিদায় নেওয়া যেন এক নির্মম পরিহাস। কারও বিশ্বাস হচ্ছে না, যে মানুষটা কয়েকদিন আগেও গোল করে দর্শকদের উল্লাসে ভাসিয়েছিলেন, আজ তিনি নেই।

জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়টা শুরু করতে চেয়েছিলেন হাসিমুখে। কিন্তু ভাগ্য সে সুযোগ দিলো না। বিশ্বকাপের মাঠও আর দেখা হলো না তার। হয়ে রইলেন শুধুই স্মৃতির মানুষ। এক অকালপ্রয়াত নক্ষত্র, যার আলোটা আর দেখা যাবে না, শুধু অনুভব করা যাবে ভক্তদের হৃদয়ে।

জোটার মৃত্যুতে পর্তুগাল শোকে মুহ্যমান। ফুটবল বিশ্ব আজ স্তব্ধ।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল পর ত গ ল জ বন র

এছাড়াও পড়ুন:

রবীন্দ্রনাথ-নজরুল জীবনঘনিষ্ঠ কবি: শিক্ষা উপদেষ্টা

কবিগুরু রব‌ীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম দুজনই জীবনঘ‌নিষ্ঠ কবি ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। তিনি বলেন, “জীবনঘনিষ্ঠ বলেই তারা মানুষের কল্যাণ ও মনুষ্যত্বের বিকাশের কথা ব‌লে‌ছেন।”

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন অ্যাকাডেমি মিলনায়তনে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে দৈশিক এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল পাঠ শীর্ষক আলোচনা সভায় উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, “মধ্যযুগের কবি ব‌লে‌ছেন, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য’ নজরু‌লের কণ্ঠেও শু‌নে‌ছি, ‘মানু‌ষের চেয়ে বড়‌ কিছু নাই নহে কিছু মহীয়ান’, রবীন্দ্রনাথ বঙ্গজননীর প্রতি আহ্বান জা‌নিয়েছেন, ‘মানুষ হইতে দাও তোমার সন্তানে’।”

আরো পড়ুন:

রবিতে রবীন্দ্র জন্মোৎসবের উদ্বোধন 

ঢাবিতে বিশ্বকবির ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত

সি আর আবরার বলেন, “বর্তমানে আমরা দৈ‌শিক ও‌ বৈশ্বিক প‌রি‌স্থি‌তির দি‌কে তাকালে দেখবেন, মানুষ হিসেবে আমা‌দের যে কর্তব্য, তা পালনে আমরা উদাসীন, নি‌স্ত্রিয় ও ব্যর্থ। একজনের প্রতি অন্যজনের মানবিক সহানুভূ‌তি, সহমর্মিতা আজ বিলুপ্ত প্রায়। নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থে অপরকে নির্যাতিত ও নিপীড়িত করতে আমরা কুণ্ঠা বোধ ক‌রি না, দ্বিধান্বিত হই না। বি‌শ্বের চা‌রি‌দি‌কে আজ রণ-দামামা বেজে উঠেছে। এর ফ‌লে লাঞ্ছিত হ‌চ্ছে মানুষ, বিপণ্ন হচ্ছে মানবতা।”

তিনি বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল এই ভয়াবহ পৃথিবীতে জীবনের জয়গান গাওয়ার অনুপ্রেরণা দি‌য়ে‌ছেন আমা‌দের। এ কারণে এই দুই কবি আমা‌দের জন‌্য প্রাসঙ্গিক। তাদের রচনার মানবিক আবেদনে উদ্বুদ্ধ হওয়ার জন‌্য তাদের পাঠ-অধ‌্যায়ন আমা‌দের জন‌্য আবশ্যিক।”

বিসিএস প্রশাসন অ্যাকাডেমির রেক্টর (সচিব) ড. মো. ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাবন্ধিক ও গবেষক ড. মোরশেদ শফিউল হাসান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক রকুদরত-এ-হুদা।

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ