হবিগঞ্জ শহরে নিজের ঘরের সামনে ছুরিকাঘাতে জনি দাশ (১৭) নামে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন তাঁর বড় ভাই জীবন দাশ (২২)। আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে শহরের ডাকঘর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।

এই হত্যাকাণ্ডের কারণ ও এর পেছনে কে বা কারা জড়িত, সে বিষয়ে নিহত শিক্ষার্থীর পরিবার ও পুলিশ কোনো তথ্য দিতে পারেনি। পুলিশ আজ সকালে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠায়।

পুলিশ ও নিহত শিক্ষার্থীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জ শহরের ডাকঘর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন ব্যবসায়ী নর্ধন দাশ। আজ ভোর ৪টার দিকে ঘরের পাশে শব্দ শুনে তাঁর ছোট ছেলে জনি বাইরে বের হয়। কিছুক্ষণ পর বাগ্‌বিতণ্ডার আওয়াজ পেয়ে বড় ছেলে জীবন ঘর থেকে বেরিয়ে দেখেন জনির সঙ্গে অপরিচিত এক তরুণের ধস্তাধস্তি চলছে। এ সময় দুই ভাই বাধা দিতে চাইলে তাঁদের ছুরিকাঘাত করে ওই তরুণ পালিয়ে যান।

গুরুতর আহত অবস্থায় জনি দাশকে হবিগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আহত জীবন দাশ একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

জনি দাশ হবিগঞ্জ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। তার ভাই জীবন দাশ হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

আহত জীবন দাশ বলেন, রাতে ঘরের বাইরে শব্দ শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে দেখেন, তাঁদের বাসার সামনে অপরিচিত এক তরুণের সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের ধস্তাধস্তি চলছে। তিনি এগিয়ে গেলে ওই তরুণ তাঁকেও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান।

হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শাহাবুদ্দীন শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, ছুরিকাঘাতে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিসহ বেশ কিছু আলামত জব্দ করেছে পুলিশ। অপরাধীকে এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। তবে পুলিশ এ ঘটনার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ বন দ শ এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতির জন্য আবেদন করতে আসা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের কক্ষ থেকে তাঁকে আটক করা হয়।

আটক ছাত্রলীগ নেতার নাম শরিফুল ইসলাম সাজিদ। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং বিভাগের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। সাজিদের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলা সদরের ব্যাংকপাড়া এলাকায়।

জানা যায়, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ওই নেতা বিভাগে ‘রিটেক’ পরীক্ষার জন্য এসেছিলেন। এ সময় ছাত্রদলের নেতারা খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তাঁকে আটক করেন। তখন তাঁর সঙ্গে ছাত্রদল নেতাদের ধস্তাধস্তি হয়।

ছাত্রদল নেতাদের অভিযোগ, পরিকল্পনা করে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছেন ছাত্রলীগ নেতা শরিফুল ইসলাম সাজিদ। বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘সাজিদ ইসলাম’ নামের একটি আইডি থেকে পোস্ট করে লেখা হয়, ‘কাল থেকে একদল তরুণের প্রবেশ হবে, যাঁদের হারানোর কিছুই নেই; না একটা গোছানো রুম, না সম্মান, না বন্ধু, না কোনো আপনজন, না সার্টিফিকেট। কিছুই নেই, নেই ভয়, নেই লজ্জা, নেই আবেগ, নেই দরদ। তাঁরা হবে নির্ভীক, তাঁরা হবে ভয়ংকর সুন্দর!!!’

তবে এই পোস্ট সম্পর্কে সাজিদ বলেন, ‘আইডিটি আমার নয়। আমি এমন কোনো পোস্ট করিনি। আমি এসেছিলাম রিটেক পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান খান বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সময়ে তারা আমাদের ওপর নির্মম জুলুম-নির্যাতন করেছে। আমাদের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করেছে। তার উপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তাজাম্মুল হক বলেন, ‘ছাত্রদলের কিছু নেতা–কর্মী অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ছাত্রলীগের সেক্রেটারিকে ধরে আমাদের প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। তাঁর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও মামলা থাকায় আমরা তাঁকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করি।’

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তবে মামলা হয়েছে কি না, তা খোঁজ করে দেখতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ